১৯৭১’র ২৫ মার্চ কালো রাতে বাংলাদেশে পাক হানাদাররা ইতিহাসের বর্বরোচিত গণহত্যাযজ্ঞ চালায়। আধুনিক মারণাস্ত্রে সজ্জিত পাক সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মহান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানেই উচ্চ মনোবল ও তীব্র দেশপ্রেমের শক্তিতে বলীয়ান হয়েই প্রতিরোধ গড়ে তুলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।

ইতিহাসের মহানায়ক, সিদ্ধপুরুষের হাতে গড়া বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আকাশছোঁয়া চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা আর অগ্রগতির নতুন নতুন সব মাইলফলক সৃষ্টি করে পূর্ণ করেছে নিজেদের ৫০ বছরের গৌরবদীপ্ত পথচলা। বঙ্গবন্ধু কন্যা, হ্যাট্টিক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে একই সময়ে বীর বাঙালি উদযাপন করছে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। এমন মাহেন্দ্রক্ষণে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে উন্নয়নের দিক থেকেও মর্যাদার আসনে উচ্চারিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা’র নাম।

প্রধানমন্ত্রীর শতভাগ আন্তরিকতায় বাঙালি জাতির গর্ব ও আস্থার প্রতীক বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অবকাঠামোগত, কৌশলগত এবং প্রযুক্তিগত দিক থেকে লাভ করেছে ক্রমব্যাপ্তি। আধুনিক প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জামাদির সমন্বয়ে হয়ে উঠেছে অনেক বেশি উন্নত, দক্ষ ও চৌকস। দেশের উন্নয়ন কাজে নিরলসভাবে অংশগ্রহণ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলাতেও অদম্য দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রতীক এই বাহিনীটি।

শুধু তাই নয়, দেশের সীমানা পেরিয়ে বিশ্বশান্তি রক্ষায় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ও নিজেদের অসামান্য দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হয়েছে দেশপ্রেমী এই বাহিনীটি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক আগ্রহ ও প্রচেষ্টার ফলেই সমৃদ্ধ ও দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী-নিজের প্রতিটি বক্তব্যেই কৃতজ্ঞচিত্তেই এমনটিই উপস্থাপন করেন সেনাপ্রধান জেনারেল ড.এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।

ব্যতিক্রম ছিল না নিজ নেতৃত্বাধীন বাহিনীটির সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানটিতেও। বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে বিপুল আয়োজনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৫০ বছর পূর্তির সময়টিকে স্মরণীয় করে রাখতে গত শুক্রবার (০৩ ডিসেম্বর) আয়োজন করা বর্ণাঢ্য এক অনুষ্ঠানেও বঙ্গবন্ধু কন্যা’র প্রতি কৃতজ্ঞতা পুনর্ব্যক্ত করেন জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৫০ বছর পূর্তির এই মহোৎসবের আনন্দ ঢেউ কার্যত ছড়িয়ে পড়ে প্রতিটি প্রাণে প্রাণে। ঢাকা আর্মি স্টেডিয়ামে সেদিন নতুন মহিমায় উদ্ভাসিত করা হয় একটি আধুনিক ও যুগোপযোগী সেনাবাহিনী হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অর্জনের সারি সারি চিত্রপট।

অনুষ্ঠানটিকে মহিমান্বিত করেছে সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো.আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতীয় সংসদের স্পিকার ড.শিরীন শারমিন চৌধুরী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.এ কে আবদুল মোমেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারেক আহমেদ সিদ্দিক’র ভিডিও বার্তা।

এছাড়া বন্ধুপ্রতীম তিন দেশ ভারত, ভূটান ও মালয়েশিয়ার সেনাবাহিনী প্রধানের শুভেচ্ছা ভিডিও বার্তা গোটা অনুষ্ঠানটিতে যোগ করে ভিন্ন মাত্রা। কোভিডকালের অযুত প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও প্রায় ১১ হাজার অতিথি আর্মি স্টেডিয়ামে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠানটিকে উপভোগ করেন।

অনুষ্ঠানটিকে ঘিরে নতুন সাজে সাজানো হয় এই স্টেডিয়াম। গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে চোখে পড়ে আকর্ষণীয় উপস্থাপনা। ছিল উৎসবের এক আমেজ। চোখ ধাঁধানো আলোকসজ্জায় ধরা পড়ে মনোমুগ্ধকর রূপ। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশের জন্ম ইতিহাসের পরতে পরতে জড়িয়ে আছে গর্বিত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নাম।

জাতির পিতার বজ্রকন্ঠে হাজারো বঞ্চনা থেকে বাঙালির মুক্তির ইতিহাস, ৫৬ হাজার বর্গমাইলের মানচিত্র ও লাল সবুজের পতাকার সঙ্গে দেশের মানুষের পাশাপাশি সেনা সদস্যদেরও আবেগ-উচ্ছ্বাসও নিবিড়। শুক্রবার (০৩ ডিসেম্বর) সুবর্ণরেখায় উজ্জ্বল এই অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো.তাজুল ইসলাম এমপি, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারেক আহমেদ সিদ্দিকসহ অনেকেই।

বঙ্গবন্ধুর সমর দর্শনের আলোকে তাঁরই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতি বাস্তবায়নের দৃঢ় ও শক্তিশালী পদক্ষেপ হিসেবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী, দক্ষ, পেশাগত, সুশৃঙ্খল, আধুনিক ও যুগোপযোগী একটি বাহিনীতে রূপান্তরিত করার সর্বাত্মক পরিকল্পনা ও উদ্যোগ গ্রহণ করায় তাকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ড.এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।

অমিত দৃঢ়তার সঙ্গে সেনাপ্রধান উচ্চারণ করেন-‘প্রধানমন্ত্রীর একান্তিক আগ্রহ এবং প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আজ অভূতপূ





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন