দেশরত্ন শেখ হাসিনা বাঙালি জাতির আর্শীবাদ : সাবেক ছাত্রলীগ নেতা তারিক ইসলাম

দ্বারা zime
০ মন্তব্য 294 দর্শন

 

দেশরত্ন শেখ হাসিনা বাঙালি জাতির আর্শীবাদ”

——–আজ বাঙালির বিশ্বজয়ের স্বপ্নসারথী বঙ্গবন্ধু তনয়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিনে প্রথমেই জানাই হাজার কোটি সালাম, শ্রদ্ধা, অভিনন্দন ও আন্তরিক শুভেচ্ছা। আজকের এই শুভ দিনে কায়মনে দোয়া সুস্থতার সাথে শত বছর বাঁচুন, আপনি সুস্থ থাকলে পুরা বাংগালী জাতি সুস্থ থাকবে।মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে একটু লেখার চেষ্টা……

“ সাবাস দেশরত্ন শেখ হাসিনা! পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়।জ্বলে পুড়ে মরে ছারখার,তবু মাথা নোয়াবার নয় ”-

কবি সুকান্ত লিখেছিলেন সাবাস বাংলাদেশ, কিন্তু আজ বাস্তবতা সাবাস দেশরত্ন শেখ হাসিনা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ শুধু একটি নাম কিংবা নিছক একজন দলীয় প্রধান নন। তিনি এখন শুধু বঙ্গবন্ধু কন্যা নন, তিনি ১৮ কোটি মানুষের একমাত্র ভরসার স্থল, বিশ্বনন্দিত নেতা, জাতির প্রেরণার উৎস ও বাঙালি জাতির শেষ আশা-যিনি এক ধ্বংস স্তূপ থেকে গড়েছেন রাজপ্রাসাদ, প্রমাণ করেছেন নিজেকে বারবার। বংগবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা লড়াই-সংগ্রাম-প্রতিরোধের এক অনন্য নাম। পুরো পরিবার নেই, অকৃতজ্ঞ আর্মি খুনীদের লোভের কাছে হারিয়ে গেছে দেশের স্থপতি নেতা ও পিতা, দলের কাণ্ডারীরা লুকিয়ে বা কেউ কেউ পরিবর্তিত, তৃণমূলের নেতাকর্মীরা নেতাহীন অসহায়, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ যেন আর নেই, আর কোনো দিন জাগবে না! সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের শাসনামলে ইনডেমনিটি বহাল থাকলো। স্বাধীনতার স্থপতিকে হত্যাকারীরা রাজনীতি করার সুযোগ পেলো, শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলাও যেন তখন অপরাধ এমন স্বাধীনতা ও মানবতা বিরোধী অগণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি হলো। বাংলাদেশ যেন আর কোনোকালে বন্দুক আর উর্দির ছায়া থেকে মুক্তি পাবে না চারদিকে এমন শঙ্কা। এমন একটি গুমোট দম বন্ধ হওয়া পরিবেশ থেকে, ছাইয়ের স্তূপ থেকে আল্লাহর রহমতে ফিনিক্স পাখির মত আওয়ামী লীগ ও তাঁর সহস্র নেতাকর্মীদের প্রাণ ফিরিয়ে আনলেন যে মানবী-তিনিই বংগবন্ধু তনয়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা।

যে স্বপ্নে আমাদের পূর্বসূরিরা তাদের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশের জন্ম দিয়ে গেছেন, আজ সেই স্বপ্নের বাস্তবায়নে অগ্রসেনানী জননেত্রী শেখ হাসিনা। যে বাংলাদেশ যাত্রা শুরু করেছিল শূন্য হাতে, যে বাংলাদেশ ছিল একসময় অবহেলিত, বিপন্ন ও যুদ্ধবিধ্বস্ত, যে বাংলাদেশ বৈদেশিক সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল ছিল এবং শতকরা ৮০ শতাংশ মানুষ দরিদ্রসীমার নিচে বাস করত, যে বাংলাদেশ এক সময় পরিচিতি সমস্যায় ভূগতো এবং পশ্চিমা-বিশ্ব তলাবিহীন ঝুড়ি বলে উপহাস করতো, যে বাংলাদেশ দূর্নীতিতে পরপর ৫ বার চ্যাম্পিয়ন হয় & মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভূলন্ঠিত করে জংগিবাদ, মৌলবাদের রাজস্ব কায়েম করা হয়েছিল, ধ্বংসস্তূপের উপর দাঁড়িয়ে যে দেশটি যাত্রা শুরু করেছিল- অনেক ঘাত-প্রতিঘাত ও চড়াই উৎরাই পেরিয়ে সেই বিপন্ন ও দূর্যোগকবলিত বাংলাদেশ এখন বিশ্বের চোখে এক বিস্ময়, উন্নয়নের রোল মডেল।বাংলাদেশের এই বিস্ময়কর উত্থান কেবল সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার ক্লান্তিহীন পরিশ্রম, প্রবল দেশপ্রেম, সততা-নিষ্ঠা, সাহসিকতা, দূরদর্শী, দক্ষ ও বিচক্ষণতার সঙ্গে দেশ পরিচালনার কারণেই। যে সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেখেছিলেন, যে অর্থনৈতিক মুক্তি চেয়েছিলেন বাঙালি জাতির জন্য, যে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সমাজ গড়তে চেয়েছিলেন সকলের জন্য, তারই সুযোগ্য কন্যা সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে সে পথেই তরতর করে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

পদ্মা সেতু থেকে বংগবন্ধু টানেল, মেট্রোরেল থেকে মহাকাশে বংগবন্ধু স্যাটেলাইট পাঠান, বিদ্যুতের ঘাটতি দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে পরিণত করা, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ, প্রবৃদ্ধি থেকে মাথাপিছু আয়, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তর, বিশ্বের কাছে পরিচিত দূর্ভিক্ষের দেশ এখন উন্নয়নে বিশ্বের বিস্ময়-এসব কিছুই যার ক্যারেশম্যাটিক নেতৃত্বে অর্জন, তিনি দূরদর্শী, বিচক্ষণ এক বিশ্বনেতা, বংগবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জননেত্রী শেখ হাসিনা সেই নেত্রী যিনি মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটও পাঠান, আবার একেবারে সমাজের সবচেয়ে অবহেলিত হতদরিদ্র, অসহায়, বয়স্ক নারী-পুরুষ, বিধবা, স্বামী পরিত্যক্ত, প্রতিবন্ধীদের মাসিক ভাতার ব্যবস্থাও করেন। বর্তমান প্রজন্মের কাছে বংগবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা এক সাহসী রাজনীতিকের নাম, যার সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনায় ভবিষ্যতের বাংলাদেশ– উন্নয়নের ধারায় দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। উন্নত ভবিষ্যৎ নির্মাণের জন্য তিনি ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ ঘোষণা করেছেন। তিনি শুধু বর্তমান নিয়েই ভাবেন না, ভবিষ্যৎও তার ভাবনায় থাকে। এখানেই জননেত্রী শেখ হাসিনা অন্যদের থেকে আলাদা। মাত্র এক যুগে তিনি যেভাবে বাংলাদেশ কে যেভাবে বদলে দিয়েছেন, তাকে বলা হচ্ছে দ্যা বাংলাদেশ মডেল। নি:সন্দেহে বলতে পারি:

“Hon’ble Prime Minister Sheikh Hasina is by all accounts the uncrowned Queen of developing Bangladesh. Bangabandhu gave us independence & HPM Sheikh Hasina is giving us economic growth and all out development! Once Bangladesh was neglected, impoverished; The Western world used to ridicule Bangladesh as bottomless basket. But Kissinger’s bottomless basket is now filled to the brim. All our successes are but feathers in HPM Sheikh Hasina’s cap”.

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা এখন শুধু একজন ব্যক্তি নয়, একটি আদর্শের নাম, একটি চেতনার নাম, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের একটি অনুভূতির নাম। দেশরত্ন শেখ হাসিনা, যার আলোয় নতুন রূপে জ্বলে ওঠার প্রেরণা পেয়েছে বাঙালি জাতি, তিনি- আপামর বাঙালির আবেগের নাম। অন্ধকার রাতে তুমুল আলোর ঝলক তিনি, তার হাত ধরেই নতুন করে ফিরে এসেছে বাংলাদেশের প্রাণ। আজকের এই আধুনিক বাংলাদেশ পুরোটাই শেখ হাসিনার অবদান। একজন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আকাশ সমান যার অর্জন। মৃত্যু কূপ থেকে বাঙালির ঘুরে দাঁড়াবার প্রেরণার নাম দেশরত্ন শেখ হাসিনা। আজকের আলোকিত ভোরের নাম দেশরত্ন শেখ হাসিনা। ধার্মিকতা ও অসাম্প্রদায়িকতার এক অপূর্ব সংশ্লেষের নাম দেশরত্ন শেখ হাসিনা। একটি সংগ্রামী উপাখ্যানের নাম দেশরত্ন শেখ হাসিনা। ইষ্পাত কঠিন দৃঢ়তা, হার না মানা এক যোদ্ধা ও মহামানবীর নাম দেশরত্ন শেখ হাসিনা। যুদ্ধাপরাধের বিচার ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় পথ চলার নাম দেশরত্ন শেখ হাসিনা। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, উন্নয়নের জয়জয়কার এবং আজকের ঘুরে দাঁড়ানো বাংলাদেশ ও বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে চলার নাম দেশরত্ন শেখ হাসিনা। আজ সারা বিশ্ব অবাক বিস্ময়ে যাঁর দিকে তাঁকিয়ে থাকেন, তিনি দেশরত্ন শেখ হাসিনা। একজন ম্যাজিক্যাল লেডি-বারবার মৃত্যুকে খুব কাছে থেকে দেখা, বাবা-মা, ভাই, আত্মীয় স্বজনের মৃত্যুর শোক নিয়ে বেঁচে থাকা, জেল জুলুম সহ্য করা, অগণিত নেতাকর্মীর দুঃখ কষ্ট ও বিপদে কাছে থাকা নেত্রীর নাম দেশরত্ন শেখ হাসিনা। তাই সন্দেহাতীতভাবে বলতে পারি….

“Hon’ble Prime Minister Sheikh Hasina’s life is full of work and variety. Now it is not a name, it is an institution. Work is worship is her main principle of life. HPM Sheikh Hasina is the cementing point of Bengali Nation. HPM is now considered one of the most popular and successful leaders in world politics & she has become a global icon as she proved that with right intent a country can prosper. Under the visionary, self-confident and courageous leadership of Prime Minister Sheikh Hasina, Bangladesh is now globally considered a development miracle”.

বঙ্গবন্ধু যেমন শেখ মুজিব থেকে বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধু থেকে জাতির পিতা, জাতির পিতা থেকে বিশ্ব নেতাতে ভূষিত হয়েছেন ঠিক তেমনি তারই ধারাবাহিকতায় তাঁরই ঔরসজাত সন্তান, তাঁরই রক্ত শেখ হাসিনার ধমনীতে প্রবাহিত হচ্ছে বলেই তিনিও তাঁর বাবার মতো জনতার নেত্রী থেকে জননেত্রী, জননেত্রী থেকে আজকে বিশ্ব দাবিয়ে বেড়িয়ে বিশ্ব নেত্রীতে রূপান্তরিত হয়েছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি মহান জাতির পিতার সন্তান-এটাই তাঁর বড় শক্তি । ছোট বেলা থেকেই দেখেছেন পিতা বঙ্গবন্ধু মুজিব এদেশের মানুষের মুক্তির জন্য কত সংগ্রাম, কত ত্যাগ স্বীকার করেছেন। দেশের প্রতি, দেশের মানুষের এই ভালোবাসা তিনি পিতার কাছ থেকেই পেয়েছেন। জন্মের পর থেকেই তাঁর বাবার রাজনীতি প্রত্যক্ষভাবে দেখে বড় হয়েছেন, বাবার আন্দোলন সংগ্রাম দেখতে দেখতে তিনি বেড়ে উঠেছেন। বাঙালির জন্য উৎসর্গ করা বঙ্গবন্ধুর জীবনের মহীরুহকে ধারণ করে তিনি পিতার মহতী চেতনা আত্মস্থ করেছেন জনগণের কল্যাণে, দেশের উন্নয়নে। এক কথায়-নীতি ও আদর্শের প্রশ্নে পিতার মতোই অবিচল, দৃঢ় ও সাহসী, তাই বঙ্গবন্ধু যুগের আওয়ামী লীগের ইতিহাস যেমন বাংলাদেশের সৃষ্টির ইতিহাস, তেমনি বংগবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনা যুগের আওয়ামী লীগের ইতিহাস হচ্ছে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির ইতিহাস। নি:সন্দেহে বলতে পারি:

“There is no alternative to leadership of Prime Minister Sheikh Hasina for continuation of the country’s development spree. The success of Sheikh Hasina is nothing less than a miracle. She has developed the country from almost nothing. Bangabandhu’s dream of building a golden Bangladesh is being implemented by the Prime Minister with hard work and talent. Only Sheikh Hasina can build a developed, prosperous and peaceful Bengali nation and Bangladesh. General people also have faith in HPM Sheikh Hasina and it is her main strength. Her devotion and sincerity has taken Bangladesh to a new height today”.

বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর বর্তমান গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। রাজনীতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জন্য নতুন কিছু নয়-জন্ম সূত্রে পাওয়া এক উত্তরাধিকার। স্কুল জীবন থেকে তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় থেকে ১৯৬৬-৬৭ শিক্ষাবর্ষে কলেজ ইউনিয়নের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয় তাঁর রাজনৈতিক জীবনের আনুষ্ঠানিক যাত্রা। এই ৭৬ বছরের মধ্যে অর্ধেকের বেশি সময় ধরে নৌকা নামের একটি প্রতীকের হাল ধরে আছেন। জীবনের প্রায় সিকিভাগ পার করে দিয়েছেন সরকার প্রধান হিসেবে দেশের হাল ধরে।

১৯৭৫ সালে এক আকস্মিক ঝড়ে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় তার পরিবার এবং ১৯৭৫ পরবর্তী প্রায় সকল সরকার আওয়ামী লীগকে দুমড়ে-মুচড়ে ফেলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধু & এই দলের অবদানকে মুছে ফেলার সকল প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছিল। ৮০র দশকের শুরুতে যখন আওয়ামী লীগ বিধ্বস্ত প্রায় এবং বিভিন্ন অংশে বিভক্ত হওয়ার মতো অবস্থায়, ঠিক সেই সময় ১৯৮১ সালের ১৭ মে বঙ্গবন্ধু তনয়া আজকের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতিহাসের চ্যালেঞ্জ নিতে এবং পিতার রক্তের ঋণ পরিশোধ করতে বিদেশ থেকে দেশে ফিরে পিতার ঐশ্বর্যময় রাজনীতির সিঁড়িতে পা রেখে শুরু করেন নতুন অধ্যায়ের। তিনি ভঙ্গুর আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়ে আওয়ামীলীগের ‘ঐক্যের প্রতীক’ হিসেবে দূরদর্শী ও সাহসী নেতৃত্বের মাধ্যমে দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দলকে সুসংগঠিত করেন। ক্ষমতার মোহ পেছনে ফেলে চরম প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও মাত্র ৩৪ বছর বয়স থেকেই টানা ৪ দশক ধরে তিনি দায়িত্ব বয়ে চলেছেন আওয়ামী লীগের প্রধান হিসেবে। তাঁর ছিল না জীবনের স্বাভাবিক গতিধারা, হাতের মুঠোয় জীবন বাজি রেখে পথ চলাই যার একমাত্র নিয়তি। সব হারিয়েও দেশকে তিনি পৌঁছে দিতে চান গৌরবোজ্জ্বল সাফল্যের অধ্যায়ে, এখন জীবনের একটাই প্রত্যয়-জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়া। সেই প্রত্যয় নিয়েই এগিয়ে চলছেন অনমনীয় সংগ্রামী ব্যক্তিত্ব বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সব হারিয়ে তিনি যেন একা এক নীলকণ্ঠ পাখি। তিনি প্রায় বলেন, আমি নীলকণ্ঠ। নীলকণ্ঠের মত বিষ পান করেও তা হজম করতে পারি। আসলেও তাই, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মই যেন ত্যাগ স্বীকার করার জন্য, যেমনটা জাতির পিতা শেখ মুজিব পরাধীন জাতির মুক্তির আন্দোলনে নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন। নিঃস্ব হয়েও তিনি অন্ধকারের ভেতর দিয়েও জাতিকে আলোকিত করে যাচ্ছেন। এ যেন দুঃখের দরিয়া একা সাঁতরে কূলে পৌঁছেছেন। গ্রীক পৌরাণিকে আমরা ফিনিক্স পাখির কথা শুনতে পাই। সে পাখি নিজের পুড়ে যাওয়া ছাই থেকেই আবার জন্মায়, যার পালক থেকেও জন্মায় অজস্র নতুন পাখি-মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের সেই ফিনিক্স পাখি, তাঁর জীবন পৌরাণিক ফিনিক্স পাখির গল্পের মতো। কেউ তাঁর জীবনের পটভূমি সন্ধান করতে চাইলে তা বর্ণনার জন্য এটিই হতে পারে যথাযথ উপমা। খুনীদের রক্তের হলি খেলা থেকে যিনি জন্মেছেন বারবার, যার অসীম সাহস আর অফুরন্ত প্রাণশক্তির কাছে নতজানু হয়েছে ষড়যন্ত্রকারী সাম্প্রদায়িক অপশক্তি। পূর্বসূরির ছাই থেকে পৌরাণিক ফিনিক্স পাখির নতুন জীবন লাভের মতই তাঁর উত্থান। কোন পুরুস্কার কিংবা স্বীকৃতি যেন তাঁর কাছে তুচ্ছ। ধ্বংসস্তুপ থেকে উঠে এসে তিনি তাঁর জীবনকে উৎসর্গ করেছেন এই বাংলার আপামর মানুষের কল্যাণে। পিতার স্বপ্ন বুকে নিয়ে শত বাধা পেরিয়ে সোনার বাংলা গড়তে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। বার বার মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসলেও দমে যাননি, বরং তার সমস্ত জীবন ধরে কন্টকাকীর্ণ এক দীর্ঘ পথ হেঁটে, সহস্র বাঁধা মাড়িয়ে তিনি আজকের শেখ হাসিনা।

সময় গড়িয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্রমেই সমৃদ্ধ হয়েছেন। হাসিনা আ ডটার’স টেল যারা দেখেছেন তারা নিশ্চয়ই উপলব্ধি করেছেন বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানার সেই সংলাপের কথা- মাকে যদি বলতে পারতাম, তোমার হাসু আর আলসে ঘরের মেয়ে নেই। যে মেয়েটা নাকি গল্পের বই পড়ে, গান শুনে দিন কাটিয়ে দিতে চেয়েছিল, সেই মেয়েটিই এখন বাঙ্গালি জাতির পরিত্রাণ কর্তা, বাঙ্গালি জাতির বিকল্পহীন অবলম্বন, নেতৃত্ব গুণে অনন্যা ও অদ্বিতীয়া । বংগবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বোঝেন জনগণের সুখ-দুঃখ, বোঝেন তাদের নাড়ির টান। একটা প্রবন্ধে পড়েছিলাম প্রয়াত কথা সাহিত্যিক শওকত ওসমান, গাফফার চৌধুরীর হাত ধরে বলেছিলেন, গাফফার দোহাই তোমার, হাসিনার সমালোচনা করো না। দীর্ঘকাল ধরেই তো চারিদিকে তাকিয়ে দেখছি, এত জ্ঞানী-গুণী, ডান-বামের বড় বড় নেতা। মুখে হাসিনার এত নিন্দা ও সমালোচনা। কিন্তু ক্রাইসিসের সময় হাসিনা ছাড়া কাউকে দেখি না। মনে পড়ছে ৫ বছর আগে কোনো এক লেখায় আব্দুল গাফফার চৌধুরীই লিখেছেন, কাছের মানুষের বড়ত্বের পরিমাপ অনেক সময় কাছে থেকে করা যায় না। বংগবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনারও করা যাবে না। কারণ এখন তিনি আমাদের বড় কাছে আছেন, আমাদের মাঝেই আছেন। কোনো দূর ভবিষ্যতে তিনি যখন থাকবেন না, তখন সেই শূন্যতা কতোটা অপূরণীয় তা বোঝা যাবে। বোঝা যাবে দেশের মাটিতে তিনি কতোটা অপ্রতিদ্বন্দ্বী নেতা হয়ে উঠেছিলেন। বংগবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনার নেতৃত্বের বৈশিষ্ট্য এই যে, তিনি ইন্দিরা গান্ধী বা মার্গারেট থ্যাচারের মতো লৌহমানবী হয়ে ওঠেননি। কিন্তু তাঁদের চাইতেও কঠিন সঙ্কটের সম্মুখীন হয়ে শক্ত ধাতুর মনের পরিচয় দিয়েছেন। যে সাহসের প্রমাণ দিয়েছেন, তা অনেক লৌহমানবীর মধ্যেও দেখা যায়নি।

আবদুল গাফফার চৌধুরীর অন্য একটি লেখা থেকে পাওয়া, আমি একবার বঙ্গবন্ধুকে বলেছিলাম, শেখ হাসিনা আপনার মেয়ে না হয়ে ছেলে হলে ভালো হতো। বঙ্গবন্ধু জিজ্ঞেস করেছিলেন একথা কেন বলছো? জবাব দিয়েছিলাম, তাঁর চেহারায় আপনার সাহস, দৃঢ়তা ও তেজস্বিতা যতোটা দেখি, এতোটা আর কারো মধ্যে দেখি না। আপনার রাজনীতির যোগ্য উত্তরাধিকার তার হাতেই মানাতো ভালো। বঙ্গবন্ধু তাঁর ঠোঁটের পাইপে দীর্ঘ টান দিয়ে বলেছিলেন, দরকার পড়লে হাসু তা পারবে। তাকে মেয়ে হিসেবে দেখো না। তার মধ্যে অনেক ছেলের চাইতেও বুদ্ধি, সাহস ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার শক্তি বেশি। নিজের কন্যা সম্পর্কে বঙ্গবন্ধুর এই চিন্তাভাবনা যে কতোটা সঠিক, বাংলাদেশের মানুষ এখন তা বুঝতে পারছে। বলতে চাই:

“Hon’ble Prime Minister Sheikh Hasina; name of an indomitable leader, is the successor of the blood and ideals of Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman greatest Bengali of all time, the great hero of freedom, the immortal poet of the epic called freedom, and the father of the Bengali nation. She is the last shelter of Bengali hopes. She is the savior in crisis. She is the height of untiring faith in struggle. She is indispensable in the development of Bangladesh. She is a symbol of indomitable courage. She is the flame of the movement in the daring journey to create Bangladesh in the spirit of the liberation war”.

এক বর্ণাঢ্য সংগ্রামমুখর জীবন জননেত্রী শেখ হাসিনার। সাফল্য গাঁথা এই কর্মময় জীবন কুসমাস্তীর্ণ ছিল না, ছিল কণ্টকাপূর্ণ। মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস তিনি গৃহবন্দি থেকেছেন। সামরিক স্বৈরশাসনামলেও বেশ কয়েকবার তাকে কারানির্যাতন ভোগ ও গৃহবন্দি থাকতে হয়েছে। বার বার তার জীবনের ওপর ঝুঁকি এসেছে। ২০০৪ সালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ তে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বিরোধী সমাবেশে বিশ্বের রাজনীতির ইতিহাসে সবচেয়ে কলঙ্কিত ঘটনা ঘটে। যুদ্ধক্ষেত্রে যে আর্জেস গ্রেনেড ব্যবহার করা হয় সেই একই গ্রেনেড দিয়ে হামলা চালানো হয় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার উপর। কিন্তু মৃত্যু ভয়কে পায়ের ভৃত্য করে ক্লান্তিহীন পরিশ্রম করে যাচ্ছেন দেশ মাতৃকার জন্য। নানা বাধা বিপত্তি, ঘাত প্রতিঘাত, যড়যন্ত্র, হত্যার প্রচেষ্টা কোন কিছুই তাকে দমাতে বা থামাতে পারেনি কোন চক্র। সফলতা তাঁর এখানেই যে তিনি পিছু হটেননি, ভয় পাননি, বরং সাহসের সাথে দৃঢ়চিত্তে মোকাবেলা করেছেন। অনেক বন্ধুর পথ পাড়ি দিয়ে নানা চড়াই-উতরাই, কারাবরণ, মৃত্যুর মুখোমুখি হওয়াসহ অনেক ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে তিনি দেশকে আজকের অবস্থানে এনে দাঁড় করিয়েছেন।

আমি এভাবে বলতে চাই “আগের দিন যিনি রাষ্ট্রপতির কন্যা, পরদিনই ভয়ে তাকে কেউ আশ্রয় দিতে চান না”-এই হচ্ছে আজকের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এক সময়ের নিয়তি। বংগবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বারবার বুলেট ও গ্রেনেডের মুখ থেকে বেঁচে ফেরা বহ্নিশিখা। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে যেমন দৃঢ় প্রতিজ্ঞ তেমনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় একটি উদার গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশেরও প্রতিচ্ছবি। রাজনীতির মাধ্যমে মানুষের কল্যাণই তাঁর রাজনীতির দর্শন। তাঁর রাজনীতির মূলমন্ত্র হলো জনগণের জীবনমান উন্নয়ন। আর তাই বারবার স্বাধীনতা বিরোধী রাজনৈতিক অপশক্তি তার উপর বুলেট ও গ্রেনেড হামলা চালিয়ে তাকে শেষ করে দিতে চেয়েছে। বংগবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা যেখানেই যান, বুলেট যেন তাড়া করে ফেরে। শেখ হাসিনা যে আজও বেঁচে আছেন, এটা যেমন সৌভাগ্য, তেমনি বাংলাদেশেরও ভাগ্য। শেখ হাসিনা সেই বিরল রাজনীতিবিদদের একজন, যাকে বারবার হত্যার চেষ্টা হয়েছে। ফিদেল কাস্ত্রো ছাড়া আর কাউকে হত্যার জন্য এতোটা মরিয়া ছিল না প্রতিপক্ষ। নিজের বাসায়, জনসভায়, গাড়ি বহরে, ট্রেন যাত্রায়- বারবার তাকে হত্যার চেষ্টা হয়েছে, সংখ্যাটা আজ ২১। বংগবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার মতো অসংখ্যবার মৃত্যু ভয়কে উপক্ষো করে মানুষের জন্য কাজ করে যাওয়া নেতৃত্ব বর্তমান বিশ্বে বিরল।

বঙ্গবন্ধু  শেখ হাসিনার জন্য বাংলাদেশ আজ ধন্য। পিতা মুজিব যেখানে ৪৬ বছর বয়সে আইয়ুব খানের শাসনামলে আওয়ামী লীগের সভাপতি দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন, সেখানে শেখ হাসিনাকে ৩৪ বছর বয়সে সামরিক স্বৈরতন্ত্রের বর্বর সময়ে আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করতে হয়েছে। দেশ গঠনে এখন পর্যন্ত তিনি সকল বিশেষণের ঊর্ধ্বে ওঠে এসেছেন। গত ১৪ বছর দেশের উন্নয়ন আকাশ ছুঁয়েছে। তিনি পাল তুলে দিয়েছেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর বহমানের নৌকায়। বৈঠা ধরেছেন শক্ত হাতে। সেই তরী উথাল-পাথাল স্রোতের ভেতর দিয়ে পাড়ি দিয়েছে খাল-বিল-নদী-নালা থেকে সাগর মোহনায়। বিশাল বাংলাদেশের বুক জুড়ে তার নৌকা ভেসেছে দুর্বার গতিতে। যে নৌকায় ১৯৭০ সালে উঠেছিল সাড়ে ৭ কোটি বাঙালি। আর ২০২৩ সালে উঠেছে ১৮ কোটি বাঙালি। নায়ের বাদাম তুলে মাঝি ছুটে চলছে বাংলার প্রতি ঘাটে, বন্দরে। সবখানে তার তরী ভিড়েছে মানুষের টানে, তাদেরই আবাহনে। একটি গানের কলি মনে পড়লো :

“তুমি নদীর মত ছুটে চলা যেন এক নদী,তুমি বাঙালির পাল তোলা নৌকায় বয়ে যাও নিরবধি”

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে একটি অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন।গত এক দশকে তার প্রধানমন্ত্রিত্বকালে দেশ উন্নয়নের পথ ধরে যতদূর এগিয়েছে তা বিশ্বকে নাড়া দিয়েছে । একটি পশ্চাৎপদ দেশকে উন্নয়নের কাতারে শামিল করার মধ্য দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে অবস্থানে পৌঁছেছেন-এককথায় সেটা অবিশ্বাস্য। বংগবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সফল নেতৃত্বে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের নতুন মাত্রা সূচিত হয়েছে, সকল প্রকার কুপমন্ডুকতা পিছনে ফেলে তাঁর শাসনামলেই গত বছর বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে, তাঁর হাত ধরেই এমডিজি অর্জন করেছে, মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে, এসডিজি অর্জনেও দ্রুততার সাথে এগিয়ে যাচ্ছে। সমকালীন বিশ্বে শেখ হাসিনা এমন এক রাষ্ট্রনায়ক যিনি কেবল বাংলাদেশের তৃতীয় দফা প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বেই নিয়োজিত নন, তিনিই একমাত্র রাজনীতিবিদ যিনি টানা ৩৯ বছর ধরে স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে চলেছেন।জাতির পিতার রক্ত, স্বপ্ন, দ্রোহ আর বেদনা বুকে ধারণ করে তিনি হয়েছেন বাঙালির বিশ্বজয়ের স্বপ্নসারথি ও বাঙালি জাতির আস্হার প্রতীক। তাঁর কর্ম, ব্রত ও হিমালয়সম দৃঢ়তা তাঁকে স্থান দিয়েছে মহাকালের অনন্তযাত্রায়। মূলতঃ ‘৭৫ পরবর্তী বাঙালি জাতির যা কিছু মহৎ অর্জন তা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই অর্জিত হয়েছে।

১৯৯৬ সালের দীর্ঘ ২১ বছর পর প্রথমবারের মতো সরকার গঠন করেন। ২০০৯ সালে পুনরায় রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে প্রস্ফুটিত করেছেন, প্রজ্বলিত করেছেন। বঙ্গবন্ধুর সুদীর্ঘ ২৪ বছরের লড়াই সংগ্রাম আর মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের প্রকৃত ইতিহাস বর্তমান প্রজন্মের নিকট তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন, নতুন প্রজন্ম তা অনুধাবন করতে পারছে। প্রতিকূল পরিস্থিতি আর রক্তরঞ্জিত পথ পাড়ি দিয়েই তিনি দেশকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন সম্মানের কাতারে। তাঁর টানা একযুগের নেতৃত্বে এক বিস্ময়কর উত্থান পর্বে বাংলাদেশ।

একজন নেতা তার দৃঢ়তায় এবং অবিচল প্রজ্ঞায় কিভাবে সব চাপ উপেক্ষা করে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের বিচার করতে পারেন, তার ক্ষমতায় এবং দূরদৃষ্টিতে ক্ষুধা মুক্ত, খাদ্যে স্বনির্ভর একটি দেশ গড়তে পারেন, তার সুচিন্তিত পরিকল্পনা ও বিচক্ষনতায় কিভাবে অর্থনৈতিক উন্নয়নের এক জাগরণ সৃষ্টি করতে পারেন, তার অভিভাবক সুলভ ক্ষমতায় এবং সুদুরপ্রসারী চিন্তায় কিভাবে সার্বজনীন মানসম্মত শিক্ষার আলো প্রজ্জলিত করতে পারেন গোটা দেশে, তার মানবিকতায় এবং মমতায় কিভাবে সবার জন্য স্বাস্থ্যের প্রবেশদ্বার উন্মোচিত করতে পারেন, প্রান্তিক মানুষের জন্য গড়তে পারেন কমিউনিটি ক্লিনিক, তার দৃঢ় সংকল্পে কিভাবে একটি দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে পরিণত করতে পারেন, মানব কল্যাণে এবং মানুষের প্রতি ভালবাসায় কিভাবে বিধবা ভাতা, বয়স্কভাতা চালু করতে পারেন, কতটা পরিবেশ বান্ধব এবং প্রকৃতি সচেতন হলে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় নিতে পারেন যুগান্তকারী কর্মসূচী, তার উদাহরণ রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। কতটা চিন্তাশীল এবং দেশ নিমগ্ন হলে জ্বালানী নিরাপত্তা এবং বিদ্যুৎ স্ব-নির্ভরতার মাইল ফলক স্পর্শ করতে পারেন, কতটা ক্রীড়াবান্ধব এবং ক্রীড়া প্রেমিক হলে দেশের খেলাধূলাকে বিশ্ব উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারেন তার প্রমাণ আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিঃসংকোচে বলতে পারিঃ

“Once written off as a basket case, Bangladesh is now spoken of as a basket of innovation and a development surprise to the world as it has made tremendous achievements on all fronts. Bangladesh is moving forward at an irresistible speed under the dynamic and courageous leadership of HPM Sheikh Hasina. Infact, she is the architect of the country’s development as Bangladesh emerged as a role model of progress in the world under her dynamic leadership. I would like to say in an unequivocal voice that it was possible only under her prudent, wise and magical leadership”.

একবিংশ শতাব্দীতে বিশ্বের কোন দেশ উন্নতির এমন অসাধ্য সাধন করতে পারেনি, যেটা করেছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ। আবার বাংলাদেশের উন্নয়নের রাজনীতিতে কখনো স্থিতিশীলতা আসেনি এতখানি যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়ে এসেছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে কোন নির্বাচিত বা অনির্বাচিত শাসক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মত এতো বিপুল জনপ্রিয়তা এবং জনবান্ধব নেতা হিসেবে এতো দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। আর সামনের দিনেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মত বিপুল জনপ্রিয়তা এবং জনসম্পৃক্ততা ধরে রেখে এমন রেকর্ড কেউ করতে পারবে বলে আমি অন্ততঃ বিশ্বাস করি না। বিশ্বে যখন অর্থনৈতিক সংকটের আশংকা প্রকট, বিগত কয়েক বছর ধরে বিশ্ব মন্দার কারণে উন্নত দেশগুলোর অর্থনীতিও যখন টালমাতাল তখন বাংলাদেশের আশার আলো ও ত্রানকর্তা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, গত এক দশক ধরে জিডিপি ৭ শতাংশের উপরেই ধরে রেখেছে এবং দক্ষতার সাথে করোনা মোকাবিলা করেছেন। বিশ্বে যখন সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গীবাদ এবং উগ্র মৌলবাদের বিষবাস্প, তখন এ থেকে মুক্তির পথপ্রদর্শক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা, জঙ্গীবাদ মোকাবেলার সফল রাষ্ট্র বাংলাদেশ। দীর্ঘ ৪১ বছর পর ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ছিটমহল সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। যখন মিয়ানমারে জাতিগত নিধনে লক্ষ লক্ষ মানুষ অসহায়,সম্বলহীন হয়ে মৃত্যুমুখে পতিত,পার্শ্ববর্তী দেশগুলো যখন সীমান্ত সীল করে দিয়েছিল তখনই অসহায় মানুষ গুলোর কাছে আবির্ভূত হলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের সীমান্ত দরজা খুলে দিয়ে মানবতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে পৌঁছে গেছে এক অনন্য উচ্চতায়। পৃথিবীর বৃহত্তম শরণার্থী শিবির এখন বাংলাদেশে। তলাবিহীন ঝুড়ির বাংলাদেশ আজ ১১ লক্ষ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার পাশাপাশি খাদ্য, বস্তু, চিকিৎসা সহ যাবতীয় ভরণপোষণের দায়িত্বে। একবিংশ শতাব্দীতে যখন ক্ষুধার্ত মানুষের আর্তনাদ হাহাকার নতুন করে বাড়ছে, তখন ক্ষুধামুক্ত বিশ্বের আকাংখার একমাত্র ভরসাস্থল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। কথায় বলেঃ

“ ক্ষুধা যে দেশে হয়েছে নিরুদ্দেশ, তার নাম বাংলাদেশ ”।

জাতির পিতার অন্যতম স্বপ্ন ছিল সোনার বাংলা বিনির্মাণ। ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হবার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মাত্র সাড়ে ০৩ বছরের শাসনামলে সোনার বাংলা গড়ার যে দৃপ্ত পদক্ষেপ শুরু হয়েছিলো এবং শোষিত-নিপীড়িত মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য জাতির পিতা যে সব উদ্যোগ নিয়েছিলেন, তার উপর ভিত্তি করেই আজকের বাংলাদেশকে গড়ে তুলছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাঙালি জাতিকে যে সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু, সেটি আজ তাঁরই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ধীরে ধীরে পূর্ণতা পাচ্ছে। হেনরি কিসিঞ্জারের তলাবিহীন ঝুড়ির বাংলাদেশ আজ আর তলাবিহীন নয়; ঝুড়ি এখন উন্নয়ন ও সাফল্যে পরিপূর্ণ। আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক দৈন্যে আকণ্ঠ নিমজ্জিত একটি জাতি ও রাষ্ট্র কে এত উঁচুতে নিয়ে এসেছেন, উন্নয়ন – অগ্রগতির মহাসোপানে দূর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ শুধুমাত্র তাঁর সাহসী ও প্রাজ্ঞ নেতৃত্বেই। অতীত ও বর্তমান তুলনাতেই তা শুধু দেশের মানুষই নয়, বিশ্ব নেতাদের কাছেও বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে। বিশ্ব নেতৃবৃন্দ বলছে এই বাংলাদেশ আর সেই আগের বাংলাদেশ নয়,বদলে গেছে এর সবকিছুই। একে একে সব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে বিশ্বের অনেক প্রভাবশালী দেশকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বিশ্বকে চ্যালেন্জ ছুঁড়ে দিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ করে বাংলাদেশ তার সক্ষমতা জানিয়ে দিয়েছে এবং প্রমাণ করে দিয়েছে বাঙালি জাতিকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারিনি আর কেউ পারবেও না। অবাক বিস্ময়ে বিশ্ববাসী আজ বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়া দেখছে, অনুকরণ করছে এদেশের সার্বিক উন্নয়নের চিত্র। তাই বলতে পারি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতেই কেবল বাংলাদেশ নিরাপদ।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাঙালি জাতির এক আলোকবিন্দু। পুরো বাংলাদেশকে আলোকিত করে চলেছেন ইতিবাচক শাসনব্যবস্থা দিয়ে। একটি পরিবারহারা, শোকাহত, এতিম মেয়ে এসে একটি দেশের স্বাধীনতা আনা লুপ্তপ্রায় দলের হাল ধরলেন, ধীরে ধীরে নেতাকর্মীদের সক্রিয় করলেন, রাজনীতির সূক্ষ্ম বিষয়াদীকে আত্মস্থ করলেন, পিতামাতা-ভাই-আত্মীয়-ঘনিষ্টজন হারানো শোককে শক্তি বানিয়ে মাটি ও মানুষের হৃদয়ের সাম্রাজ্যে স্থায়ী জায়গা তৈরি করে নিলেন এবং শত প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে আজ তিনিই দেশের প্রধানমন্ত্রী, সেটা ১ বার নয়, পরপর ৩ বার, সব মিলিয়ে ৪ বার। কাজ করার সময় আশেপাশের লোকের কারণে কিছু সীমাবদ্ধতা আসে, আছে এবং থাকে, কিন্তু দিন শেষে আপনি নিরপেক্ষভাবে মূল্যায়ন করলে বংগবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনার দুর্দান্ত সফল একটি প্রতিবিম্ব দেখবেন। মৃত্যুর মিছিলে দাঁড়িয়ে জীবনের জয়গান গেয়েছেন এবং গাওয়ান, ধ্বংসস্তুপের উপর দাঁড়িয়ে যিনি বিজয়ের স্বপ্ন দেখেন এবং দেখান, যিনি রক্তাক্ত শরীর নিয়ে গোলাপ চাষের চিন্তা করেন এবং করান, যিনি ষড়যন্ত্র-নীল নকশাকে প্রতিরোধ করতে মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে হাত নাড়েন, যিনি বাংলাদেশকে স্বাধীনতা বিরোধী, সাম্রাজ্যবাদী ও আধিপত্যবাদীদের স্বার্থান্বেষী শকুনী দৃষ্টি থেকে সুরক্ষা দিতে স্রষ্টার অনুগ্রহে নিজের আঁচলের ছায়ায় জীবন বাজি রেখে বাংলার মাটি, সম্পদ ও মানুষকে আশ্রয় দেন -তিনিই বংগবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা। এক প্রবল মানবকল্যানকামী এবং লড়াই সংগ্রাম-প্রতিরোধের এক অনন্য নাম শেখ হাসিনা , যার কথায় ও কাজে বাংলাদেশের প্রাণ-প্রকৃতি-মানুষের ঘ্রাণ আসে, যিনি কখনোই অধৈর্য হন না, বিপদে কম্পিত হন না, যিনি সাফল্য, বিজয় ও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যের সাথে বোঝাপড়া না করে দমে যান না–তিনিই অদ্বিতীয়া শেখ হাসিনা। তাই সারাদেশে এখন শুধু একটাই স্লোগানঃ

“শেখ হাসিনার হাতে থাকলে দেশ, পথ হারাবে না বাংলাদেশ ”

পরিশেষে বলতে চাই, আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আপন কর্মমহিমায় নব পর্যায়ে বাংলাদেশের নতুন ইতিহাসের নির্মাতা। মৃত্যুর মিছিলে দাঁড়িয়ে বারে বারে সৃষ্টির পতাকা উড়িয়েছেন। একজন মানুষ এতো (২১) বার মৃত্যুর দূয়ার থেকে ফিরে আসার পরও কত বেশি দেশপ্রেম এবং দেশের মানুষের প্রতি ভালবাসা থাকলে পুনরায় দেশ ও জাতির জন্য এতো কিছু করতে পারেন, এটা একমাত্র মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষেই সম্ভব। বিশ্বে এমন নজির /দৃষ্টান্ত আর আছে বলে আমার অন্ততঃ জানা নাই। বরং যত বেশি বাঁধা এসেছে, ততো বেশি কঠিন থেকে ইস্পাত দৃঢ মনোবল ও আত্মবিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে গিয়েছেন তিনি। বাংলার মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় নীতি আদর্শে পিতার মতোই অবিচল দৃঢ় ও সাহসী। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যোগ্যতা, নিষ্ঠা, মেধা, মনন, প্রজ্ঞা, বিচক্ষণতা, সৃজনশীলতা, একাগ্রতা, দৃঢ়তা, অপরিসীম আত্মত্যাগ, বিজ্ঞানমনষ্ক দৃষ্টিভংগি ও তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে তার উদ্ভাবনী ভাবনা এবং তাঁর যাদুকরী নেতৃত্বে ও যুগান্তকারী পদক্ষেপে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের দরবারে রোল মডেল, আত্নমর্যাদাশীল জাতি ও ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে, অচিরেই জাতির পিতার আজীবনের লালিত স্বপ্নঃ “ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠিত” হবেই বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।

পরম করুণাময় আল্লাহ তায়ালার নিকট আমার প্রার্থনা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমাদের মাঝে শত বছর বাঁচিয়ে রাখুন। তাঁর স্বপ্ন ও কর্মের সমন্বয় বাংলাদেশের মাটি, সংস্কৃতি, মানুষ ও লাল-সবুজ পতাকা বিশ্বে সবার উপরে থাকুক, সমৃদ্ধ বাংলাদেশের আশা ও আলোর উৎসবিন্দু হয়ে আমাদের পথ প্রদর্শন করুন পৃথিবীর বুকে শক্তিশালী জাতিসত্তা হিসেবে টিকে থাকতে। আরও এক শতাব্দী আমাদের মাঝে আশার প্রদীপ জ্বালিয়ে যাবেন এই প্রত্যাশা সবার। শতবর্ষ নিয়ে আপনি বেঁচে থাকবেন প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ে, আরও দীর্ঘ হউক আপনার যাত্রা, আরও এগিয়ে যাক প্রাণের বাংলাদেশ – প্রতিটি বাঙালির আজকের দিনে এই একমাত্র চাওয়া। শেষ করবো কবিতার পংক্তি দিয়ে:

ইতিহাসের ইতিহাস তুমি, উন্নয়নের মহাকাব্য, তুমি দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলা, বাংলাদেশের সৌভাগ্য। কোটি মানুষ ভালবেসে দিয়েছো হ্রদয়ে ঠাঁইউন্নয়নের মহাসড়কে আবারও তোমাকে চাই।

স্যালুট মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।

লেখক:  তারিক ইসলাম,একজন সরকারি কর্মকর্তা ও সাবেক নেতা, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন