ভিন্ন স্বাদের খবর:  চিকিৎসক মেয়ে। প্রথম মাসের বেতনের অর্ধেক পাঠিয়েছেন বাবা-মা ও ছোট ভাই-বোনদের জন্য। মেয়ের আবদার, এই টাকায় কিনতে হবে নতুন পোশাক। কারণ মেয়ের প্রথম মাসের বেতনে আবেগ আর ভালোবাসা জড়িত। টাকা পেয়ে চোখে অশ্রু বাবা-মায়ের। দুজনে সিদ্ধান্ত নিলেন, মেয়ের প্রথম উপার্জনের টাকায় এমন কিছু করতে চান যা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে যখন রাজধানীর খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ ‘অভুক্ত’, সিদ্ধান্ত নিলেন, এই টাকায় তাদের খাবার সামগ্রী কিনে দেবেন। মেয়ের পাঠানো টাকায় খাবার কিনে বিতরণও করেছেন এই বাবা।

মহৎ এই কাজটি করেছেন র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক অ্যাডিশনাল ডিআইজি মোজাম্মেল হক। বৃহস্পতিবার নিজের ফেসবুক ওয়ালে বিস্তারিত তুলে ধরে একটি পোস্ট দেন র‌্যাবের এই কর্মকর্তা।

সেখানে তিনি লিখেছেন, আমার বড় কন্যা ডাক্তার মৌমির বর্তমানে মেডিকেল কলেজে ইন্টার্নশিপ চলছে। প্রথম মাসের বেতন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বেতনের অর্ধেকেরও বেশি টাকা বাবা এবং মায়ের পোশাক পরিচ্ছদ ক্রয় করার জন্য পাঠিয়েছে। ছোট ভাইবোনদের জন্যও কিছু টাকা পাঠিয়েছে। আমার মা মনির জীবনের প্রথম উপার্জন।

মোজাম্মেল লিখেছেন, পরিমাণ বড় কথা নয়। এই টাকার সঙ্গে অনেক আবেগ ও ভালোবাসা জড়িত। টাকাটা হাতে পেয়ে আনন্দে চোখে অশ্রু চলে এলো। মা মনির প্রথম উপার্জনের টাকা দিয়ে স্মরণীয় কিছু করতে চাই। ওর মায়ের সঙ্গে কথা বললাম। চোখে ভেসে উঠলো করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ সরকার কর্তৃক ঘোষিত ছুটির সময় কর্মহীন দরিদ্র মানুষের কথা। তাই মৌমির মা আর আমি সিদ্ধান্ত নিলাম পুরো টাকাটাই হতদরিদ্র মানুষকে উপহার হিসেবে দিয়ে দেব।

আমি মনে করি, মৌমির প্রথম উপার্জিত টাকা এর চেয়ে ভালো সদ্ব্যবহার হতে পারে না। মৌমিও বিষয়টিতে সানন্দে সন্মতি প্রদান করেছে। আপনারা দোয়া করবেন ডা. মৌমি যেন মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন গরিব দুঃখী মেহনতি মানুষের প্রিয় ডাক্তার হতে পারে।

এদিকে মোজাম্মেলের এই পোস্টে কমেন্টস করেছেন ২৩’শ ফেসবুক ব্যবহারকারী এবং লাইক পড়েছে দশ হাজার। এরমধ্যে র‌্যাব-২ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামন লিখেছেন, ‘স্যার এর চেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত আর কী হতে পারে।’ সাজ্জাদ হোসেন নামে পুলিশের একজন পরিদর্শক লিখেছেন, ‘মাশাল্লাহ স্যার, মহৎ উদ্যোগ।’ রফিক শিকদার নামে একজন সিনেমা পরিচালক খিলেছেন, ‘মা’মনির সুখ ও সাফল্য কামনা করছি।’ মাসুদ হাসান রিদম নামে একজন সাংবাদিক লিখেছেন, ‘প্রিয় ভাই, খুবই ভালো উদ্যোগ। অনেক অনেক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা রইল।’

প্রসঙ্গত, রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের শীর্ষ জঙ্গি নেতাসহ মোট ৩৩ জন দুর্ধর্ষ জঙ্গি গ্রেপ্তার করে এবছর পুলিশের সর্বোচ্চ পদক বিপিএম (সাহসিকতা ) পেয়েছেন র‌্যাব-৪ অধিনায়ক মো. মোজাম্মেল হক। এর আগে তিনি র‌্যাব-১৩ অধিনায়ক ছিলেন।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন