বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল একটি অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে কেন্দ্র করে, যেখানে সকল ধর্মের ও বর্ণের মানুষ সবাই মিলে শান্তিতে একসাথে আমরা বসবাস করবে এবং আমরা সেই নজির স্থাপন করেছি বলে জানিয়েছেন ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, বিপিএম (বার), পিপিএম।
আজ রবিবার (২ অক্টোবর ২০২১) সনাতন ধর্মাবলম্বী সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির, রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন এবং গুলশান-বনানী সার্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটির সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন করে এ কথা বলেন আইজিপি।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে আইজিপি বলেন, সাধারণত দুষ্কৃতিকারীরা সুযোগ খোঁজে আমাদের মধ্যে বিরাজমান সম্প্রীতির যে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত আমরা স্থাপন করেছি তাকে তারা বিনষ্ট করতে চায়। আমাদের দেশের যে সুনাম রয়েছে, আমাদের সরকারের যে সুনাম রয়েছে ও আমরা মুসলিম-হিন্দু-খ্রিস্টান-বৌদ্ধ সবাই মিলে একসাথে দীর্ঘদিন বসবাস বসবার করার যে নজির স্থাপন করেছি সেই ঐতিহ্যকে কিছু মানুষ নষ্ট করতে চায় তাদেরকে আমরা দৃঢ় হস্তে দমন করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
তিনি বলেন, দুষ্কৃতিকারীরা হঠাৎ করে একটা দুর্ঘটনা ঘটিয়ে উৎসবের মাঝে একটা কালিমা লেপন করতে চেষ্টা করে। প্রত্যেকটা পূজা মন্ডপে আমাদের পুলিশ বাহিনী ও আনসার বাহিনীর সদস্য আছে, এছাড়া পেট্রোলিংয়ে পুলিশ নিয়োজিত থাকে, প্রতিটি মন্দিরে স্বেচ্ছাসেবীরাও থাকেন, বিশেষ করে যখন লোকজন কম থাকে ওই সময়টাতে আমরা আরো বেশি সজাগ থাকতে হবে।
দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে আইজিপি বলেন, যদি কোন দুষ্কৃতিকারী দুর্ঘটনা ঘটাতে আসে তাকে আইনের আওতায় এনে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে যাতে করে কোন দুষ্কৃতিকারী ঘটনা ঘটানোর দুঃসাহস না পায়। আমরা আপনাদের নিরাপত্তায় সর্বদা সজাগ আছি।
আইজিপি আশা প্রকাশ করে বলেন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণভাবে উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে।
সবাইকে শারদীয় দুর্গোৎসবের শুভেচ্ছা জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলাম বিপিএম (বার) বলেন, আমরা যারা বাংলাদেশ পুলিশের সদস্য তারা আপনাদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য আমাদের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে আপনাদের পাশে থাকি। আপনাদের কাছে অনুরোধ করব পূজা মন্ডপ অথবা মন্দির যেখানেই আপনারা পূজা করেন না কেন সেটা যেন একেবারেই অরক্ষিত না থাকে, অন্তত একজন স্বেচ্ছাসেবক হলেও আপনারা রাখবেন। আপনারা যদি সেটাও করতে না পারেন তাহলে দরকার হলে আমাদের পুলিশের সদস্য আছে, আমাদের আনসারের সদস্য আছে তাদের সাথে কাজ ভাগাভাগি করে পূজা মন্ডপগুলো নজর রাখার ব্যবস্থা করবেন।
তিনি বলেন, দূর্গোৎসবের সময় কুচক্রী মহল যেন বিঘ্ন ঘটিয়ে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িকতার কলঙ্ক চিহ্ন একে দিতে না পারে সে ব্যাপারে আমাদের সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। আমরা সবসময় আপনাদের পাশে আছি। যেকোন প্রয়োজনে আপনাদের কাছে আমাদের ফোন নাম্বারগুলো দেয়া আছে, এছাড়া ৯৯৯ আছে যেকোনো সমস্যা মনে হলে আমাদের ফোন করুন, আমরা আপনাদের পাশে এসে দাঁড়াবো। আপনাদের নিরাপত্তার জন্য যা যা করণীয় বাংলাদেশ পুলিশ সেটা করার জন্য প্রস্তুত আছে।
এ সময় বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন পদমর্যাদার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ ও হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।