বাগেরহাট ডিবি পুলিশ অভিযান চালিয়ে আন্তজেলা মোটরসাইকেল চোরচক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। পরে তাদের দেওয়া তথ্যমতে ক্রেতাদের কাছ থেকে তিনটি চোরাই মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে।

আজ শনিবার দুপুরে জেলা পুলিশ অফিসে সংবাদ সম্মেলনে বাগেরহাটের পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হক এ তথ্য জানিয়েছেন।

পুলিশ সুপার জানান, গতকাল শুক্রবার রাতে বাগেরহাট কেন্দ্রীয় বাস ট্যার্মিনাল থেকে ডিবি পুলিশের সদস্যরা সন্দেহজনক গতিবিধির দেখে মো. রাজু হাওলাদার (২৪) নামের এক যুবককে আটক করে। আটক রাজু বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলা সদরের রায়েন্দা পাঁচরাস্তার মোড়ের কামরুলের গ্যারেজের মেকানিক।

আটকের পর রাজু ডিবি পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন, তিনি আন্তজেলা মোটরসাইকেল চোরচক্রের সদস্য। একই উপজেলার পূর্ব রাজাপুর গ্রামের তার নেতা মাওলানা ইউসুফ মুন্সির চাহিদা মতো ২০১৭ সাল থেকে বাগেরহাটের বিভিন্ন উপজেলা থেকে মোটরসাইকেল চুরি করে তার কাছে পৌঁছে দিতেন। পরে ইউসুফ মুন্সি চোরাই মোটরসাইকেলগুলো কাগজপত্র ছাড়াই বিক্রি করে তাকে ভাগের টাকা দিতেন।

পুলিশ সুপার আরও জানান, এ তথ্য জানার পর রাতেই ইউসুফ মুন্সিকে তার বাড়ি থেকে আটক করা হয়। আটকের পর ইউসুফ মুন্সি নিজেকে গেজেটভুক্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা বলে পরিচয় দিয়ে নির্দোষ দাবি করেন। পরে আটক রাজুকে সামনে আনার পর মোটরসাইকেল চুরির সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। পরে এই দুজনের দেওয়া তথ্যে ওই রাতেই ২০১৭ সালে চুরি করার পর বিক্রি করে তিনটি চোরাই মোটররসাইকেল শরণখোলার বিভিন্ন এলাকার ক্রেতাদের কাছ থেকে উদ্ধার করে। গ্রেপ্তারকৃত রাজুর নামে বাগেরহাটের বিভিন্ন থানায় আটটি মামলা রয়েছে।

পুলিশ জানায়, উদ্ধারকৃত তিনটি মোটরসাইকেলের মধ্যে ২০১৭ সালের ৮ নভেম্বর মোরেলগঞ্জ উপজেলার দৈবজ্ঞহাটি কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপক গোলাম মোস্তফিজুর রহমানের বাইকটি সিঁড়িরুম থেকে এবং একই দিন রামপাল উপজেলার ভাগা বাজার থেকে দুলাল হাওলাদারের বাইকটি চুরি করে রাজু। একই বছরের ২০ সেপ্টেম্বর বাগেরহাট শহরের আমলাপাড়া থেকে ঔষধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি শেখ সোহাগ হোসেনের বাইকটি চুরি করেন বাজু। এই তিনটি বাইকের প্রকৃত মালিকদের খুঁজে পেয়েছে পুলিশ। এই দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বিকেলে আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এই চোর সিন্ডিকেটের গডফাদারসহ জড়িতদের গ্রেপ্তার ও আরও চোরাই মোটরসাইকেল জব্দ করা সম্ভব হবে। এরই মধ্যে বাগেরহাট সদর থেকে প্রথম আলোর প্রতিনিধি ইনজামামুল হক ও যমুনা টিভির প্রতিনিধি শেখ ইয়ামিন আলীর মোটরসাইকেল চুরি হয়। এছাড়া ফকিরহাট উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আওয়াল মনির মোটরসাইকেলটিও চুরি হয়েছে। এমনভাবে বাগেরহাট জেলা থেকে গত ছয় মাসে অর্ধশতাধিক মোটরসাইকেল চুরি হলেও পুলিশ চোর সিন্ডিকেটদের আটক করতে পারে। এবারের এই দুই চোর আটকের পর পুলিশ ধারণা করছে চোর সিন্ডিকেটের ব্যাপারে তথ্য পাবে।

জেলা পুলিশের এই সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার ছাড়াও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধও প্রশাসন) মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেড কোয়াটার) মো. মিজানুর রহমান, ওসি ডিবি রেজাইল করিম, ওসি সদর কে এম আজিজুল ইসলামসহ সাংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন