রবিবার, ৪ এপ্রিল তারিখে দেশের বিভিন্ন জায়গার উপর দিয়ে বয়ে যায় প্রবল কালবৈশাখী ঝড়। সন্ধ্যার পর দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ‘জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯’ নম্বরে একের পর এক নৌ দুর্ঘটনার খবর জানিয়ে অসহায় বিপদগ্রস্থ নৌ যাত্রীরা ফোন করছিলেন উদ্ধার সহায়তা চেয়ে। এর মধ্যে প্রমত্তা পদ্মা ও যমুনা নদীতে প্রায় একই সময়ে সঙ্ঘটিত দুইটি নৌ দুর্ঘটনার ঘটনায় রাত পৌণে আটটায় ৯৯৯ নম্বরে উদ্ধার সহায়তা চেয়ে দুইজন কলার ফোন করেন।

এর মধ্যে প্রথম ফোন কল করেন আব্দুল্লাহ নামে এক লঞ্চ যাত্রী। তিনি জানান তারা নারী ও শিশু সহ প্রায় দুইশ যাত্রী ছোট একটি দ্বিতল লঞ্চযোগে কাঁঠালবাড়ী ঘাট থেকে মাওয়া ঘাটের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন। কিছুদূর আসার পর তারা ঝড়ের কবলে পড়েন। প্রচন্ড ঝড়ো হাওয়া, তীব্র স্রোত ও ঢেউয়ে তাদের লঞ্চটি একপাশে হেলে যায় এবং লঞ্চে পানি উঠতে শুরু করে। তখন তাদের লঞ্চটি নিকটবর্তী একটি চরে ভেড়ানো হয় এবং চরে যাত্রীদের নামিয়ে দেয়া হয়। এরপর কালবৈশাখী ঝড়ের মধ্যে চরে খোলা আকাশের নীচে নারী শিশু সহ যাত্রীরা অবর্ণনীয় দুর্ভোগ ও ভীতিকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়েন।
৯৯৯ থেকে সংবাদ পেয়ে মাওয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির একটি উদ্ধারকারী দল একটি উদ্ধারকারী লঞ্চ নিয়ে রওনা দেয়। কিন্তু প্রচণ্ড ঝড়ো হাওয়ায় উদ্ধারকারী দলটিকেও বেশ ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। এই প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও উদ্ধারকারী দলটি নারী ও শিশু সহ প্রায় দুইশত যাত্রীকে পদ্মা নদীর চর থেকে উদ্ধার করে নিরাপদে মাওয়া ঘাটে পৌঁছে দেয়।

অপর কলটি করেন ফারদিন নামে একজন লঞ্চ যাত্রী যিনি একটি ছোট লঞ্চ যোগে আরিচা থেকে পাবনার কাজীরহাট যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে তারাও ঝড়ের কবলে পড়েন। এরপর প্রচন্ড ঝড়ো হাওয়া, তীব্র স্রোত ও ঢেউয়ে তাদের লঞ্চটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যমুনা নদীর মোল্লারচরে আটকা পড়ে । তিনি জানান লঞ্চে নারী শিশু সহ প্রায় তিনশতাধিক যাত্রী ছিলেন।
৯৯৯ তাৎক্ষনিকভাবে পাবনার নগরবাড়ী নৌ পুলিশ ফাঁড়িকে ঘটনাটি জানিয়ে দ্রুত উদ্ধারের ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানায়। পরে নগরবাড়ী নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর জনাব মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন ৯৯৯ কে জানান, প্রতিকূল আবহাওয়ায় উদ্ধারকারী দলের রওনা দিতে কিছুটা বিলম্ব হলেও ঝুঁকি নিয়ে একটি উদ্ধারকারী লঞ্চ ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং যমুনা নদীর মোল্লার চর থেকে নারী শিশু সহ প্রায় তিনশতাধিক যাত্রীকে নিরাপদে উদ্ধার করে পাবনার কাজীরহাটে পৌঁছে দেয়া হয়েছে।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন