খুলনা মহানগরের স্কুল পর্যায়ের ছাত্রছাত্রীদের বইপড়া উৎসব কর্মসূচির পুরস্কার বিতরণ আজ (শুক্রবার) সকালে খুলনা জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রথম পর্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার মোঃ হেলাল মাহমুদ শরীফ।
প্রধান অতিথি তাঁর বক্তৃতায় বলেন, ভাল বই পড়ার মাধ্যমে সত্যকে ও নিজেকে খুঁজে পাওয়া যায়। বই আমাদের স্বপ্ন দেখতে শেখায়। বই পড়া আনন্দের জন্য, জ্ঞানের জন্য ও নিজের জীবনের জন্য। বেশি বেশি বই পড়তে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করতে হবে। আলোকিত মানুষ হতে বইয়ের কোন বিকল্প নেই। আগামী দিনকে অর্থবহ করে তোলার জন্য সকলের বই পড়া উচিৎ। তিনি ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে আহবান জানান।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির বক্তৃতায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (এসডিএফ) এর পরিচালনা পরিষদের চেয়ারপার্সন ও বিশ^সাহিত্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি মোঃ আবদুস সামাদ বলেন, আমরা সবাই জীবনের একটি পাঠশালা। যত বই পড়বে তত নিজের জ্ঞান সমৃদ্ধ হবে। বই পড়লে পৃথিবীর সবকিছু জানা যায়, মানবিক মানুষ হওয়া যায়। পাঠ্যবইয়ের বাইরে সাহিত্যের বইগুলো সবসময় জীবনের জন্য প্রয়োজন। অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশ বই পড়ায় পিছিয়ে রয়েছে। ভারত, আইসল্যান্ড, চীন, থাইল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশ বই পড়ায় এগিয়ে রয়েছে। যত বই পড়বে তত চোখের সংখ্যা বাড়তে থাকবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন বিশ^সাহিত্য কেন্দ্রের অন্যতম ট্রাস্টি ডাঃ আবদুন নূর তুষার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মুকুল কুমার মৈত্র ও গ্রামীণফোনের খুলনা রিজিওনাল হেড বুশরা মেহরিন। স্বাগত বক্তৃতা করেন বিশ^সাহিত্য কেন্দ্রের পরিচালক শামীম আল মামুন। গ্রামীণফোনের সহযোগিতায় বিশ^সাহিত্য কেন্দ্র এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য অতিথিরা শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।
উল্লেখ্য, ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে খুলনা মহানগরের ৪৯টি স্কুলের প্রায় পাঁচ হাজার পাঁচশত ছাত্রছাত্রী বইপড়া কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছে। এসব স্কুলের শিক্ষার্থীরা মূল্যায়নপর্বে কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছে। এই উৎসবে চারটি পর্বে মোট তিন হাজার একশত ২৬জন শিক্ষার্থীকে পুরস্কার প্রদান করা হয়। এর মধ্যে দুই হাজার দুইশত ২৬ জন শিক্ষার্থী সরাসরি মঞ্চ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করে এবং আটশত ৯০ জন শিক্ষার্থীর পক্ষে সংশ্লিষ্ট স্কুলের শিক্ষকগণ পুরস্কার গ্রহণ করেন। বিশ^সাহিত্য কেন্দ্র গত ৪৫ বছরধরে সারাদেশে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য নানাবিধ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। দেশভিত্তিক উৎকর্ষ বইপড়া কার্যক্রম এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কর্মসূচি। বর্তমানে সারাদেশে এই কর্মসূচির আওতায় প্রায় এক হাজার সাতশত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দুই লাখ ছাত্রছাত্রী অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। বইপড়াকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে বিপুল সংখ্যক পুরস্কারের ব্যবস্থা।
অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থী, অভিভাবক, সংশ্লিষ্ট স্কুলের শিক্ষক ও সংগঠকগণ উপস্থিত ছিলেন।