সাতক্ষীরা জেলায় যোগদানের মাত্র এক বৎসরের মধ্যে পুরো আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির ব্যাপক উন্নয়ন ঘটিয়েছেন সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম(বার)।পাশাপাশি তাঁর কর্মদক্ষতা দিয়ে সাতক্ষীরার সকল স্থরের মানুষে মনে স্থান করে নিয়েছেন।
সাতক্ষীরার এসপি হিসেবে মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম(বার) ২০১৯ সালের ২৭ জুলাই যোগদানের পর থেকেই তিনি মাদক, সন্ত্রাস,জঙ্গিবাদ ও পুলিশের গ্রেফতারি ও ঘুষ বাণিজ্যের বিরদ্ধে কঠোর হুশিয়ারী বার্তা দেন। অপরাধ দমন নির্মূলে কঠোর অবস্থানে থাকায় যোগদানের পর থেকে জনগনের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে এবং প্রশসিত অর্জন করেছেন।
এসপি মোস্তাফিজুর রহমান কুমিল্লা জেলার এক সম্ভান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন। তার পিতা একজন আর্দশ একজন শিক্ষক।
মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম(বার) বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের ২৪তম ব্যাচের কর্মকর্তা। মেহেরপুরের জেলা পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদানের পূর্বে তিনি ঢাকা নারায়নগঞ্জের (অতিরিক্ত পুলিশ) সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
সফল শিক্ষা জীবন শেষ করার পর ২০০৫ সালে পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন। সৎ, চৌকশ এবং কর্তব্যনিষ্ঠ দায়িত্ববান কর্মকর্তা হিসেবে তার সুনাম রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বিশেষ কৃতিত্বের জন্য তিনি দু’বার (পিপিএম) পদকে ভুষিত হন।
মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পথ চলা শুরু হয় অপরাধের দমনের বিরুদ্ধে তাঁর অবিরাম সংগ্রামের মধ্যদিয়ে। কর্মসূত্রে যে সকল জেলাতে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন সেখানে অল্প কিছু দিনের মধ্যেই তিনি আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রনে আনতে সক্ষম হয়েছেন। তার সাহসী ভূমিকার কারনে খুব সহজেই তিনি জনমনে মনের মনি কোঠায় স্থান করে নিয়েছেন।
সাতক্ষীরায় এসেও তার দায়িত্ব ব্যাতিক্রম ঘটেনি। ভূমিদস্যু, মাদক ব্যবসায়ী, প্রতারকচক্র, চাঁদাবাজ,সরকারী মাল চোরাচালান,ভূয়া সাংবাদিক,ভূয়া সংবাদপত্র ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে তার কঠোর অবস্থানের কারনে অনেকটাই কমে এসেছে অপরাধীদের দৌরাত্ব।
সাতক্ষীরায় চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসীদের কঠোর ভাবে দমন করে তাদের আইনের আওতায় এনে তিনি প্রশংসিত হয়েছেন। তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন আইনের উর্দ্ধে কেউ নয়। অপরাধ করলে তাকে আইনের বেড়াঝাড়ে পড়তে হবে।
সাতক্ষীরা চেম্বার অফ কমার্স সভাপতি নাছিম ফারুক খান মিঠু বলেন, সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার যোগদানের মাত্র এক বৎসরের মধ্যে আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির ব্যাপক উন্নয়ন ঘটিয়েছেন। করোনা কালে লক ডাউনের সময় পুলিশ সুপার অসহায় ও খেটে খাওনা দিনমজুর দের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রত্যেক পরিবার কে ১০ কেজি চাল,৫ কেজি আলু,২ কেজি ডাল,১ লিটার তেল, ১ প্যাকেট লবণ ও একটি করে সাবান পৌছে দিয়েছেন।
খান মিঠু আরো বলেন, কয়েক মাস আগে এক অসহায় মহিলা বেসরকারি ক্লিনিকে সিজারে বাচ্চা প্রসব করেন। ক্লিনিক ম্যানেজার ২২ হাজার টাকা বিল করলে অসহায় মহিলার পরিবার তা দিতে অপারগতা জানায়। কোনো উপায় না পেয়ে ভ্যান চালক স্বামী পুলিশ সুপার কে জাানালে পুলিশ সুপার নিজের পকেট থেকে টাকা দিয়ে ঐ অসহায় মা কে ডিবি পুলিশের মাধ্যমে মাইক্রবাস যোগে বাড়িতে পৌছে দেন। শুধু তাই নয় গত রোয়ার ঈদে সেই অসহায় মা ও সদ্য ভুমিষ্ট শিশুর বাড়িতে ফলপাকড় ও ঈদের পোশাক নিয়ে দেখতে যান সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম(বার)।
চেম্বার সভাপতি আরো বলেন,এ ধারা অব্যহত থাকলে পুলিশের প্রতি মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস আরও বাড়বে। বর্তমানে কোনো থানায় পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, জিডি, ভেরিফিকেশন, মামলা দায়ের করতে টাকা লাগছে না।
সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান সৈয়দ আমিনুর রহমান বাবু বলেন, বর্তমান এসপি মহোদয় যোগদানে সাতক্ষীরা মানুষের জীবনযাত্রা পরিবর্তন এসেছে।
মানুষের দুঃখ দূর্দশা কথা চিন্তা করে তার ব্যাক্তিগত তহবিল এবং ডিপাটমেন্টর সহযোগিতা নিয়ে অসহায় মানুষের বাড়ী বাড়ী গিয়ে খাদ্য সামগ্রী পৌছে দেন ।
করোনা ও ঘূর্নিঝড় আম্পান-বুলবুলি দূর্যোগে সময় ব্যাপক ভুমিকা প্রশংসিত হয়েছেন। আমি শুধু বলবো পুলিশ বাহিনীর জন্য এটা একটা বিরল। এ জেলার মানুষ যেটা কখনো আশা করিনি তার থেকে বেশি পেয়েছে।
সাতক্ষীরা তালা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জেলা সাবেক ছাত্রনেতা শেখ নুরুল ইসলাম বলেন, বর্তমান পুলিশের ওপর মানুষের একটা আস্থা বিশ্বাসও ফিরে এসেছে, যেটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ফয়জুল্লাহপুরের বাসিন্দা প্রভাসক নাসির উদ্দিন সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানের প্রতি কৃৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন এসপি স্যারের হস্তক্ষেপের কারনে আমার রুলার বিক্রির ৬,৫০,০০০ টাকার মধ্যে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা ফিরে পেয়েছি। বাকি ২ লাখ টাকাও জনৈক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের নিকট থেকে এসপি স্যার আমাকে উদ্ধার করে দিবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
সাতক্ষীরা জেলার সিটিজেন জার্নালিস্ট নিয়াজ ওয়াহিদ বলেন এখান থেকে ৫-৬ মাস আগে সাতক্ষীরার গরীবের ডাক্তার ও অবসর প্রাপ্ত সিভিল সার্জন (তার পিতা) বড় বাজার থেকে চাল-ডাল, শাক-সবজি কিনে নিয়ে বাসায় আসতেছিলো। এসময় সদর থানার সামনে থেকে ট্রাফিক পুলিশ ভ্যান থেকে চাল-ডাল নামিয়ে নিয়ে ভ্যানটি জব্দ করেন মটর খুলে নেবেন বলে। ভ্যান চালক এসময় ডা:এবাদুল্লাহর পিছু নিয়ে বলেন স্যার আপনাকে আনতে গিয়ে পুলিশ আমার ভ্যান কেড়ে নেছে। আপনি ভ্যান ছাড়িয়ে দেন নতুবা ভ্যান কিনে দেন।
এসময় গরীবের ডাক্তার এবাদুল্লাহ খুব বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে যান। এক পর্যায়ে রাত সাড়ে নয় টা পর্যন্ত সেই ভ্যান চালক ডাক্তার সাহেবের বাড়িতে গিয়ে অবস্থান নেয়।শেষ বেশ আর কোনো উপায় না পেয়ে সাতক্ষীরা বিএমএর সিনিয়র সহ সভাপতি ডা.এবাদুল্লাহ সাহেব সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম(বার) মহোদয় কে ফোন দিয়ে তাঁর সমস্যার কথা জানালে পুলিশ সুপার ভ্যানটি ছেড়ে দিতে বলেন এবং ভ্যান চালক কে মুচলেকা দিয়ে দেন যেনো আর কোনো দিন ব্যাটারিভ্যান নিয়ে শহরে না আসে। সেদিন গরীবের ডাক্তার.এবাদুল্লাহ কে ভ্যান চালকের বিব্রতকর পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দিয়েছিলেন মানবিক পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান।
সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম (বার) এবিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, জনগণের সেবাই পুলিশের ধর্ম। আমি চেষ্টা করি মানুষের পাশে থেকে বন্ধু হিসেবে থেকে তাদের সেবা করতে, তবে অপরাধীদের নয়। জেলার মানুষের জন্য আমার দরজা সবসময় খোলা।তিনি বলেন, কোনো বিপদে পড়লে, কোনো পুলিশ হয়রানি করলে, পুলিশি সেবা পেতে অর্থ চাইলে সরাসরি আমাকে জানাবেন। আমি ব্যবস্থা নিবো।
পরিশেষে সাতক্ষীরাবাসী এই আলোকিত মানুষের আরো সফলতা এবং দীর্ঘায়ু কামনা করেন।