স্বাধীন বাংলাদেশ পুলিশ বিভাগের প্রধান হিসেবে তিনিই প্রথম আইজিপি, যিনি অর্ধশতাব্দীর পুলিশ বিভাগের নানা ক্ষেত্রে সংস্কার এনেছেন, যোগ করেছেন নতুন নতুন ধারণা, যা পুলিশ বাহিনীকে করে তুলেছে জনবান্ধব। তাকে ঘিরে তাই কেবল পুলিশ বিভাগ নয়, সমাজের সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে রয়েছে ইতিবাচক আগ্রহ। তিনি বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম-বার।

নতুনত্ব, বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত আর অর্জন-সাফল্যে ভরপুর তার দীর্ঘ ৩৪ বছরের বর্ণাঢ্য পেশাগত জীবন। পাড়ি দিয়েছেন অনেক বন্ধুর পথ। প্রযুক্তিনির্ভর, আধুনিক ও স্মার্ট নেতৃত্বের পথিকৃৎ তিনি। কথার সঙ্গে বাস্তবতার সম্মিলন ঘটিয়েই পথ চলেছেন একজন ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম-বার।

ডিএমপি কমিশনার বা র‌্যাবপ্রধান থাকাকালে যেমন, তেমনি পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হিসেবেও দেশপ্রেমের প্রোজ্জ্বল শিখায় নিজের দৃঢ়চেতা মনোভাব ও সাহসী নেতৃত্বে বাহিনীর প্রতিটি সদস্যকে বিকশিত করেছেন। ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি সরকার ড. বেনজীরকে দেশের ৩০তম পুলিশপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়ার পর তার নেতৃত্বের প্রতি আস্থা-বিশ্বাস অটুট রয়েছে পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি দেশবাসীরও।

ড. বেনজীর তার প্রতিটি দায়িত্ব পালনকালে নতুন ভাবনা ও উদ্যোগের মাধ্যমে বাহিনীর উন্নয়ন, সদস্যদের পেশাদারি দক্ষতা বৃদ্ধি, জনগণের সঙ্গে সেতুবন্ধ রচনা করে দেশসেবায় ব্রতী হয়েছেন। পুলিশপ্রধানের পদক্ষেপের কারণে ‘জনমুখী পুলিশি সেবা’ পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। থানা থেকে বের হয়ে পুলিশকে মানুষের দোরগোড়ায় নিতে একের পর এক সাহসী ও সময়োপযোগী নির্দেশনাও দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা, করোনাভাইরাস মোকাবেলায় মানুষের পাশে থেকে সেবা দেওয়া, জঙ্গি ও মাদক নির্মূলে প্রতিনিয়ত অভিযানসহ বিভিন্ন কার্যক্রম চালাচ্ছে পুলিশ বাহিনী।

এর আগে ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর বেনজীর আহমেদকে বাংলাদেশের এলিট ফোর্স র‌্যাবের মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি দায়িত্ব বুঝে নিয়ে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধ দমনে ভূমিকা পালন করে ব্যাপক প্রশংসা কুড়ান তিনি। দেশের ক্রীড়াক্ষেত্রেও অবদান রাখেন বেনজীর।

হলি আর্টিজান হামলায় প্রাথমিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এবং পরবর্তীতে তিনি বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ নির্মূলে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান ‘চল যাই যুদ্ধে, মাদকের বিরুদ্ধে’ অভিযাত্রাকে একটি সামাজিক আন্দোলনের রূপ দিয়ে বেগবান রেখেছেন মাদকবিরোধী অভিযান। সুন্দরবনের জলদস্যুতার অবসান ঘটিয়ে একটি স্বস্তির উপকূলীয় অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় বিশেষ অবদান রেখেছেন। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে তার সাফল্যের মুকুটে আরও একটি উজ্জ্বল পালক।

মেধাবী, সৎ ও চৌকস পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত ড. বেনজীর আহমেদ ১৯৬৩ সালের ১ অক্টোবর গোপালগঞ্জের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। শিক্ষাজীবনে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এমএ এবং এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের এশিয়া প্যাসিফিক সেন্টার ফর সিকিউরিটি স্ট্যাডিজ, অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরা চার্লস স্ট্রার্ট ইউনিভার্সিটি ও সিঙ্গাপুরের বিশ্বব্যাংক আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পড়াশোনা করেন। ২০১৯ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন।

সপ্তম বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের কর্মকর্তা বেনজীর আহমেদ ১৯৮৮ সালে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন। র‌্যাবের ডিজি হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন ছয় বছরের বেশি। তার আগে তিনি প্রায় সাড়ে চার বছর ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার ছিলেন।

বিএনপি সরকারের আমলে তার কোনো পদোন্নতি হয়নি তিনি একটি নির্দিষ্ট জেলার বাসিন্দা বলে- এমন অভিযোগ ছিল।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে পুলিশের স্লোগান ছিল ‘মুজিববর্ষের অঙ্গীকার, পুলিশ হবে জনতার’। পুলিশের এই স্লোগানের যথার্থতার প্রমাণ মেলে করোনা দুর্যোগকালে তাদের মানবিক ভূমিকা রাখার মধ্য দিয়ে। ড. বেনজীর আইজিপির দায়িত্ব যখন পান, তখন দেশজুড়ে বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের তাণ্ডব চলছিল। তার পরিকল্পনায় পুলিশ নিজ চৌহদ্দির বাইরে গিয়ে মানবিক পুলিশ হিসেবে মানুষের পাশে দাঁড়ায়। এখনো তাদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে। করোনায় মৃত ব্যক্তিকে যখন আপনজনরা ছেড়ে চলে যাচ্ছে, তখন পুলিশ গিয়ে তাদের দাফন ও সৎকার করছে।

আইজিপির ছোঁয়ায় বদলে যাওয়া কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল

এ যেন জাদুর কাঠির ছোঁয়ায় জেগে ওঠা। একসময় যে হাসপাতালটি নিজ বাহিনীর সদস্যদের আস্থা পেতে সংশয় ছিল, মাত্র কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে সেটি সবার ভরসার জায়গা হয়ে ওঠে। মন্ত্রী-এমপি, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাও করোনা আক্রান্ত হলে ছুটছেন রাজধানীর রাজারবাগের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে (সিপিএইচ)।

যারা হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নিয়েছেন, সবার মাঝেই মুগ্ধ বিস্ময়। এর পরিচ্ছন্ন, আরামদায়ক আর সুখকর পরিবেশ, আন্তরিকতাপূর্ণ সেবা আর সুষ্ঠু চিকিৎসায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন তারা। কেউ কেউ আবার এই হাসপাতালের সমৃদ্ধ জেগে ওঠার কারিগর পুলিশপ্রধানকে ‘ফিনিক্স পাখি’র সঙ্গে তুলনা করেছেন।

পুলিশ সদস্যদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢেলে সাজানো হয়েছে ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতাল। অত্যাধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে বদলে গেছে হাসপাতালটির চিত্র। বেড়েছে সেবার মান ও পরিধি। ১৯৫৪ সালে প্রতিষ্ঠিত রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে ২০২০ সাল পর্যন্ত কোনো নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্র বা আইসিইউ ছিল না। বর্তমান পুলিশপ্রধানের তত্ত্বাবধানে নির্মাণ করা হয়েছে ১৫ বেডের আইসিইউ এবং ১৪ বেডের এসডিইউ। এখন এই হাসপাতালে ১৫০ জনের মতো চিকিৎসক রয়েছেন।

হাসপাতালটির দায়িত্বরত কর্মকর্তারা বলছেন, চা‌হিদার সঙ্গে তাল মি‌লি‌য়ে বেড়েছে চিকিৎসা ও সেবার মান। পুলিশপ্রধানের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধান ও নির্দেশনায় করোনা আক্রান্তদের সুচিকিৎসায় সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। চিকিৎসার পাশাপাশি রোগীর খাদ্যের মানসহ সব ধরনের সেবার মান বাড়ছে।

বাহিনীর সদস্যদের মর্যাদাবৃদ্ধিতে অভাবনীয় সব উদ্যোগ আইজিপির

সম্প্রতিক পুলিশের যেসব সদস্য চাকরিজীবন শেষ করছেন তাদের সম্মানের সঙ্গে বিদায় জানানোর রেওয়াজ শুরু হয়েছে। বিভিন্ন উপহারের পাশাপাশি পুলিশের গাড়িতে করে তাদের কর্মস্থল থেকে বাড়িতে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যা ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। পুলিশ সদস্যরা বলছেন, বাহিনীর সদস্যদের প্রতি আইজিপির যে আন্তরিকতা ও ভালোবাসা, সেখান থেকেই এই ধরনের কাজ সম্ভব হচ্ছে।

আগে অনেকটা সাদামাটা ছিল পুলিশ সদস্যদের অবসরযাত্রা। এখন ফুল-বেলুন, রঙিন ফিতায় সজ্জিত গাড়িতে চড়ে অবসরে যাচ্ছেন পুলিশ সদস্যরা। সঙ্গে থাকছে সহকর্মীদের শ্রদ্ধা, অশ্রুসিক্ত শুভেচ্ছাও। পুলিশ বাহিনী থেকে একজন সদস্যের এমন বিদায় আগে কল্পনাও করেনি কেউ। চাকরিজীবন শেষে বাড়ি ফেরাটা যেন হয় সম্মানের, মর্যাদার, ভালো লাগার- সেই ভাবনা থেকে বিদায়ী সংবর্ধনার রীতি চালু হয়েছে।

এছাড়া সম্প্রতি আইজিপির বিশেষ উদ্যোগে পুলিশ সদস্যদের কল্যাণে হ্রাসকৃত ভাড়ায় দূরপাল্লার বাস সার্ভিস চালু করা হচ্ছে।

ঘরে বসে আরও সেবা

বহুমুখী ইতিবাচক কর্মকাণ্ডের কারণেই পুলিশ বাহিনী ভাসছে প্রশংসায়। বদলে গেছে তাদের ভাবমূর্তি। এখন তাদের বলা হচ্ছে মানবিক পুলিশ।

বেনজীর আহমেদের নেতৃত্বে পুলিশকে একটি জনবান্ধব পুলিশ বাহিনীতে রূপান্তর করতে কাজ করছে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স। পুলিশি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সারাদেশকে ছয় হাজার ৯১২টি বিটে ভাগ করে প্রতি বিটে একজন কর্মকর্তাকে পদায়নের মাধ্যমে `বিট পুলিশিং‘ কার্যক্রম চালু করেন। এতে থানায় না গিয়ে ঘরে বসে পুলিশি সেবা মিলছে। ফলে কমেছে ভোগান্তি। পাশাপাশি পুলিশের প্রতিও সাধারণ মানুষের আস্থা বেড়েছে।

আইজিপির দায়িত্ব পাওয়ার পর সব সময় চেষ্টা করছেন থানার বাইরে পুলিশের সঙ্গে জনগণের একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার। দুই লাখ পুলিশের সঙ্গে ১৭ কোটি মানুষের যোগাযোগকে সহজ ও সুহৃদ করতে পুলিশ সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরিকল্পনাও তার। নানাভাবে প্রশংসা পাওয়া পুলিশের বর্তমান সুনাম তিনি ধরে রাখতে চান আগামী দিনেও।

নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতিতে দুর্নীতি ও অস্বচ্ছতা দূর

আইজিপির নির্দেশে পুলিশের নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতিতে দুর্নীতি ও অস্বচ্ছতা দূর করতে যুগোপযোগী পরিবর্তন আনা হয়। পুলিশের পদোন্নতি পরীক্ষা কেন্দ্রীয়ভাবে গ্রহণের যুগান্তকারী সিদ্ধান্তও নেন তিনি। তিনি প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের আধুনিকায়ন, যুগোপযোগী সিলেবাস প্রণয়ন, মডিউল তৈরি ইত্যাদি কার্যক্রম গ্রহণ করেন। কনস্টেবল থেকে অতিরিক্ত আইজি পর্যন্ত সব পর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের জন্য বছরে অন্তত একবারের জন্য হলেও বাধ্যতামূলক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি বাংলাদেশ পুলিশের সব সদস্যের জন্য একই সিরিয়ালের (০১৩২) মোবাইল ফোন নম্বর চালু করেছেন।

বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘সবাই বলে যে করাপশন বন্ধ করতে হলে কয়েকটি বেসিক জায়গায় কাজ করতে হবে। নিয়োগ, পদোন্নতি এবং পদায়ন। আমরা কিন্তু কনস্টেবল ও সাব ইন্সপেক্টর নিয়োগ পূর্ণাঙ্গ ওভারহেলিং করেছি। সম্প্রতি সাড়ে ৩ হাজার কনস্টেবল রিক্রুট করেছি, এটি সাড়া ফেলেছে সারা দেশে। আমরা কোথাও বলিনি, আমরা ট্রান্সপারেন্সির মাধ্যমে নিয়োগ করেছি। বরং মেইনস্ট্রিম মিডিয়া বলছে, কত স্বচ্ছ হয়েছে এবারের রিক্রুটমেন্ট। নিয়োগ প্রক্রিয়া আমরা এমনভাবে তৈরি করেছি, যেটি ট্রান্সপারেন্ট হতে বাধ্য। পদায়নের ক্ষেত্রেও আমরা চেষ্টা করছি শতভাগ স্বচ্ছতা। এগুলো পলিসির মাধ্যমে বাস্তবায়ন করছি।’

পুলিশকে দুর্নীতিমুক্ত হতে হবে

জনগণের পুলিশ হতে হলে পুলিশকে সব ধরনের দুর্নীতিমুক্ত হতে হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে পুলিশের অবস্থান এখন শূন্য সহনশীল। পুলিশে কোনো দুর্নীতিবাজের ঠাঁই নেই। মাদকের সঙ্গে কোনো পুলিশ সদস্যের সম্পর্ক থাকবে না। পুলিশকে হতে হবে মাদকমুক্ত। পুলিশের নিষ্ঠুরতা বন্ধ করে আইনি সক্ষমতা কাজে লাগাতে কাজ করছেন পুলিশপ্রধান।

হ্যান্ডস ফ্রি পুলিশিং

পুলিশপ্রধানের পদক্ষেপের কারণে ‘জনমুখী পুলিশি সেবা’পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। উন্নত পুলিশি সেবা দিতে হ্যান্ডস ফ্রি পুলিশিং চালু করতে মাঠপর্যায়ে পুলিশ সদস্যদের টেকটিক্যাল বেল্ট দেওয়া হয়েছে। ছয় চেম্বারের আধুনিক এই ট্যাকটিক্যাল বেল্টে থাকছে পিস্তল, হ্যান্ডকাফ, অতিরিক্ত ম্যাগাজিন, এক্সপেন্ডেবেল ব্যাটন, পানির পটসহ প্রয়োজনীয় সবকিছু। দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের হাত থাকছে সম্পূর্ণ খালি। এতে বিপদগ্রস্ত মানুষের যেকোনো প্রয়োজনে দ্রুত সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিতে পারছে পুলিশ। আবার অপরাধীকে দ্রুত ঘায়েল করতে ট্যাকটিক্যাল বেল্টে থাকা প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সরঞ্জাম ব্যবহার করা যাচ্ছে অনায়াসে।

নারীর জন্য সাইবার নিরাপত্তা

পুলিশপ্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার পর ড. বেনজীর আহমেদ নারীদের নিরাপত্তায় কাজ করেছেন বিভিন্ন উদ্যোগের সফল কার্যকরের মাধ্যমে। নারীরা যাতে সাইবার বুলিংয়ের শিকার না হন, তাদের জন্য নিরাপদ সাইবার স্পেস নিশ্চিত করতে চালু করেছেন ‘পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন’ফেসবুক পেজ। কোনো নারী সাইবার বুলিংয়ের শিকার হলে তিনি সহজেই এ পেজের মাধ্যমে প্রতিকার পাচ্ছেন। প্রতিটি থানায় চালু করা হয়েছে নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্ক।

