প্রশাসনের সর্বোচ্চ পদ মন্ত্রিপরিষদ সচিব পদে দায়িত্ব পেয়েছেন তাঁর সন্তান কবির বিন আনোয়ার। স্বভাবতই সন্তানের চাকরি জীবনের শ্রেষ্ঠ সাফল্যে আবেগ আপ্লুত বীর মুক্তিযোদ্ধা বাবা আনোয়ার হোসেন রতু। সন্তানের সাফল্যে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি। চোখের কোণে চিকচিক করে আনন্দাশ্রু।
রোববার (১১ ডিসেম্বর) সকাল ১০ টায় পুত্রবধূ মুঠোফোনে তাকে প্রথম জানিয়েছেন গৌরবময় এই সুসংবাদ। তখনই মহান আল্লাহ’র কাছে শুকরিয়া আদায় করে ৮৭ বছর বয়সী আনোয়ার হোসেন রতু উচ্চারণ করেছেন-‘আলহামদুলিল্লাহ’। কথা হয়েছে নিজের সুসন্তান কবির বিন আনোয়ারের সঙ্গে। আনন্দানুভূতি ভাগাভাগি করেছেন বাবা-পুত্র।
রোববার (১১ ডিসেম্বর) রাত সোয়া ৯ টার দিকে কালের আলোর মোবাইলে আলাপ হয় কবির বিন আনোয়ার(অপুর) গর্বিত এই বাবা’র সঙ্গে। সন্তানের সাফল্যে খুবই খুশি তিনি। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি।
২০১৩ সালের ১২ জানুয়ারি কবির বিন আনোয়ারের মমতাময়ী মা সৈয়দা ইসাবেলা চলে যান না ফেরার দেশে। তিনি ছিলেন ঐতিহাসিক মুক্তি সংগ্রামের অন্যতম দক্ষ সংগঠক। পেশাগত জীবনে করেছেন শিক্ষকতা, লিখেছেন ২২ টি’র মতোন বই। কবির বিন আনোয়ারের ডাক নাম অপু। বাঁধভাঙা আনন্দের দিনে জীবিত নেই মা। সেই শুন্যতাই যেন অনুভব করছিলেন আনোয়ার হোসেন রতু।
ছেলেকে মানুষের মতো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে, কল্যাণের পথে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরে এবং সর্বোচ্চ এমন সফলতা দেখার পর হৃদয়-মনে যেন অন্য রকম প্রশান্তিই অনুভব করছেন তিনি। তবুও অতল গভীর শুন্যতায় বলতে থাকেন- ‘আজ অপুর মা বেঁচে থাকলে অনেক খুশি হতেন। আজ অপু সিরাজগঞ্জের মুখ উজ্জ্বল করেছে’ বলতেই গলা ধরে আসে একাত্তরের রণাঙ্গনের এই বীর সেনানীর।
মুহুর্তেই নিজেকে স্বাভাবিক করে হৃদয়ভরা উচ্ছ্বাসে বলেন, ‘যোগ্য সন্তান হিসেবেই অপুকে গড়ে তোলা হয়েছে। সততা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে দেশকে উজ্জ্বল, আলোকময় করবে অপু।’
কবির বিন আনোয়ারের বাবা আনোয়ার হোসেন রতু পেশায় একজন ব্যবসায়ী হওয়া সত্বেও পেশাগত জীবনের পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন আর্থ সামাজিক উন্নয়ন কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সেই শৈশবেই মুক্তিযোদ্ধা পরিবার থেকেই স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তিকে বুকে লালন করার মন্ত্র শিখেন কবির বিন আনোয়ার। ছাত্রজীবনে সক্রিয় ছিলেন ছাত্রলীগের রাজনীতিতে।
নতুন মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পারিবারিক সূত্র জানায়, ছেলে কবির বিন আনোয়ারের সফলতার জন্য প্রতিদিনই নামাজ পড়ে আল্লাহ’র কাছে প্রার্থনা করেছেন বাবা। নিজ সন্তানের এমন গুরুদায়িত্বে তাঁর বাবার আনন্দ-অনুভূতি কোন শব্দ বা বাক্যে প্রকাশ করা সত্যিই কঠিন’। তিনি তাঁর সন্তানের সাফল্যময় দীর্ঘ জীবন কামনা করেছেন।