স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘মোংলা বন্দরের পশুর নদীতে বিভিন্ন আমদানি পণ্য খোয়া যাচ্ছে। কোস্ট গার্ড ও নৌপুলিশ এগুলো দেখবে। কাউকেই আমরা এখানে আর ডাকাতিবৃত্তি করতে দিব না। হোক নদী, উপকূল কিংবা বন-জঙ্গল, কোথাও ডাকাতি করতে দিব না।’

সোমবার (০১ নভেম্বর) দুপুরের দিকে বাগেরহাটের রামপাল উপজেলা পরিষদ চত্বরে ডাকাতমুক্ত সুন্দরবন দিবসের তৃতীয় বর্ষপূর্তি ও আত্মসমর্পণকৃত দস্যুদের পুনর্বাসন সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘আমাদের ওয়াদা ধর্ষণ আর খুন ছাড়া আর যেসব মামলা যাদের (আত্মসমর্পণকৃত সাবেক ডাকাত) নামে আছে সেগুলো মামলা আমরা দেখব। আমি এখানে (রামপাল) এসে শুনতে পেয়েছি, তবে আমি বিশ্বাস করি না, আপনারা যারা আত্মসমর্পণ করেছেন তারা আবার একটু অন্যদিকে চিন্তা ভাবনা করছেন, দয়া করে সেটা করবেন না। কষ্ট হচ্ছে, কষ্ট করছেন শুনেছি। আপনাদের জীবিকার জন্য সরকার পাশে আছে। আমরা আপনাদের ভুলিনি। যদি কেউ আবার বিপথে যায়, তার জন্য কিন্তু আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী বসে থাকবে না।’

সনাতন ধর্মাম্বলম্বীদের ওপর হামলার প্রসঙ্গ টেনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন ছিল এদেশ হবে একটি অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ। এই জায়গায়ও হিন্দুদের দুর্গাপূজার সময়ে গুজব তৈরি করে একটি বিশেষ অবস্থার সৃষ্টি করতে চেয়েছিল যারা, সেটাও প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় তাদের সেই আশাও পূরণ হয়নি। যারা চিন্তা ও মনে করেন এদেশে অস্থিরতা বৃদ্ধি করে আপনারা সফল হবেন সেই আশায় গুড়েবালি। এদেশকে নিয়ে কেউকে ছিনিমিনি খেলতে দিব না। আমরা এ শান্তির দেশে কেউকে কোনভাবেই অরাজকতা করতে সৃষ্টি করতে দিব না।’

র‍্যাব মহাপরিচালক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আলো মামুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ, বর্ডার গার্ডের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম, খুলনা সিটি মেয়র আলহাজ তালুকদার আব্দুল খালেক, খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সালাউদ্দিন, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শামসুল হক টুকু, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য পীর ফজলুর রহমান, সংসদ সদস্য মো. হাবিবুর রহমান, সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন,খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো:ইসমাইল হোসেন এনডিসি, খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি ড.খ:মহিদ উদ্দিিন বিপিএম-বার, র‍্যাব-৬ এর অধিনায়ক লে.কর্ণেল  মূহামমদ মোসতাক আহমদ, বি এস পি, পি এস সি,বাগেরহাটের এসপি কেএম আরিফুল হক,সাতক্ষীরার এসপি মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম-বার, খুলনা  এসপি মোহাম্মদ মাহাবুব হাসান  সহ বাগেরহাট জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল আত্মসমর্পণকৃত ৩২৮ জন সাবেক ডাকাতের মধ্যে ১০২ জনকে ঘর, ৯০ জনকে মুদি দোকান, ১২ জনকে মাছ ধরার জাল ও নৌকা, ৮ জনকে ইঞ্জিনচালিত নৌকা এবং ২২৮ জনকে গরু-বাছুর পুনর্বাসন সহায়তা প্রদান করেছেন।

ডাকাতমুক্ত সুন্দরবন দিবসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাত দিয়ে পুনর্বাসন সহায়তা নিতে আসা সাবেক বাহিনীপ্রধান মানজুর বলেন, ‘ডাকাতি ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারায় সরকারের কাছে সারা জীবন কৃতজ্ঞত থাকব। আজ আমরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে র‍্যাবের দেওয়া ঘর, দোকান, গরু ও নৌকা পেয়েছি, আমাদের আর কিছু চাওয়ার নাই।’

হান্নান বাহিনীর সদস্য জলিল মুন্সী বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, র‍্যাবসহ সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার জন্য।’

মাস্টার বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড সোহাগ আকন বলেন, ‘আমরাই প্রথম আত্মসমর্পণ করি। এলাকায় এখন সবার সঙ্গে মিলেমিশে আছি। আমাদের দাবি, মামলাগুলো নিষ্পতি করে দিবেন, অনুদান যা পাই তা মামলায় খরচ হয়ে যায়।’





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন