নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে প্রথমবারের মতো নারায়ণগঞ্জ-কলকাতা নৌ সার্ভিস চালু হয়েছে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে প্রায় ৭০ বছর পর নতুন করে এ যাত্রা শুরু হলো। ঢাকা থেকে কলকাতার পথে একটি ও কলকাতা থেকে ঢাকার পথে একটি জাহাজ রওনা দেওয়ার মধ্য দিয়ে অবসান ঘটলো দীর্ঘ প্রতীক্ষার।
গতকাল শুক্রবার রাত ৭টায় অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) ক্রুজ শিপ এমভি মধুমতি নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পাগলায় অবস্থিত মেরিএন্ডারসনের ভিআইপি ঘাট থেকে কলকাতার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। একই দিনে ভারতের ক্রুজ শিপ ‘মেসার্স আর ভি. বেঙ্গল গঙ্গা’ কলকাতা থেকে রওনা দেবে ঢাকার উদ্দেশে। এর আগে বিকেল ৫টায় নারায়ণগঞ্জের পাগলাস্থ ভিআইপি ঘাটে (মেরিএন্ডারসন) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী। এসময় পুরো অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন নৌপরিবহন মন্ত্রনালয়ের সচিব জনাব মো:আবদুস সামাদ।উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করে অনুষ্ঠানকে আরো প্রাণবন্ত করে তোলেন দক্ষীন বঙ্গের কিংবদন্তী সংগীত শিল্পী ও সাতক্ষীরার কৃতি সন্তান জনাব আবু আফ্ফান রোজ বাবু সহ ইন্ডিয়া থেকে আগত শিল্পীরা।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, প্রধানমন্ত্রী ১৯৯৬ সালে ভারতের সাথে গঙ্গা প্রবাহ চুক্তি করেন। এবার উন্মোচিত হচ্ছে নৌ পথে দেশের বাইরে ভ্রমণের এক অন্য দিগন্ত। ২০১৯ আমাদের এই সাফল্যের বাতিঘর হয়ে থাকবে। এ ক্রুস শিপ এ অঞ্চলে যোগাযোগের এক নতুন মাইলফলক হয়ে থাকবে। এই যোগাযোগ আঞ্চলিক ও সৌহার্দ্যের এক নতুন মাত্রা। দেশি-বিদেশি পর্যটকরা এর মাধ্যমে দেশের সুন্দরবনসহ নানা পর্যটন স্পট দেখতে পারবে যাত্রাপথে। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত আমাদের দেশের মানুষদের আশ্রয় দিয়েছিল ও আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছিল। তাদের সাথে আমাদের সম্পর্কও অনেক গভীর। একই সময়ে ভারতের ক্রুজ শিপ মেসার্স আরভি বেঙ্গল গঙ্গা কলকাতা থেকে নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে। জাহাজটি বরিশাল, বাগেরহাটের মংলা, সুন্দরবন, খুলনার আন্টিহারা-ভারতের হলদিয়া রুট হয়ে ৩১ মার্চ দুপুর ১২টায় কলকাতায় পৌছাবে। পরীক্ষামূলকভাবে নারায়ণগঞ্জ-কলকাতা রুটে চালু হচ্ছে এ নৌযান যাত্রীসেবা। বাংলাদেশ-ভারত নৌপ্রটোকল চুক্তির আওতায় পর্যটকদের যাতায়াতের সুবিধার্থে এ সেবা চালু হয়েছে। পরীক্ষামূলকভাবে সফল হলে ঢাকা থেকে কলকাতায় নিয়মিতভাবে নৌযান চলবে। রুটটির পরিধি বাড়িয়ে উত্তর ভারতের আসামের গুয়াহাটি নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে। এ জন্য পরীক্ষামূলকভাবে সুন্দরবন, বরিশাল, চাঁদপুরের মতো আকর্ষণীয় এলাকার ওপর দিয়ে নৌযানগুলো ঘুরে যাবে।
অনুষ্ঠানে এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন নৌ পুলিশের ডিআইজি মারুফ শেখ মুহম্মদ মারুফ হাসান, বিপিএম, পিপিএম,নারায়নগজ্ঞের জেলা প্রশাসক জনাব রাব্বি মিয়া,পুলিশ সুপার জনাব মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ, বিপিএম (বার),অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত),মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত), ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জনাব সুবাস চন্দ্র সাহা প্রমূখ।