অত্যাধুনিক মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র

পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে রাজধানীর অদূরে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের বসুন্ধরা রিভারভিউ প্রকল্পে গড়ে তোলা হয়েছে অত্যাধুনিক মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র- ওয়েসিস। উন্নত ব্যবস্থাপনায় দেশের সবচেয়ে অত্যাধুনিক মাদক নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্র হবে এটি। সম্পূর্ণ অলাভজনক এ প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হবে পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্টের অধীনে। সবার জন্য উন্মুক্ত। পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি) ড. বেনজীর আহমেদের প্রচেষ্টায় প্রকল্পটির তদারকির দায়িত্বে রয়েছেন ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান ও একদল দক্ষ কর্মীবাহিনী। মাদকাসক্তদের চিকিৎসাসেবা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার উদ্দেশ্যে ওয়েসিস মাদকাসক্তি নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

ভূমিহীনদের জন্য আইজিপি গড়ে দেন কবরস্থান

লক্ষ্মীপুরের ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুরে-রামগতি সড়কের দুই পাশে বসবাসকারী নদীভাঙনের শিকার ভূমিহীন প্রায় ২ হাজার মানুষের জন্য কবরস্থান ও মসজিদের ফলক উন্মোচন করেন পুলিশপ্রধান। এ সময় মসজিদ ও কবরস্থানের জন্য প্রায় ৩০ শতক জমির দলিল হস্তান্তর করেন তিনি। দুই হাজার ভূমিহীন মানুষের জন্য কবরস্থান গড়ে দেওয়ার মূল স্থপতি বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজপি) ড. বেনজীর আহমেদ এবং তার স্ত্রী পুনাক সভানেত্রী জীশান মীর্জা। প্রায় সাড়ে ২৯ শতক আয়তনের এই কবরস্থানে প্রায় ৪০০ মানুষকে দাফনের স্থান সংকুলান হবে।

আইজিপি বেনজীরের হাত ধরে প্রাণ পেল দেশের দাবা

যেখানেই হাত দিয়েছেন সোনা ফলেছে। থিতিয়ে যাওয়া দাবাকেও তুলে এনেছেন মূলধারায়। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও সুনাম কুড়িয়েছেন উদ্যমী ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে। পেয়েছেন দক্ষিণ এশীয় দাবা কাউন্সিলে প্রথম নির্বাচিত সভাপতি হওয়ার সম্মান।

অবহেলিত বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশন প্রাণ পেয়েছে তার উদ্যমী স্পর্শে। দাবার পৃষ্ঠপোষকতায় যুক্ত করেছেন দেশের বড় শিল্পগোষ্ঠীকেও। পুলিশের বর্তমান এই প্রধানের হাত ধরে অনুষ্ঠিত হয়েছে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক মানের ‘দাবা টুর্নামেন্ট’। পেশার চৌহদ্দি পেরিয়ে ক্রীড়াঙ্গনের অগ্রযাত্রায় তার ভূমিকা প্রশংসনীয় রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়েও।

বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সভাপতি ড. বেনজীর আহমেদ মনে করেন, শিশুর মানসিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ ঘটাতে দাবা খেলাকে স্কুল পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে হবে। বিভিন্ন সময় তিনি বলেছেন, ‘স্কুলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দাবা খেলার ব্যবস্থা করে দিতে পারলে তারা অনেক খারাপ কাজ থেকে সরে আসবে। স্কুল থেকে যদি দাবাড়ু তৈরি করা যায় তাহলে দ্রুতই আমরা বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে দাবার পড়াশক্তি হতে পারব।’

পুলিশের সর্বোচ্চ পদক লাভ

বেনজীর আহমেদ চাকরিজীবনে সর্বোচ্চ সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের স্বীকৃতি হিসেবে অর্জন করেছেন পুলিশের সর্বোচ্চ পদক বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল (বিপিএম)। ২০২০ সালে ষষ্ঠবারের মতো বিপিএম (সাহসিকতা) অর্জনের রেকর্ড গড়েন তিনি। এর আগে ২০১১, ২০১২, ২০১৪, ২০১৬ ও ২০১৯ সালে এই পদক তার সাফল্যের মুকুটে যোগ হয়।

 

 





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন