বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব বৌদ্ধ পূর্ণিমা উৎসাহ উদ্দীপনা ও ধর্মীয় ভাব-গাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে উদ্যাপনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ পুলিশ ব্যাপক নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, বিপিএম (বার) এর সভাপতিত্বে আজ ১৪ মে ২০১৯ খ্রি. মঙ্গলবার সকালে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের সম্মেলন কক্ষে বৌদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা সংক্রান্ত এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় আইজিপি বলেন, বৌদ্ধ পূর্ণিমার নিরাপত্তা নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোন শঙ্কা নেই। নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুসংহত করার লক্ষ্যে নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রতিটি বিষয় বিশ্লেষণ করে বৌদ্ধ মন্দির কেন্দ্রিক বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, বৌদ্ধ পূর্ণিমাকে নিয়ে কোন গোষ্ঠী বা মহল যাতে কোন ধরণের গুজব বা বিভ্রান্তি ছড়াতে না পারে সেজন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসমূহ সার্বক্ষণিক মনিটর করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন এবং গোয়েন্দা নজরদারী বাড়ানোর জন্য সকল পুলিশ ইউনিটকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি বৌদ্ধ মন্দির পরিদর্শনের জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদেরকে আমরা নির্দেশ দিয়েছি।
পুলিশ প্রধান বৌদ্ধ পূর্ণিমাকে সামনে রেখে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্ট স্থাপন এবং ব্লক রেইডের ব্যবস্থা করার জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।
কমিউনিটি পুুলিশিং সদস্য, স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী এবং বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের সহায়তা নিয়ে বৌদ্ধ মন্দির সমূহে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইউনিট সমূহকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
নিরাপত্তার স্বার্থে ব্যাগ, পার্স, ভ্যানিটি ব্যাগ ইত্যাদি সাথে না আনার জন্য পূণ্যার্থীদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। বৌদ্ধ মন্দিরসমূহে সিসিটিভি ক্যামেরা ও অগ্নিনির্বাপন যন্ত্র স্থাপন এবং স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগের জন্য বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতৃবৃন্দকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
আইজিপি আশা প্রকাশ করে বলেন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রতিবারের মত এবারও দেশব্যাপী শান্তিপূর্ণভাবে বৌদ্ধ পূর্ণিমা উদ্যাপিত হবে।
সভায় উপস্থিত বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ বৌদ্ধ পূর্ণিমাকে কেন্দ্র করে গৃহীত সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। তারা পুলিশ প্রধানকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
সভায় অতিরিক্ত আইজিপি (এডমিন এন্ড অপারেশন্স ) ড. মোঃ মইনুর রহমান চৌধুরী, র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া, এটিইউ’র অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আবুল কাশেম, স্পেশাল ব্রাঞ্চের অতিরিক্ত আইজিপি মীর শহীদুল ইসলাম, সংশ্লিষ্ট রেঞ্জের ডিআইজি, পুলিশ কমিশনার ও জেলার পুলিশ সুপারগণ, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি, ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহারের মহাসচিব পি. আর. বড়ুয়া, বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের নির্বাহী সভাপতি অশোক বড়ুয়া, বৌদ্ধ কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি এবং সংরক্ষিত মহিলা আসন ৯ এর সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা, বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের সহসভাপতি প্রমথ বড়ুয়া, বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতি ঢাকা অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক স্বপন বড়ুয়া চৌধুরী, বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের জেনারেল সেক্রেটারি ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয়, বাংলাদেশ বৌদ্ধ ধর্ম কল্যাণ ট্রাস্টের বোর্ড অব ট্রাস্টি ডালিম কুমার বড়ুয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, আগামী ১৮ মে দেশের প্রায় আড়াই হাজার বৌদ্ধ মন্দিরে বৌদ্ধ পূর্ণিমা উদ্যাপিত হবে।
সূত্রঃPHQ MEDIA, 14 MAY 2019.