ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) প্রধান পৃষ্ঠপোষক ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) বলেছেন, পুনাকের বর্তমান সভানেত্রীর নেতৃত্বে গত দু’বছরে সংগঠনটির তাৎপর্যপূর্ণ পরিবর্তন ঘটেছে। পুনাক আজ দেশে-বিদেশে পরিচিতি পেতে শুরু করেছে। আঞ্চলিক পরিমন্ডলেও পুনাকের পরিচিতির রেখাপাত ঘটেছে।
তিনি গত (১৫ জুন) রাতে রাজধানীর রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে পুনাকের আয়োজনে পুনাক সভানেত্রী হিসেবে জীশান মীর্জার ২য় বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
আইজিপি বলেন, সংগঠন একটি জীবন্ত বিষয়। নানা পরিবর্তন এবং সংস্কারের মধ্য দিয়ে সংগঠন এগিয়ে যায়। সময়ের পরিক্রমায় পুনাক এগিয়ে যাচ্ছে। সংগঠনটির অগ্রগতিতে অবদান রাখায় পুনাকের সকল পর্যায়ের সদস্যাদের ধন্যবাদ জানান তিনি। ভবিষ্যতে এর কার্যক্রম আরও গতিময় করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কল্যাণে কাজ করার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান আইজিপি।
পুনাকের প্রকাশনা ও সাংস্কৃতিক সম্পাদিকা উম্মে সালমা মুন্নীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে পুনাক উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অতিরিক্ত আইজি ড. মোঃ মইনুর রহমান চৌধুরী, অতিরিক্ত আইজি এস এম রুহুল আমিন, অতিরিক্ত আইজি এম খুরশীদ হোসেন ও ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মীর রেজাউল আলম বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাগণ এবং পুনাকের সদস্যাগণ উপস্থিত ছিলেন।
পুনাক সভানেত্রী বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ এবং পুনাক একই সূত্রে গাঁথা। পুলিশ কর্মকর্তাদের আকুণ্ঠ সমর্থন ও সহযোগিতা না পেলে পুনাকের পক্ষে এতদূর আসা সম্ভব হতো না।
তিনি বলেন, আমরা সকলের সহযোগিতায় কিছুটা পথ এসেছি, আমাদের যেতে হবে বহুদূর। বিগত দুই বছর দায়িত্ব পালনকালে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের জন্য পুলিশ কর্মকর্তাগণ এবং পুনাকের সকল পর্যায়ের সদস্যাদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পুনাকের গত দুই বছরের কার্যক্রমের ওপর একটি ডকুমেন্টারি ও পুনাক থিম সং প্রদর্শন করা হয়। এ উপলক্ষে ‘পুনাক কথন’ ও ‘পুলিশ পরিবারে স্বাগতম’ শীর্ষক দুটি পুস্তকের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। অনুষ্ঠানটি স্মরণীয় করে রাখতে কাটা হয় সুদৃশ্য কেক।
উল্লেখ্য, পুনাক পুলিশ পরিবারের নারী সদস্যদের নিয়ে গঠিত একটি সেবাধর্মী সংগঠন। পুনাককে নিজস্ব বৃত্তের বাইরে সমাজের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে নিয়ে গেছেন বর্তমান সভানেত্রী। তাঁর সুদক্ষ নেতৃত্বে পুনাক দুঃস্থ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে, পীড়িতকে সেবা দিয়ে, সহায়-সম্বলহীনকে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। পুনাক আজ সমাজের অসহায় ও দুঃস্থ মানুষের আস্থা ও ভরসাস্থল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সভানেত্রী পুনাককে একটি ‘ব্র্যান্ড’ হিসেবে পরিচিত করতে চান। তাঁর ক্লান্তিহীন পথচলার মধ্য দিয়েই এ স্বপ্ন বাস্তবায়নের বন্দরে পৌঁছাবে পুনাক।
পুনাক সভানেত্রীর মানবিক উদ্যোগে গত দুই বছরে অসহায় রঞ্জনের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি, শারীরিক প্রতিবন্ধী শাহিদা ও আনিসুরকে সহায়তা, গোয়াল ঘরে বাস করা বৃদ্ধ মকবুলকে ঘর দেওয়া, জীবন সংগ্রামী ফাতেমাকে নতুন রিকশা দেওয়া, রক্তের জটিল রোগে আক্রান্ত শিশু সোহানকে সহায়তা, শরীরে পচন নিয়ে রাস্তায় পড়ে থাকা শাহজালালের সুচিকিৎসা ও পুর্নবাসন, পা হারানো খোকনের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন, সুন্দরবনের বাঘ বিধবাদের সহায়তা, সড়ক দুর্ঘটনায় পা হারানো শিশু জান্নাতের কৃত্রিম পা সংযোজন, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ক্রিকেটপ্রেমী টাইগার মিলনকে সহায়তা, বাংলাদেশে বসবাসকারী অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক ম্যালকম আরনল্ডের পাশে দাঁড়ানো, অসহায় মানুষের মাঝে ইফতার ও খাবার বিতরণ, শীতার্থদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ, রিকশাচালকদের মাঝে রেইনকোট বিতরণ, পথচারীদের জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থা ইত্যাদি মানবিক কার্যক্রম সকলের দৃষ্টি কেড়েছে।