পুলিশের একজন সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) একটি দোকান থেকে টাকা নিচ্ছেন- এমন একটি ভিডিও সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়ে ফেসবুকে। সেসব ভিডিও’র ক্যাপসনে বলা হয়, প্রকাশ্যেই ঘুষ নিচ্ছেন এএসআই হারুনুর রশীদ। তবে পুলিশের তদন্ত বলছে, ঘুষ নয়- ব্যক্তিগত লেনদেন ছিল তার।
এএসআই হারুনুর রশীদ রাজশাহীর বাগমারা থানার তাহেরপুর পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত ছিলেন। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর গত ৩ ডিসেম্বর তাকে পুলিশ ফাঁড়ি থেকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। এরপর বিষয়টি তিন দিনের মধ্যে তদন্তের জন্য রাজশাহী জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) সার্কেল সুমন দেবকে দায়িত্ব দেন পুলিশ সুপার (এসপি) এবিএম মাসুদ হোসেন। মঙ্গলবার বিকালে তদন্ত কর্মকর্তা তার তদন্ত প্রতিবেদন এসপিকে দিয়েছেন।
জেলা পুলিশের মুখপাত্র ইফতেখায়ের আলম বলেন, তাহেরপুর বাজারের ‘মা টেলিকম’ নামের একটি মোবাইলের দোকানের মালিক তুহিনের কাছ থেকে এএসআই হারুনুর রশীদ টাকা নিচ্ছেন বলে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়। তদন্তের সময় তুহিন জানিয়েছেন, এএসআই হারুন ঘুষ নেননি। মূলত তিনি তার একটি মোবাইল ফোন এই দোকানে বিক্রি করে অন্য একটি ফোন কিনেছিলেন। এই ফোন কেনাবেচার সময় হারুন দুই হাজার টাকা পান। সেই টাকাটিই তিনি নিয়েছেন। কিন্তু উদ্দেশ্যেপ্রণোদিতভাবে এই ভিডিওটিকে ঘুষ গ্রহণের চিত্র বলে প্রচার করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, তাহেরপুর এলাকার দুই ব্যক্তি ভিডিওটি ফেসবুকে ছেড়েছেন। তদন্তের সময় জানা গেছে, যারা এই কাজটি করেছেন তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। কিছুদিন আগে তারা একটি ক্লিনিকে চাঁদাবাজি করতে গিয়েছিলেন। তখন ক্লিনিকের মালিক পুলিশ ডাকেন। ওই দিন এএসআই হারুন সেখানে গিয়েছিলেন। তিনি চাঁদাবাজদের বকাঝকা করে বিদায় করেছিলেন। এই ঘটনার জের ধরে তারা এএসআই হারুনের ভিডিওটি ছাড়ে।
তদন্ত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, চিহ্নিত দুই চাঁদাবাজ তুহিনের দোকানের কর্মচারী আশিকের কাছ থেকে সিসি ক্যামেরার ওই ভিডিও ফুটেজটি নিয়েছিলেন। বিষয়টি তুহিন নিজেও জানতেন না।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইফতেখায়ের আলম বলেন, ভিডিওতে দেখতে পাওয়া টাকা লেনদেনের বিষয়টি ঘুষ গ্রহণ বলে প্রতীয়মান না হলেও এএসআই হারুনুর রশীদকে পুলিশের পোশাক পরা অবস্থায় ধূমপান করতে দেখা গেছে। এটি শিষ্টাচারবহির্ভুত। পোশাক পরে প্রকাশ্যে ধূমপানের মতো শিষ্টাচারবহির্ভুত কাজের জন্য এএসআই হারুনুর রশীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।