পুলিশের কাজই হচ্ছে জনগণকে সেবা দেওয়া। এদেশের জনগণ ও পুলিশের মাঝে কোনো ভেদাভেদ নেই বলে জানিয়েছেন ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার শাহ মিজান শাফিউর রহমান, বিপিএম (বার) পিপিএম। সোমবার (৩০ জুলাই) দুপুরে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে গরুর হাটের ইজারাদার, পরিবহন শ্রমিক নেতা ও বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মতবিনিময় এবং কেরানীগঞ্জ থেকে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল জুলাই-২০১৯ পরিক্ষায় প্রাথমিকভাবে নির্বাচিতদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

পুলিশ সুপার বলেন, প্রতিবছরই ঈদের আগে আমরা সবার সঙ্গে মতবিনিময় করে থাকি। যেন ঈদে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। ঈদে বাস, ফেরী ও চঞ্চ চলাচলে অঞ্জান পার্টি,মলম পাটির হাত থেকে বাঁচার জন্য সচেতন থাকতে হবে।বাসে অপরিচিত লোকের কিছু দেওয়া খাওয়া যাবেনা।তিনি বলেন কোরবানীর পশুর  হাটে কোন রকম চাঁদাবাজ থাকলে পুলিশ কে ধরিয়ে দিন। ঈদের আগে ও পরে ঢাকা জেলা পুলিশ কয়েকস্থরের নিরাপত্তা দিবে ঢাকা জেলাবাসীকে । ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা যেন শান্তিতে ঈদুল আযহা উদযাপন করতে পারে সেজন্য ঢাকা জেলা পুলিশ সব সময় তৎপর রয়েছে। ঈদকে সামনে রেখে সবারই সর্বোচ্চ সতর্ক হওয়া উচিত।তিনি বলেন, পুলিশের কাজই জনগণকে সেবা দেওয়া। এদেশের জনগণ ও পুলিশের মাঝে কোনো ভেদাভেদ নেই। আমরা যারা সেবা দেই ও যারা সেবা নেই সবাই সমগোত্রীয়। হাজার ভালো মানুষের মাঝেও কিছু খারাপ মানুষ থাকে, যারা বিভিন্নভাবে খারাপ কাজ করে।

জেলা পুলিশের এই প্রধান কর্মকর্তা আরও বলেন, গুজবের বিরুদ্ধে পুলিশের সর্বোচ্চ প্রায়োরিটি রয়েছে। সাথে সাথে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সবাই কে সচেতন হয়ে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার মধ্য দিয়েই এডিশ মশা নির্মুল করতে হবে।তিনি বলেন বসত বাড়ির ফুলের টবে বৃষ্টির পানি থাকতে পারে, সেখানেই এডিশ মশা বংশ বিস্তার করতে পারে।তাই সব সময় বাড়ির আঙিনা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে ডেঙ্গু প্রতিরোধে। তিনি বলেন    বাংলাদেশ পুলিশে দুর্নীতি বা সুপারিশের কোনো স্থান নেই, যোগ্য ও মেধাবীদের চাকরি হবে বাংলাদেশ পুলিশে। বর্তমানে পুলিশের নিয়োগ সর্বোচ্চ স্বচ্ছ। পুলিশের নিয়োগে দালাল অথবা প্রতারকের আশ্রয় নেবেন না। সরাসরি পরীক্ষা দিয়ে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা জেলার (দক্ষিণ) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুম আহাম্মেদ ভূইয়া বলেন, ঢাকা জেলায় এ বছর জুলাই মাসে ১২৩৬ জন টিআরসি নিয়োগ হয়েছে। এর মধ্যে কেরানীগঞ্জে ১১৬ জন। সারা বাংলাদেশে প্রায় ১০ হাজার। দুদকের চেয়ারম্যান কর্তৃক এ নিয়োগ প্রশংসিত হয়েছে। গেল চার বছরে যা নিয়োগ হয়েছে সম্পূর্ণ ঘুষ দুর্নীতিমুক্ত। সব সম্ভব হয়েছে ঢাকা জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার শাহ মিজান শাফিউর সারের জন্য। আসন্ন গরুর হাটকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের চাঁদাবাজি মেনে নেওয়া হবে না। গরুর হাট কেন্দ্রীক যেকোনো ধরনের সমস্যায় আমরা সবার পাশে দাঁড়াবো। ১৫ আগস্টকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের নাশকতা যেন না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখব আমরা।
এসময় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেরানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক শাহীন আহমেদ, কোন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদুজ্জামান ফারুক, কেরানীগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) রামানন্দ সরকার, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহজামান, কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ওসি শাকের মোহাম্মদ যুবায়ের।
মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, কেরানীগঞ্জ গার্মেন্টস ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুল আজিজ শেখ, সীট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও দক্ষিন কেরানীগঞ্জ থানা যুবলীগের সভাপতি মাহমুদ আলম প্রমুখ।
অনুষ্ঠান শেষে ঢাকা জেলা পুলিশে কেরানীগঞ্জ থেকে সদ্য যোগদানকৃত কনস্টেবলদের ফুল ও গিফট দিয়ে সংবর্ধনা জানান পুলিশ সুপারসহ উপস্থিত অন্যান্য অতিথিরা।


উল্লেখ্য, ১০৩ টাকার পে-অর্ডারের মাধ্যমে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে ঢাকা জেলা থেকে ২০১৯ সালে মোট ১২৩৬ জন ছেলে-মেয়েকে দেয়া হয়েছে পুলিশে চাকরি। এদের মধ্যে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা এলাকা থেকে ৫৪ জন এবং দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা এলাকা থেকে ৬৫ জন। গত ৪ বছরে পুলিশ সুপার শাহ মিজান শাফিউর রহমানের হাত দিয়ে মাত্র ১০৩ টাকার বিনিময়ে সম্পূর্ণ মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে এপর্যন্ত ২৯৫৭ জন কনস্টেবল নিয়োগ দিয়েছে ঢাকা জেলা পুলিশ।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন