খুলনায় মায়ের স্মৃতিজড়িত জমি ঘুরে দেখলেন প্রধানমন্ত্রী

দ্বারা Update Satkhira
০ মন্তব্য 204 দর্শন

 

খুলনা সফরে নগরীর শেরে বাংলা সড়কে অবস্থিত প্রয়াত চাচা শেখ আবু নাসেরের বাড়িতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

খুলনার দিঘলিয়ায় মা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের স্মৃতিজড়িত জমি ও পাট গোডাউন ঘুরে দেখলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় বোন শেখ রেহেনাসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

ব্যক্তিগত সফরে শুক্রবার বিকাল ৩টা ৫৫ মিনিটে গোপালগঞ্জ থেকে সড়কপথে খুলনার দিঘলিয়ায় পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। পরে নগরঘাট ফেরি পার হয়ে বিকাল ৪টায় তাঁর মায়ের নামে কেনা জমি ও পাট গোডাউনে যান। সেখানে প্রায় ৪০ মিনিট অবস্থান করেন।

দিঘলিয়া থেকে প্রধানমন্ত্রী খুলনা নগরীর শেরে বাংলা সড়কে অবস্থিত প্রয়াত চাচা শেখ আবু নাসেরের বাড়িতে যান। বঙ্গবন্ধু খুলনায় এসে এই বাড়িতে অবস্থান করতেন। সেখানে দলের নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে স্বাক্ষাত করেন। ওই বাড়িতে প্রধানমন্ত্রী মাগরিবের নামাজ আদায় শেষে সড়কপথে খুলনা ত্যাগ করেন। ওই বাড়িতে প্রধানমন্ত্রীর চাচাতো ভাই সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, সংসদ সদস্য শেখ সালাহ উদ্দিন জুয়েল, খুলনার মেয়র তালুকদার আবদুল খালেকসহ আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।

এদিকে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে দুপুর থেকেই খুলনা শহর বাইপাস ও দৌলতপুর, ফুলবাড়িগেটে সড়কের দুই পাশে অবস্থান নেন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহর খুলনায় প্রবেশ করলে নেতাকর্মীরা স্লোগান দিয়ে তাঁকে স্বাগত জানান। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে সড়কে লাগানো হয় অসংখ্য তোরণ। প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে খুলনায় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। রূপসা সেতু থেকে শুরু করে খুলনা শহর বাইপাস, দিঘলিয়া ও শেখপাড়ার চাচার বাড়ি এলাকায় মোতায়েন করা হয় আইনশৃংখলা বাহিনীর প্রায় সাড়ে ৪ হাজার সদস্য। নিরাপত্তার স্বার্থে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই ভৈরব ও রূপসা নদী নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়।

আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও স্থানীয় লোকজন জানান, পাকিস্তান আমলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার সহধর্মিনী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের নামে দিঘলিয়ার ভৈরব নদের কোলঘেষে নগরঘাট এলাকায় ১ একর ৪৪ শতক জমিতে পাট গোডাউন ও এক কক্ষ বিশিষ্ট ঘরসহ জমি কেনেন। তৎকালীন সময়ে বঙ্গবন্ধুর ভাই শেখ আবু নাসের এ জমি দেখাশোনা করতেন। বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর প্রধানমন্ত্রী এ জমির মালিক হলেও জমিটির কথা জানতেন না তিনি। ২০০৭ সালে তিনি তার আইনজীবীর মাধ্যমে এ জমির খোঁজ পান। খুলনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী এবং দিঘলিয়া গ্রামের বাসিন্দা বেগম মন্নুজান সুফিয়ান এই জমি দেখাশোনা করে থাকেন। ২০২০ সালের দিকে প্রধানমন্ত্রীর জমিতে থাকা পুরাতন পাট গোডাউনটি ভেঙে সেখানে নতুন করে গোডাউন ও একটি রেস্ট হাউজ নির্মাণ করা হয়েছে। গোডাউনটি একজন পাট ব্যবসায়ীকে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। গোডাউন সংলগ্ন পাকা রাস্তার নামকরণ হয়েছে শেখ রাসেলের নামে। এই প্রথম প্রধানমন্ত্রী এই স্থান পরিদর্শন করলেন।

খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুজিত অধিকারী ঢাকাটাইমস বলেন, প্রধানমন্ত্রী পারিবারিক সফরে খুলনায় এসে দিঘলিয়ায় মায়ের নামে কেনা জমি ও গোডাউন ঘুরে দেখেন। সেখানে কিছুসময় অবস্থান করার পর প্রধানমন্ত্রী তার ছোট চাচা শেখ আবু নাসেরের বাড়িতে যান। বিকালে সেখানে খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কেসিসি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ, নগর সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা, আমি এবং সদর ও সোনাডাঙ্গা থানা আ.লীগের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী চা খেতে খেতে আমাদের দলের সাংগঠনিক বিষয়ে দিক নানা নির্দেশনা দেন। এরপর মাগরিবের নামাজ আদায় করে সন্ধ্যা ৬টার পর পর তিনি সড়ক পথে খানজাহান আলী সেতু হয়ে টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন।

জানা গেছে, খুলনায় ব্যক্তিগত সফর শেষে সড়ক পথে টুঙ্গিপাড়ায় ফিরবেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী ও তার ছোটবোন শেখ রেহানা টুঙ্গিপাড়ায় রাতযাপন করবেন। এর আগে সকাল সোয়া ৮টার দিকে সড়ক পথে গণভবন থেকে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটে টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছান তিনি। বেলা ১১ টা ১০ মিনিটে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে বঙ্গবন্ধুসহ পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট সকল শহিদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে ফাতেহা পাঠ, বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন তিনি। বিকেল ৩টায় টুঙ্গিপাড়া থেকে সড়ক পথে তিনি খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। প্রসঙ্গত, এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবশেষ ২০১৮ সালের ৩ মার্চ খুলনায় এসেছিলেন।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন