আমি জিমি।সাতক্ষীরা জেলা বিএমএর সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাতক্ষীরা জেলার অবসর প্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা:এবাদুল্লাহ আমার পিতা।শহরের লোকাল বাসিন্দা আমরা।  আমার পিতা গত ৪ জুলাই করোনা আক্রান্ত হয়ে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটালে ১২ দিন চিকিৎসা নিয়ে বর্তমানে শহরের নিজ বাসভবনে হোম চিকিৎাসাধীন আছেন। তিনি পুরোপুরি সুস্থ হন নি এখনো।

আমার পিতার করোনা আক্রান্তদের খবর শহরে ছড়িয়ে পড়লে যারা আপন জন বা শুভাকাঙ্ক্ষীরা প্রতিদিন ২০-২২ জন মোবাইল করে আব্বার শারীরিক অবস্থার খোজ খবর নিতেন আমার কাছ থেকে।কিন্তু এলাকার  কিছু বেশি সচেতন মানুষ আমাদের বাড়ির কাজের বুয়াকেও তারা রাস্তায় চলাফেরা করার সময় কটু কথা বলতো। কেউ বলতো আমাদের মাঠ দিয়ে হাটবেনা, কেউ বলতো আমাদের পুকুরে কাপড় ধুতে আসবেনা আবার বাড়ির সামনে ১ টি বাড়ির পর যে বাড়ি সেই বাড়ির ছোট ছেলে থানায় ফোন দিয়ে বলে ডাক্তারের বাড়ি এখনো লক ডাউন করা হইনি কেনো??  ইত্যাদি ইত্যাদি। আবার কোনো কোনো দোকান দার আমাদের কাজের বুয়াকে বলতো,,,, তুমি করোনা আক্রান্ত দের বাড়ি কাজ করো,, তুমি যেনো আমার দোকানে আসবেনা। আবার জিমির শ্বাশুর বাড়ির লোক জিমিদের বাড়ি তে আসে বলে জিমির শ্বশুর বাড়ির আশেপাশের লোক জিমির শ্বশুর বাড়ীর লোকজন কে মানুষিক যন্ত্রনার মধ্যে ফেলে বসবাস করাচ্ছে।

সব মিলাই করোনা হলে মনে হচ্ছে সেই ব্যক্তিই দুনিয়ার সব চাইতে অভাগা। কিন্তু আপনি  যে কোনো দিন করোনা আক্রান্ত হবেন না এটা কি জোর গলায় গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারবেন??? মোটেও বলতে পারবেন না।

আমি আজকের একটা ঘটনা বলি আজ আমার মোটরসাইকেলের পিছনে এক যুবক বসে ছিলো, তাকে ডেকে কানেকানে আর এক যুবক বলিলো,,,এই তুই জিমির সাথে ঘুরছিস কেনো?

জিমির আব্বার না করোনা হইছে তো!!

এসময় আমার পিছে থাকা যুবক তাকে জোরে সোরে চেচিয়ে বলিলো,,, রাত ২ টোর সময় পেট ব্যাথা করলে তো সেই জিমিদের বাড়ি গিয়ে গেটে ঘা দিয়ে ডাকবি আর বলবি ডাক্তার চাচা একটু ওঠেন। আমার ছেলে/বৌ/মা পেটব্যাথায় ছটফট করছে।
সে আরো বল্লো তাকে রাত ২-৩ টার দিকে সাতক্ষীরা শহরের কোন ডাক্তার বাড়ি গেলে গেট তো খোলেন না আর রোগী দেখার তো প্রশ্নই উঠেনা।

তখন সেই যুবক আর কোনো কথা খুজে না পেয়ে বলিলো,,, আল্লাহ করোনা দিলে হবে আর না দিলে হবেনা।সে আরো বলিলো কেউ কাউকে অবজ্ঞা বা ঘৃনা করার দরকার নেই। আজ আমি আক্রান্ত কাল তো তুমিও আক্রান্ত হতে পারো।

সব মিলিয়ে বলতে চাই করোনা আক্রান্ত পরিবার তো আপনাদের কাছে কোনো টাকা চায়না, আপনাকে কোনো ভাবেই বিরক্ত করেনা। কারন করোনা আক্রান্ত পরিবারের লোক সব সময় থাকে তাদের নিজের জালায়।হসপিটালে পিতা ভর্ত্তি। কখন কোন ইনজেকশান আনতে বলে ডাক্তার, সকালের নাস্তা নিয়ে হসপিটালে যেতে হবে, দুপুরের খাবার নিয়ে যেতে হবে হসপিটালে আবার আইসিইউ’র রুমের সামনে ওয়েটিং রুমের মেঝেতে বিনা মশারিতে ঘুমাতে হবে আবার সকালে উঠতে হবে। এভাবেই বিপর্যয়ের মধ্যে থাকে করোনা আক্রান্ত দের পরিবারের সদস্যগণ। তাই আসুন আমরা করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি ও তার পরিবার কে সাহায্য করতে না পারলেও তাদের এই দুরবস্থার মধ্যে ক্ষতির মুখে ফেলে না দেয়। 

তবে আমি ও আমার পরিবার আন্তরিক ভাবে কৃতজ্ঞতা জানাই সাতক্ষীরা জেলার সাবেক সফল জেলা প্রশাসক, সাবেক বিভাগীয় কমিশনার খুলনা, সাবেক সিনিয়য় সচিব নৌপরিবহন  মন্ত্রনায় ও এসডিএফ চেয়ারম্যান আবদুস সামাদ স্যারের প্রতি, কৃতজ্ঞা জানাই  সাতক্ষীরা জেলার সাবেক সফল জেলা প্রশাসক ও জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের যুগ্ম-সচিব আবুল কাশেম মো: মহিউদ্দিন  স্যারের প্রতি, কৃতজ্ঞা জানাই সাবেক সফল জেলা প্রশাসক সাতক্ষীরা ও যুগ্ম সচিব শিক্ষা মন্ত্রনায় নাজমুল আহসান স্যারের প্রতি,কৃতজ্ঞা জানাই সাতক্ষীরা জেলা প্রশামক এসএম মোস্তফা কামাল স্যারের প্রতি,কৃতজ্ঞা জানাই সাতক্ষীরার মানবিক পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম(বার) স্যারের প্রতি, কৃতজ্ঞতা জানাই গাজীপুর  মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি মোহাম্মদ ইলতুৎ মিশ স্যারের প্রতি, কৃৃতজ্ঞতা  জানাই আবু নাসের হসপিটালের সাবেক তত্বাবধায়ক শ্রদ্ধেয় ফজলু ভাইয়ের প্রতি,   কৃতজ্ঞা জানাই সাতক্ষীরা চেম্বার সভাপতি নাসিম ফারুক খান মিঠু ভাইয়া+ ভাবীর প্রতি, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু ভাইর প্রতি, কৃৃৃৃৃৃৃতজ্ঞতা জানাই সাতক্ষীরা সদর উপজেলার জনবান্ধব নির্বাহী অফিসার দেবাষীষ স্যারের প্রতি যিনি প্রতি নিয়ত খোজ খবর নিতেন আমার বাবার চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে।কৃৃতজ্ঞতা জানাই সাতক্ষীরার সাবেক সিভিল সার্জন ডা.এসজেড আতিক কাকুর প্রতি,কৃৃতজ্ঞতা জানাই জেলা পরিবার পরিকল্পনার ডেপুটি ডাইরেক্টর রওশন আরা জামান ম্যাডামের প্রতি,  কৃৃতজ্ঞতা  জানাই খাগড়াছড়ি সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেহেদী স্যারের প্রতি, কৃতজ্ঞা জানাই  সাতক্ষীরা আশাশুনি উপজেলার হিসার রক্ষক কর্মকর্তা তাজুল ভাইয়ের প্রতি,  ডিবির ওসি মহিদুল ভাই,তালা থানার পরিদর্শক তদন্ত সেকেন্দার আলী ভাই, বানিয়াচং থানার পরিদর্শক তদন্ত শাহরিয়ার ভাই, ডিএসপির পরিদর্শক মিজান ভাইর প্রতি।

আরো কৃৃতজ্ঞতা জানাই সদর থানার পরিদর্শক তদন্ত আবুল কালাম আজাদ ভাই ,  ঝিনাইদহ ডিবির পরিদর্শক নজরুল ভাই ,সাতক্ষীরা ডিবির পরিদর্শক বাবুল আক্তার ভাইয়ের প্রতি  যারা প্রায় প্রায় দুর বসে আমার আব্বার সুস্থ্যতার খোজ নিয়েছেন। কৃৃতজ্ঞতা জানাই জানাই সাতক্ষীরা জেলার কিংবদন্তী শিল্পী আবু আফ্ফান রোজ বাবু মামা +মামী ও সংঙ্গীত শিক্ষক শামীমা পারভীন রত্না আপার প্রতি। যারা ফেইজবুকে প্রতি নিয়ত আমার বাবার জন্য দোয়া চেয়ে কমেন্ট করেছেন। 

এছাড়া আরো কৃৃতজ্ঞতা  জানাই প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ কাকুর প্রতি, কৃতজ্ঞতা জানাই মাছরাঙা টিভির জেলা করেসপন্পেন্ট মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জল ভাইর প্রতি,যমুনা টিভির প্রতিবেদক রাজিব আহসানের প্রতি,কৃৃতজ্ঞতা জানাই সাংবাদিক ইব্রাহিম,সাংবাদিক রহিম, সাংবাদিক মধুর প্রতি, কৃৃতজ্ঞতা জানাই জেলা মহিলা আ’লীগের সাধারন সম্পাদক জোৎন্সা আপা ও রুবী ভাবীর প্রতি, কৃতজ্ঞতা জানাই  বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মাহমুদ হাসান লাকী মামার প্রতি তিনি সেই লন্ডন থেকে ভিডিও কলের মাধ্যমে আমার আব্বার সাথে কথা বলতেন ও খোজ খবর নিতেন, কৃৃতজ্ঞতা জানাই অতিরিক্ত পিপি তামিম আহমেদ সোহাগ ভাইর প্রতি তিনি ৩-৪ দিন পরপর ফোন করে আব্বার খোজ নিতেন, কৃৃতজ্ঞতা জানাই পত্রদুত সম্পাদক লাইলা পারভীন সেজুতি খালার প্রতি তিনি প্রতি নিয়ত আমার বাবার চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে খোজ নিয়েছেন। কৃৃতজ্ঞতা জানাই এডভোকেট  সাহেদের প্রতি, সে প্রায় প্রায় আমার বাবার সুস্থ্যতার খোজ-খবর নিতেন।  আরো কৃৃতজ্ঞতা জানাই তাঁদের প্রতি যাঁরা কষ্ট করে প্রতি নিযত আমার বাবার জন্য মসজিদের ঈমাম সাহেবের কাছে দোয়া চেযেছেন। 

লেখক : মো: নিযাজ ওয়াহিদ জিমি, সিটিজেন জার্নালিস্ট, সাতক্ষীরা ও প্রকাশক আপডেট সাতক্ষীরা ডটকম।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন