দেশের মানুষকে সেবা দিতে পুলিশ বদ্ধপরিকর : আইজিপি

দ্বারা Update Satkhira
০ মন্তব্য 725 দর্শন

 

ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ বাংলাদেশ ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) বলেছেন, বাংলাদেশ পুলিশ দেশের মানুষকে সেবা দিতে বদ্ধপরিকর। আমরা প্রতিনিয়ত এ সংগঠনের মানোন্নয়নের জন্য কাজ করছি। পুলিশ সদস্যদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয়ভাবে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতার মাধ্যমে সবচেয়ে মেধাবীদের নির্বাচন করা হচ্ছে। আমরা দীর্ঘ ৪০ বছর পর কনস্টেবল, সাব ইন্সপেক্টর ও সার্জেন্ট পদের নিয়োগ বিধি সংশোধন করেছি। ইতোমধ্যে কনস্টেবল পদে ‘বেস্ট অব দি বেস্ট’ প্রার্থী বাছাই করা হয়েছে। আমরা মনে করি, পুলিশের চাকরি শুধু চাকরি নয়, সেবা। এজন্য আমাদের এবারের ট্যাগ লাইন হলো ‘চাকরি নয়, সেবা’। আমরা চাই পুলিশ বৈষম্যহীনভাবে দেশের মানুষকে সেবা দিবে।

পুলিশ সপ্তাহ ২০২২ উদ্বোধন করায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানান আইজিপি।

 

‘দক্ষ পুলিশ সমৃদ্ধ দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্যে উদযাপিত পুলিশ সপ্তাহ ২০২২ এর দ্বিতীয় দিনে আইজিপি আজ (২৪ জানুয়ারি ২০২২) দুপুরে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স মাঠে শিল্ড প্যারেড, ২০২০ ও ২০২১ সালের মাদকদ্রব্য, অস্ত্র ও চোরাচালান দ্রব্য উদ্ধারে সাফল্য অর্জনকারী বিভিন্ন ইউনিটের মাঝে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।

পুলিশ সপ্তাহের প্রতিটি অধিবেশন স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনপূর্বক অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশকে ২০৪১ সালের উন্নত দেশের উপযোগী পুলিশ হিসেবে গড়ে তুলতে কৌশলগত পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

জঙ্গি ও মাদকের প্রসঙ্গ তুলে ধরে আইজিপি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জঙ্গিবাদ ও মাদকের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি ঘোষণা করেছেন। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সেই শূন্য সহিষ্ণুতার নীতি বাস্তবায়ন করছি। যখনই আমাদের দেশে জঙ্গিবাদ হানা দিয়েছে তখনই জনগণকে সাথে নিয়ে আমরা তা দমন করেছি।

আইজিপি বলেন, বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অস্ত্র সম্পূর্ণ নির্মূল করতে হবে। তিনি বলেন, মাদক নির্মূলে জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে। যুব সমাজের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমাদের দেশ মাদক উৎপাদন করে না। কিন্তু আমরা কেন মাদকের শিকার হবো। যুব সমাজকে তা উপলব্ধি করতে হবে। যুবকদের উদ্দেশ্যে আইজিপি বলেন, ২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশ যুব সমাজকে হাতছানি দিচ্ছে। আমাদেরকে অবশ্যই মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে।

করোনাকালে বাংলাদেশ পুলিশের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, করোনা অতিমারিতে পুলিশ এক মহাকাব্যিক ভূমিকা পালন করেছে। নিজেদের জীবন বিপন্ন করে পুলিশ সদস্যরা জনগণের বাড়িতে ওষুধ পৌঁছে দেয়া, খাবার পৌঁছে দেয়া, কৃষকের ধান কাটার ব্যবস্থা করা, এমনকি করোনায় কেউ মারা গেলে যখন আত্মীয়-স্বজনরা লাশ ফেলে চলে গেছে তখন পুলিশ লাশ দাফন/সৎকার করেছে। করোনাকালে ১০৬ জন পুলিশ সদস্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। সাতাশ হাজারের বেশি পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের অধিকাংশই আবার সুস্থ হয়ে দেশ ও জনগণের কল্যাণে আত্মনিয়োগ করেছেন।

পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্যে হুশিয়ারি উচ্চারণ করে আইজিপি বলেন, কোন পুলিশ সদস্য কোন ধরনের অনৈতিক কাজে জড়িত হলে তা বরদাশত করা হবে না। আমরা পুলিশের প্রতিটি সদস্যের জন্য সামর্থ্য অনুযায়ী ন্যায়সঙ্গত ও ন্যয্য কল্যাণ নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি বলেন, আমরা খারাপ কাজের মাধ্যমে সংবাদ হতে চাই না, নিজেরা ভালো কাজ করে সংবাদের যোগান দিতে চাই।

তিনি অবৈধ অস্ত্র, মাদকদ্রব্য ও চোরাচালান দ্রব্য উদ্ধারে সাফল্য অর্জনকারী ইউনিটসমূহকে ধন্যবাদ জানান। অন্যান্য ইউনিটসমূহকেও এক্ষেত্রে আরও তৎপর হওয়ার আহবান জানান আইজিপি।

অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন অতিরিক্ত আইজি (এঅ্যান্ডআই) ড. মোঃ মইনুর রহমান চৌধুরী।

আইজিপি ২০২০ ও ২০২১ সালে বিভিন্ন অভিযানে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার, মাদকদ্রব্য উদ্ধার ও চোরাচালানের মালামাল উদ্ধারে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।

আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার অভিযানে ২০২০ সালে
‘ক’ গ্রুপে প্রথম হয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ, দ্বিতীয় চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ, তৃতীয় পাবনা জেলা পুলিশ।

‘খ’ গ্রুপে প্রথম হয়েছে কক্সবাজার জেলা পুলিশ, দ্বিতীয় যশোর জেলা পুলিশ, তৃতীয় নোয়াখালী জেলা পুলিশ।

‘গ’ গ্রুপে এপিবিএন প্রথম , চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পুলিশ দ্বিতীয়, রাজবাড়ী জেলা পুলিশ তৃতীয় হয়েছে।

‘ঘ’ গ্রুপে রেব-৭, চট্টগ্রাম প্রথম, রেব-৫, রাজশাহী দ্বিতীয়, রেব-১৫, কক্সবাজার তৃতীয় হয়েছে।

‘ঙ’ গ্রুপে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ প্রথম, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিরপুর বিভাগ দ্বিতীয়, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মতিঝিল বিভাগ তৃতীয় হয়েছে।

আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার অভিযানে ২০২১ সালে
‘ক’ গ্রুপে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ প্রথম, পাবনা জেলা পুলিশ দ্বিতীয়, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ তৃতীয় হয়েছে।

‘খ’ গ্রুপে প্রথম কক্সবাজার জেলা পুলিশ, দ্বিতীয় নরসিংদী জেলা পুলিশ, তৃতীয় নোয়াখালী জেলা পুলিশ।

‘গ’ গ্রুপে এপিবিএন প্রথম, গাজীপুর জেলা পুলিশ দ্বিতীয়, রাজবাড়ী জেলা পুলিশ তৃতীয় হয়েছে।

‘ঘ’ গ্রুপ রেব-৭ , চট্টগ্রাম প্রথম, রেব- ৫, রাজশাহী দ্বিতীয়, রেব-১৫, কক্সবাজার তৃতীয় হয়েছে।

‘ঙ’ গ্রুপে প্রথম হয়েছে ডিবি, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম দ্বিতীয়, যৌথভাবে তৃতীয় হয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের তেজগাঁও বিভাগ ও ওয়ারী বিভাগ।

মাদকদ্রব্য উদ্ধারে ২০২০ সালে যারা পুরস্কৃত হয়েছে, ‘ক’ গ্রুপে প্রথম হয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ, কুমিল্লা জেলা পুলিশ দ্বিতীয়, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ তৃতীয়।

‘খ’ গ্রুপে কক্সবাজার জেলা পুলিশ প্রথম, যশোর জেলা পুলিশ দ্বিতীয়, ঢাকা জেলা পুলিশ তৃতীয় হয়েছে।

‘গ’ গ্রুপে প্রথম হয়েছে জয়পুরহাট জেলা পুলিশ, দ্বিতীয় লালমনিরহাট জেলা পুলিশ, তৃতীয় চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ।

 

‘ঘ’ গ্রুপে প্রথম হয়েছে রেব-৫, রাজশাহী, রেব-৪, মিরপুর, ঢাকা দ্বিতীয়, রেব-১৫, কক্সবাজার তৃতীয় হয়েছে।

‘ঙ’ গ্রুপে প্রথম হয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ, দ্বিতীয় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের রমনা বিভাগ, তৃতীয় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিরপুর বিভাগ।

‘চ’ গ্রুপে প্রথম হয়েছে হাইওয়ে পুলিশ, দ্বিতীয় আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, তৃতীয় রেলওয়ে পুলিশ।

২০২১ সালে মাদকদ্রব্য উদ্ধার এ যারা বিজয়ী-

‘ক’ গ্রুপে প্রথম হয়েছে কুমিল্লা জেলা পুলিশ, দ্বিতীয় চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ, তৃতীয় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ।

‘খ’ গ্রুপে প্রথম হয়েছে কক্সবাজার জেলা পুলিশ, দ্বিতীয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশ, তৃতীয় যশোর জেলা পুলিশ।

‘গ’ গ্রুপে প্রথম হয়েছে জয়পুরহাট জেলা পুলিশ, দ্বিতীয় লালমনিরহাট জেলা পুলিশ, তৃতীয় গাজীপুর জেলা পুলিশ।

‘ঘ’ গ্রুপে রেব-৭, চট্টগ্রাম প্রথম, রেব-১৫, কক্সবাজার দ্বিতীয়, রেব-১১, নারায়ণগঞ্জ তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে।

‘ঙ’ গ্রুপে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ প্রথম, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ওয়ারী বিভাগ দ্বিতীয় এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিরপুর বিভাগ তৃতীয় হয়েছে।

‘চ’ গ্রুপে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন প্রথম, হাইওয়ে পুলিশ দ্বিতীয়, রেলওয়ে পুলিশ তৃতীয় হয়েছে।

চোরাচালান মালামাল উদ্ধারের ২০২০ সালে যারা বিজয়ী হয়েছে তারা হলো– ‘ক’ গ্রুপে প্রথম হয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ, দ্বিতীয় কুমিল্লা জেলা পুলিশ, তৃতীয় টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ।

‘খ’ গ্রুপে খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশ প্রথম, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ দ্বিতীয়, বান্দরবান জেলা পুলিশ তৃতীয়।

‘গ’ গ্রুপে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পুলিশ প্রথম, লালমনিরহাট জেলা পুলিশ দ্বিতীয়, পঞ্চগড় জেলা পুলিশ তৃতীয়।

‘ঘ’ গ্রুপে রেব-৩, টিকাটুলি, ঢাকা প্রথম, রেব-১০, ডেমরা, ঢাকা দ্বিতীয়, রেব-৭, চট্টগ্রাম তৃতীয়।

‘ঙ’ গ্রুপে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিরপুর বিভাগ প্রথম, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ দ্বিতীয়, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের তেজগাঁও বিভাগ তৃতীয়।

‘চ’ গ্রুপে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন প্রথম, রেলওয়ে পুলিশ দ্বিতীয়, হাইওয়ে পুলিশ তৃতীয় হয়েছে।

২০২১ সালে চোরাচালান মালামাল উদ্ধারে বিজয়ী হলো-

‘ক’ গ্রুপে প্রথম হয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ প্রথম, কুমিল্লা জেলা পুলিশ দ্বিতীয়, সিলেট জেলা পুলিশ তৃতীয়।

‘খ’ গ্রুপে প্রথম হয়েছে ঝিনাইদহ জেলা পুলিশ, দ্বিতীয় বাগেরহাট জেলা পুলিশ, তৃতীয় হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ।

‘গ’ গ্রুপে চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ প্রথম, পঞ্চগড় জেলা পুলিশ দ্বিতীয়, লালমনিরহাট জেলা পুলিশ তৃতীয়।

‘ঘ’ গ্রুপে রেব-১০, ডেমরা, ঢাকা প্রথম, রেব-৭, চট্টগ্রাম দ্বিতীয়, রেব-১৪, ময়মনসিংহ তৃতীয়।

‘ঙ’ গ্রুপে প্রথম হয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের রমনা বিভাগ, দ্বিতীয় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিরপুর বিভাগ, তৃতীয় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ লালবাগ বিভাগ।

‘চ’ গ্রুপে প্রথম হয়েছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, দ্বিতীয় রেলওয়ে পুলিশ, তৃতীয় হাইওয়ে পুলিশ।

পুলিশ সপ্তাহ ২০২২ কুচকাওয়াজ ট্রফি প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছে এপিবিএন দল, দ্বিতীয় যৌথ মেট্রো দল এবং তৃতীয় ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ দল।

শিল্ড প্যারেড প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছে এপিবিএন দল, দ্বিতীয় যৌথ মেট্রো দল এবং তৃতীয় ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ দল।

আইজিপি কৃতিত্ব অর্জনকারী বিভিন্ন ইউনিটের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন