বইমেলায় বিতর্কিত বই প্রকাশ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।
তিনি বলেছেন, আমরা বাংলা একাডেমিকে অনুরোধ করেছি বিতর্কিত বই প্রকাশে যেন সতর্কতা থাকে। প্রতিটা বই বাংলা একাডেমি অথবা পুলিশ পড়ে দিতে পারলে ভালো হত। তবে সে সুযোগ নেই।
বৃহস্পতিবার(৩০ জানুয়ারি) বিকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলার নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ শেষে সাংবাদিকদের তিনি একথা জানান।
শফিকুল ইসলাম বলেন, সারা বছর লোকজন বইমেলার জন্য তাকিয়ে থাকেন। মেলায় নাগরিকদের নিরাপত্তা দেয়া পুলিশের কাজ। এজন্য বইমেলাকেন্দ্রিক একটা নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। গেটে আর্চওয়ে থাকবে। মেলা ও মেলার বাইরে সিসিটিভি দিয়ে মনিটরিং করা হবে। মেলার বাইরে টিএসসি ও দোয়েল চত্বর কেন্দ্রিক আলাদা নিরাপত্তা থাকবে। এর বাইরে শাহবাগ ও নীলক্ষেত এলাকাতেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এছাড়া টহল পুলিশ পেট্রলিং অবস্থায় থাকবে জানান তিনি।
কমিশনার বলেন, মেট্রোরেলের কাজ চলায় মেলায় আগতদের সুষ্ঠুভাবে চলাফেরা নিশ্চিতে একটু কষ্ট হবে। টিএসসি ও দোয়েল চত্বর দিয়ে মেলায় প্রবেশ করা যাবে। আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে তল্লাশি করে মেলায় প্রবেশ করানো হবে। তল্লাশিতে নারী ও পুরুষদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা থাকবে। ডিএমপি ও সিটি এসবির সদস্যরা সাদা পোশাকে মেলা ও আশপাশে অবস্থান করবেন। মেলা ও মেলার বাইরে কোনো হকার থাকবে না। তবে মেলার ভেতরে বাংলা একাডেমির অনুমোদনে খাবার ও পানির স্টল থাকবে।
সাম্প্রদায়িক উসকানি ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে এমন বই নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কীভাবে কাজ করবে- জানতে চাইলে শফিকুল ইসলাম বলেন, এটি অনেক কঠিন কাজ। আমরা বাংলা একাডেমিকে অনুরোধ করেছি এসব বই প্রকাশে যেন সতর্কতা থাকে। প্রতিটা বই বাংলা একাডেমি অথবা পুলিশ পড়ে দিতে পারলে ভালো হত। তবে সে সুযোগ নেই। আমরা চাইনা বই পড়ে মানুষের মনে আঘাত কিংবা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগুক। এ ধরনের কোনো বই প্রকাশ হলে আমাদের জানালে আমরা ব্যবস্থা নেব। আমরা বাংলা একাডেমিকেও অনুরোধ করেছি, তারা এ ব্যাপারে সচেষ্ট রয়েছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন ঘিরে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটলেও নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই। নির্বাচনের পরিবেশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গত একমাস ধরে ঢাকায় নিরবিচ্ছিন্নভাবে নির্বাচনী প্রচারণা চলছে। এক-দুটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হয়নি।
নাগরিকদের নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, এক মাসের প্রস্তুতিতে সাধারণ মানুষের বার্তা পাওয়ার কথা যে, নির্বাচন আনন্দমুখর ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হবে। প্রত্যাশা করছি যেসব রাজনৈতিক দল এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন তাদের প্রার্থীরা যদি সুষ্ঠু পরিবেশ বজার রাখবে। আমরা পুলিশের পক্ষ থেকে কথা দিতে পারি, প্রতিটি নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য ডিএমপি প্রস্তুত।
নির্বাচনে ঢাকার বাইরে থেকে লোক নিয়ে আসা হচ্ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে কমিশনার বলেন, নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা চালানোর জন্য, ঢাকার বাইরে থেকে মানুষ এসেছে। বিষয়টি অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। আমরা এসব লোকজনের সম্পর্কে খোঁজ নিচ্ছি। তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের অভিযোগ অথবা মামলা আছে কিনা, গোয়েন্দা টিম সেটি জানতে কাজ করছে। তবে সুনির্দিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করতে পারলে, ওই সব স্থানে আমরা অভিযান চালাব। তবে গণঅভিযান করে মানুষের মনে ভীতি সৃষ্টি করতে চাই না।