তাঁর দু’চোখ ভরা স্বপ্ন। সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ রচনায় স্বপ্নকে স্বার্থক করতেই পরিশ্রম, নিষ্ঠা আর মেধাকে পুঁজি করে এগিয়ে গেছেন। সাফল্যের জন্য সময়

আর ধৈর্য্যের সমন্বয়ে করেছেন অপেক্ষা। অবশেষে সাফল্য হাতের মুঠোয়। এবার দেশসেরার স্বীকৃতি।

মৎস্য উৎপাদনে চলতি বছর স্বর্ণ পদক অর্জন করেছে তার নেতৃত্বাধীন সাভানা ফার্ম প্রোডাক্টস। প্রতিষ্ঠানটির স্বত্তাধিকারী হিসেবে এই স্বর্ণ পদক গ্রহণ করেছেন ফারহীন রিশতা বিনতে বেনজীর। রোববার (২৪ জুলাই) প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক’র হাত থেকে তিনি এই স্বর্ণ পদক গ্রহণ করেন।

এই বছর মৎস্য খাতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ২১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মাঝে জাতীয় মৎস্য পদক তুলে দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন।

ফারহীন রিশতা বিনতে বেনজীর পুলিশপ্রধান ড.বেনজীর আহমেদ ও পুনাক সভানেত্রী জীশান মীর্জার জ্যেষ্ঠ সন্তান।

উত্তম মাছ চাষ অনুশীলন ও খামার যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে মৎস্য উৎপাদন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে অনন্য অবদান রাখায় সরকার ফারহীনের খামারটিকে জাতীয় মৎস্য পদক ২০২২ এ স্বর্ণপদক ও নগদ ৫০ হাজার টাকা প্রদান করে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গোপালগঞ্জ জেলা সদরের সাহাপুর ইউনিয়নের বৈরাগী টোল এলাকায় সাভানা ফার্ম প্রোডাক্টস’র পথচলা শুরু হয় ২০১২ সালে। এই সমন্বিত খামারটি প্রায় ২০০ বিঘা জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত।

এই খামারটির অন্যতম বিশেষত্ব হচ্ছে বটমক্লিন রেসওয়ে পদ্ধতিতে মাছ চাষ। গবেষণা ও বিজ্ঞানের প্রভাবে মাছ চাষের আধুনিক এই পদ্ধতিতে ব্যাপক সাফল্য দেখিয়েছে এই খামার। আধুনিক টেকসই এই পদ্ধতিতে শতাংশে ১ টন পর্যন্ত মাছ উৎপাদন সম্ভব। এখানে বৃত্তাকার বিশাল পাকা পুকুরে মাছ ছাড়ার পর যন্ত্রের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে কৃত্রিম স্রোত।

নিয়ম মেনে দেওয়া হয় পরিমাণমতো অক্সিজেন আর খাবার। আধুনিক যন্ত্রপাতিতেও হয় মাছের পরিচর্যা। অল্প জায়গায় এই পদ্ধতিতে উৎপাদিত শিং, পাবদা, গুলশা , কার্প এবং শোল মাছ বেশ সুস্বাদুও।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০২১ সালে ফারহীন রিশতা বিনতে বেনজীর তার খামারে ৫.২৬ হেক্টর জলায়তন বিশিষ্ট ১৫টি পুকুরে রুই জাতীয় মাছের মিশ্রচাষ, পাবদা ও অন্যান্য মাছের চাষ করে ১৫৪.৩৮ মে.টন মাছ উৎপাদন করেন। ১৩টি পুকুরে রুই জাতীয় মাছের মিশ্রচাষ এবং ২টি পুকুরে আধুনিক বটমক্লিন রেসওয়ে পদ্ধতিতে করেছেন পাবদা ও অন্যান্য মাছের চাষ।

ওই বছরে খামারটিতে হেক্টর প্রতি গড়ে ২৯.৩৫ মে.টন মাছ উৎপাদিত হয়। এর মধ্যে রুই জাতীয় মাছের হেক্টর প্রতি উৎপাদন ১৮.০১ মে. টন, যা দেশের মৎস্যচাষিদের জন্য অনুসরণীয়। বছরে খামারটিতে ১৮৪.১০ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করে বছরান্তে ৩৪০.৬৩ লক্ষ টাকা আয় হয়। খামারটিতে মৎস্য বিষয়ে ডিগ্রিপ্রাপ্ত ১ জনসহ ২০ জন জনবলের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।

স্বর্ণ পদকপ্রাপ্ত সাভানা ফার্ম প্রোডাক্টস’র স্বত্তাধিকারী ফারহীন রিশতা বিনতে বেনজীর মনে করেন, যে কোন স্বীকৃতি ভালো কাজে উৎসাহ জোগায়।

তিনি বলেন, ‘এই পদক আমাদের জন্য অনেক গর্বের। এমন অর্জনে সত্যিই আমি অনেক আনন্দিত।’





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন