কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম’ ইউনিটের প্রধান ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার জনাব মো: মনিরুল ইসলাম সম্প্রতি দেশের বাহিরে সরকারি কাজে অবস্থান করেন দশ দিন। এই দশ দিনে তিনি অফিসিয়াল কাজ মিটিয়ে ফুটপাতে বসে চা ও বাদাম কিনে খেয়েছেন।তিনি ফুটপাতে হেটেছেন ও ঢাকায় বসবাস কালীন সেই নব্বই দশকের স্মৃতিচারণ করেছেন। হৃদয় স্পর্শ করা সেই বিষয়টি গতকাল রাত ৮.৩২ মিনিটে Monirul Islam Additional Commissioner নামের ফেইজবুক আইডির মাধ্যমে জানা গেছে।নিচে হুবাহু সেই আবেগময় স্টাটাসটি তুলে ধরা হয়েছে…..
“কোথা থেকে এসেছি,
কোথায় আছি আর কোথায়ই বা চলে যাবো-চিরন্তন জিজ্ঞাসা।আমিও ব্যতিক্রম নই।
কোথায় ছিলাম-সতত মনে পড়ে।
গ্রাম ছেড়ে শহরে চলে আসি, কলেজে ভর্তি হই। মূলতঃ সম্বল ছিল প্রচন্ড আত্মবিশ্বাস।
কলেজ জীবন অতঃপর বিশ্ববিদ্যালয- হল-হোস্টেলের জীবন। টানাপোড়েন ও কম যায়নি।
মন খারাপ হলো তো কথাই নাই- হাঁটতে বেরোতাম। উদ্দেশ্যবিহীন পথ চলা- মন খারাপের ওষুধ।
নব্বই দশকের প্রথম দিকের ঢাকা শহরের এমন জায়গা কম ছিল যেখানে আমার পা পড়েনি।
কখন ও খেয়েছি, কখনও বা খাবারের টাকা দিয়ে পছন্দের বইটি কিনেছি।
কোন কোন দিন শুধু পানি খেয়ে কাটিয়েছি।
প্রধান সম্পদ আত্মবিশ্বাস- তাও এক সময় হারিয়ে যায়।
ভীষন হতাশায় অনেকটা নিভু নিভু অবস্থা আমার।
‘৯২ থেকে জীবনে কিছুটা স্হিতি এসেছে। আত্মবিশ্বাস ফিরে এসেছিল।
লক্ষ্যস্থির করলাম- এগোলাম……….।
ভীষন মিস্ করি ঢাকা শহরের সেই রাস্তাঘাট।
মাঝে মাঝে মন চায় রাস্তা দিয়ে হাঁটি-উদ্দেশ্যবিহীন।
নীলক্ষেত, নিউমার্কেট, টিএসসি, মধুর ক্যান্টিন-পাবলিক লাইব্রেরি- ভীষন মিস্ করি।
ফুটপাতে চা খাওয়া,
বাদাম চিবানো- খুব মনে পড়ে।
শহীদ মিনারে পথ নাটক কিংবা বেইলি রোডের মহিলা সমিতি মঞ্চে নাটক দেখতে ভীষন ইচ্ছা হয়।
মন চায় রাস্তায় হাঁটি যেখানে আমাকে কেউ চিনবে না, ইচ্ছা হলে ফুটপাতে বসে পড়বো- কেউ দ্বিতীয় বার তাকিয়ে দেখবে না।
সে ও কি সম্ভব? দেশে বোধহয় আর সম্ভব নয়। তবে দেশের বাইরে খুবই সম্ভব।
অল্প কিছু দরকারী কাজ ছাড়া সেরকম দশটা দিন কাটালাম। মোবাইল ছাড়া রাস্তায় হাঁটলাম-উদ্দেশ্যবিহীন। নিজকে জানা, নিজেকে বোঝা, নিজের সাথে বোঝাপড়া করার চমৎকার সুযোগ। নিজের সাথে নিজেকে মিলিয়ে নেওয়া বৈকি। অতঃপর গতানুগতিক জীবনে নব উদ্যমে ফিরে আসা!”