বাঙালির স্বাধীনতার বীজ রোপিত হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণে – আ,ন,ম তরিকুল ইসলাম

দ্বারা zime
০ মন্তব্য 141 দর্শন

 

আজ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ, বাঙালি জাতির স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের এক অনন্য দিন। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালীন পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠীর রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে অসীম সাহসিকতার সাথে রেসকোর্স ময়দানে লাখো জনতার উদ্দেশে বজ্রকণ্ঠে যে ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদান করেন তা ছিল মূলত বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ। ৭ মার্চের ভাষণের হাত ধরেই বাঙালি জাতি পেয়েছিল স্বাধীনতা ও ১ টি স্বাধীন ভূখণ্ড বাংলাদেশ। বাঙালি জাতির স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ দেয়া হলেও মূলতঃ ৭ মার্চের ভাষণই ছিল স্বাধীনতার বীজ বপনের দিন। লেখার শুরুতেই আমি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি….. বাঙালী জাতির মুক্তি আন্দোলনের মহানায়ক, বাংলা ও বাঙালির হাজার বছরের আরাধ্য পুরুষ, বাঙালির নিরন্তন প্রেরণার চিরন্তন উৎস, বিশ্বের লাঞ্ছিত-বঞ্চিত-নিপীড়িত মানুষের মহান নেতা, বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা, স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের স্হপতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রতি।

 ইতিহাসবিদ জ্যাকব এফ ফিল্ড কর্তৃক সম্পাদিত, “We Shall fight on the Beaches: The Speeches That Inspired History” উপশিরোনাম নামক গ্রন্থটিতে মানব সভ্যতার গত আড়াই হাজার ( ৪৩১ খ্রী…১৯৮৭) বছরের ইতিহাস সৃষ্টিকারি বিশ্বনেতৃবৃন্দের ঐতিহাসিক ৪১ টি ভাষনের অন্যতম হিসাবে অর্ন্তভূক্ত হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের অবিস্মরণীয় ভাষণটি ।

৭১ এর মার্চের ৭ তারিখে দেওয়া সেই ভাষনটি এবার রাজনীতির এই যে মহাকাব্য, এই ভাষনটি এবার ইউনেস্কো কর্তৃক “World Documentary Heritage ” হিসাবে ” Memory of The World International Registar ” এ অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। আমরা গর্বিত, ইউনেস্কোকে ধন্যবাদ জানাই। তবে আমি মনে করি, বংগবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণটি ছিল পৃথিবীর শোষিত – বঞ্চিত -নিপীড়িত মানুষের সার্বজনীন মুক্তির একটি দলিল গ্রন্থ, তাই পৃথিবীর লাঞ্চিত, বঞ্চিত, নিপীড়িত মানুষের মনের মধ্যে অনেক আগেই জায়গা করে নিয়েছে। এটি হচ্ছে ইউনেস্কোর আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি মাত্র।প্রাচীনকাল থেকে আজ পর্যন্ত মানব সভ্যতার এই তালিকাভুক্ত ৪২৭টি ঐতিহ্যের অন্যতম বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের এই ভাষণ । আমি যতটুকু দেখেছি ৪২৭ টি দালিলিক ঐতিহ্যের মধ্যে ভাষণ মাত্র একটি, তা বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ।

 আজকে অনেকের কথা আসতে পারে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের কথা আসতে পারে, আমেরিকার কৃষ্ণাঙ্গ ও মানবাধিকার নেতা মার্টিন লুথার কিং এর কথা আসতে পারে, দক্ষিণ আফ্রিকার কালো মানুষের অধিকার আদায়ের নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার কথা আসতে পারে, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটনের কথা আসতে পারে , আসতে পারে পন্ডিত জওহরলাল নেহেরু র কথা, মাহাত্ন গান্ধীর কথা আসতে পারে, চার্চিলের কথা আসতে পারে, প্যাট্রিক হেনরির কথা আসতে পারে, আসতে পারে কেনেডির কথা , আসতে পারে নেতাজী সুবাস বসুর কথা। কিন্তু আমি বলবো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চে দেওয়া ১৮ মিনিটের ১১০৫ শব্দের ভাষণটি হচ্ছে পৃথিবীর অদ্বিতীয় একটি ভাষণ।

 ৭ মার্চের ভাষনের (১৮ মিনিটে ১১০৫ শব্দের এই ভাষণে তার) যদি শব্দ চয়ন দেখি, যথা শব্দের ব্যবহার, তার বাচন ভঙ্গি, কন্ঠস্বরের অনায়াস নিয়ন্ত্রণ সবকিছু দিয়ে অনবদ্য এক ভাষণ। কোনো প্রকার শব্দের পুনঃউচ্চারণ ও বাহুল্যবর্জিত এবং রাজনৈতিক ক্যারিশমেটিক উপস্থাপনা, শব্দচয়ন ও স্বতঃস্ফূর্ত বাক্য বিন্যাসে গাঁথা একটি মহাকাব্য। স্পষ্ট, শানিত, ক্ষুরধার বক্তব্য শক্তিশালী ভাষা, আবেগ, যৌক্তিকতা, বক্তা ও শ্রোতার মাঝে অসম্ভব শক্তিশালী এক অর্নিবচনীয় যোগসুত্র রচনা করা, মানুষের হ্রদয়তন্তীকে আন্দোলিত করা এই ভাষণ, তাই স্রোতাকে আজও শিহরিত করে এই ভাষন। পৃথিবীতে আর কোনো ভাষণ কখনো কোথাও এতোবার শোনা হয়নি। এই ভাষনে স্পষ্ট মুজিব জনগনের আর জনগন মুজিবের। তিনি একমাত্র এবং অবিসংবাদিত নেতা। এই ভাষন শুধু তাই ঐতিহাসিক নয়, ইতিহাস সৃষ্টিকারী , এই ভাষণ কালজয়ী, অবিস্মরনীয়, অবিনশ্বর , যেনো বিন্দুতেই সিদ্ধু ।

বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণে উল্লেখ করেছেন ……..

i. পাকিস্তানি রাষ্ট্রের সাথে বাঙালিদের দ্বন্দ্বের স্বরূপ উপস্থাপন করেছেন,

ii. সামরিক আইন প্রত্যাহার ও জনগণের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা বলেছেন,

iii. গোলাগুলি ও হত্যা বন্ধ করে সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়ার কথা বলেছে,

iv. তাঁর দীর্ঘ ২৩ বছরের আন্দোলন, সংগ্রাম ও তার প্রেক্ষাপট ব্যক্ত করেছেন,

v. বাঙালির বঞ্চিত হবার ইতিহাস ব্যক্ত করেছেন,

vi . মানুষের আশা, স্বপ্ন আকাংখা, তাদের ক্ষোভকে ব্যক্ত করেছেন,

vii. ন্যায্যতার প্রশ্নে অটল থেকেছেন,

viii. মানুষের অধিকার আদায়ে অবিচল থেকেছেন,

ix. শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমস্যা সমাধানে তাঁর সর্বাত্নক চেষ্টার কথা ব্যক্ত করেছেন,

x. বলেছেন আমি প্রধান মন্ত্রিত্ব চায় না, দেশের মানুষের অধিকার চায় ,

xi. যৌক্তিক দাবিকে ব্যক্ত করেছেন,

xii. বাঙালির
অর্থনেতিক মুক্তি, রাজনৈতিক মুক্তি ও সাংস্কৃতিক মুক্তির কথা ব্যক্ত করেছেন,

xiii. অভিষ্ট লক্ষ্য অর্জনের পথ প্রদর্শন করেছেন,

xiv . বলেছেন যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকো,

xv. জনসমুদ্রের সেই মানুষকে তিনি জনযুদ্ধের সকল প্রস্তুতির নির্দেশনা দিয়েছেন,

xvi. সারা বাংলায় প্রতিরোধ গড়ে তোলার নির্দেশ দিয়েছেন,

xvii. বলেছেন, ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তোলো,

xviii. বাঙ্গালিকে সর্বোচ্চ ত্যাগের জন্য প্রস্তুত করেছেন, বলেছেন রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরও দিবো,

xix. শত্রুর মোকাবিলায় গেরিলা যুদ্ধের কৌশল শিখিয়েছেন,

xx. জানান দিয়েছেন, মরতে যখন শিখেছি, তখন বাঙালি কে আর কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না,

** কত বড় সাহস আর দূরদর্শী হলে এসব বলতে পারেন, তা ভাবলেই গা শিউরে ওঠে।
(i) তিনি একদিকে পাকিস্তানি জান্তাকে হুঁশিয়ার করলেন এই বলে যে, ” সাত কোটি মানুষকে দাবায়া রাখতে পারবা না। (ii). একই সঙ্গে লাখো বাঙালিকে তাতিয়ে তোলেন, শাণিত করেন তাঁদের সাহস এবং নিরস্ত্র বাঙালিকে শত্রুর আঘাতে প্রতিঘাত করার পথ বাতলে দিয়ে বলেন, ” জীবনের তরে রাস্তাঘাট যা যা আছে সবকিছু, আমি যদি হুকুম দেবার নাও পারি, তোমরা বন্ধ করে দেবে। আমরা ভাতে মারব, পানিতে মারব “।

স্বাধীনতার ঘোষনার জন্য উন্মুখ জাতি এক দিকে, আরেকদিকে বিছিন্নবাদীতার দায় চাপিয়ে দিয়ে অত্যাচারী শাসকের নির্মমতা ও নৃশংসতা এবং বিশ্বের সহমর্মিতা থেকে বঞ্চিত হয়ে সংগ্রামে ব্যর্থ হবার সম্ভাবনা…….এই দুই বিপরীতমূখি স্রোতের মাঝখানে দাড়িয়ে বঙ্গবন্ধু তার অসীম সাহস, প্রজ্ঞা , দূরদর্শীতা, ২৩ বছরের সংগ্রামের অভিজ্ঞতা, বাংলা আর বাংলার জনগনের প্রতি তার অগাধ বিশ্বাস, আস্হা আর প্রগাঢ় ভালোবাসা নিয়ে ত্রিকালদর্শী মহানায়কের মতো ডাক দিয়েছেন:

” এবারের সংগ্রাম, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম,
এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম “।

অসীম ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অমিত শক্তির উৎস ও বাঙালি জাতির বজ্র কঠিন ঐক্যের মূলমন্ত্র ছিল বংগবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ।
ইতিহাস সাক্ষী যে, একজন বঙ্গবন্ধুর তর্জনীই একটা নিদ্রিত জাতির বুকে সাহস সঞ্চার করিয়ে বাঘের গর্জন দিয়ে, যার যা কিছু আছে তাই নিয়েই সংগ্রাম করতে শিখিয়েছিল। ঐক্যবদ্ধ হওয়ার মাধ্যমে বৃহৎ পরাশক্তিকেও যে কাবু করে দেয়া যায়, বাঙালিদের সেই কৌশলই শিক্ষা দিয়েছিলেন গোপালগঞ্জের ছোট্ট সেই খোকা। তাইতো বলতে চাই:

” হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি হে ক্ষণজন্মা নেতা,
তোমার জন্যই পেয়েছি মোরা প্রাণের স্বাধীনতা।
তুমি না হলে বাংলাদেশ হতো না হে চিরঞ্জীব নেতা,
তাই বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশ একই সুতোই গাঁথা “।

বৈষম্যের শিকার পরাধীন বাঙ্গালি জাতিকে বৈষম্যের হাত থেকে রক্ষার জন্য সংগ্রাম দীর্ঘ দিনের। কোনো সংগ্রামে কোনো নেতাই সফল হতে পারেননি। শেখ মুজিবুর রহমান বংগবন্ধুই সেই মানুষ, সেই নেতা, যিনি বৈষম্যের নির্মম শিকার বাঙ্গালি পরাধীন জাতিকে সস্বস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যেমে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। আমরা পেয়েছি স্বাধীন সার্বভৌম একটি রাষ্ট বাংলাদেশ, তাই তিনি বাংলাদেশের জাতির পিতা।

পৃথিবীখ্যাত আরও অনেক ভাষণ রয়েছেন কিন্তু ৭ মার্চের এই ইতিহাস সৃষ্টিকারী ভাষণটি পৃথিবীতে একমাত্র ভাষন, যে ভাষনের মধ্য দিয়ে পৃথিবীতে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছে। তাই ৭ মার্চের ভাষণ পৃথিবীর ইতিহাসের শ্রেষ্টতম ভাষণ। এই ভাষন বাংলাদেশের স্বাধীনতার অমর মহাকাব্য, আর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেই মহাকাব্যের অমর কবি। বাংলাদেশের গর্বিত নাগরিক হিসাবে তার প্রতি জানাই অতল শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা আর অশেষ ভালোবাসা।

 ৭ মার্চের ভাষণের আগে নানা মুনির নানা মত উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধু তাঁর চিরচেনা ভঙ্গিতে লাখো জনতার সামনে যে ইতিহাসখ্যাত দূরদর্শী ও সময়োপযোগী ভাষণ দেন, তার প্রেরণা তিনি পান বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের কাছ থেকে। বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর ” কিছু স্মৃতি কিছু কথা ” বইয়ে লিখেছেন, বাসায় গিজগিজ করছে মানুষ। বেগম মুজিব সবাইকে তাঁদের ঘর থেকে বাইরে যেতে বললেন। ঘরে তখন বঙ্গবন্ধু, বেগম মুজিব আর শেখ হাসিনা। তিনি বললেন, তুমি ১০ টা মিনিট শুয়ে রেস্ট নাও। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষায়, ‘আমি মাথার কাছে, মা মোড়াটা টেনে নিয়ে আব্বার পায়ের কাছে বসলেন। মা বললেন, মনে রেখো তোমার সামনে লক্ষ মানুষ। এই মানুষগুলোর নিরাপত্তা এবং তারা যেন হতাশ হয়ে ফিরে না যায়, সেটা দেখা তোমার কাজ। কাজেই তোমার মনে যা আসবে তাই তুমি বলবা। কারও কোনো পরামর্শ দরকার নেই। তুমি মানুষের জন্য সারা জীবন কাজ করো, কাজেই কী বলতে হবে তুমি জানো। এত কথা, এত পরামর্শ কারও কথা শুনবার তোমার দরকার নেই। এই মানুষগুলোর জন্য তোমার মনে যেটা আসবে, সেটা তুমি বলবা। সত্যিই বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা জাতির জনক বাঙালি জাতিকে সবচেয়ে কাংখিত ও দূর্লভ সেই স্বাধীনতা উপহার দিয়েছেন এই ঐতিহাসিক ভাষনের মধ্য দিয়ে।

** মহামানব জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম এবং সীমাহীন ত্যাগ-তিতিক্ষার মধ্য দিয়ে তিনি বাঙালি জাতির রাজনৈতিক মুক্তি নিশ্চিত করেছেন কিন্তু আমাদের অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তির সংগ্রাম চলমান। জাতির জনকের সুযোগ্য কন্যা,
বাঙালির আশা-আকাঙ্ক্ষার একমাত্র বিশ্বস্ত ঠিকানা, বাঙালির আস্হা ও নির্ভরশীলতার প্রতীক, বাঙালির বিশ্বজয়ের স্বপ্নসারথী, ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার, বিশ্বনন্দিত নেতা আমার পূজনীয় ও পরম শ্রদ্ধেয় নেত্রী, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় প্রত্যয়, গভীর দেশপ্রেম এবং জাদুকরী, দূরদর্শী ও গতিশীল নেতৃত্বে দেশ আজ দূর্বার গতিতে উন্নতির পথে এগিয়ে চলেছে, বিশ্বের কাছে উন্নয়নের বিস্ময় হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে । সেদিন আর বেশি দূরে নেই জাতির জনকের স্বপ্ন ” সোনার বাংলা ” হবেই এদেশ ইনশাআল্লাহ। এভাবে বলতে পারি:

” Bangabandhu founded Bangladesh, while his daughter Prime Minister Sheikh Hasina is working relentlessly to save it. She is completing the incomplete works of Bangabandhu. Under her dynamic leadership Bangladesh is moving ahead gradually and has already made remarkable progress in different sectors. Bangladesh is now often mentioned as a role model for its development
Prime Minister Sheikh Hasina is committed to take Bangladesh forward through the path of prosperity which Bangabandhu dreamt of “.

** ইতিহাস বিকৃত আর ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত করে বঙ্গবন্ধুকে বাঙালির হৃদয় থেকে মুছে ফেলা যায়নি, যাবে না। ইতিহাস দেয় না তেমন কিছু করতে। ইতিহাস নিজের অঙ্গ নিজে করে না ছেদন। ইতিহাস কারও নির্দেশে রচিত হয় না। ইতিহাস তার নিজস্ব গতিতেই চলে। ইতিহাসের সত্য রক্ষার খাতিরে ইতিহাসই বঙ্গবন্ধুকে ধরে রাখবে।

** বাঙালি জাতীয়তাবাদ, বাঙালি জাতির পিতা ও মহান মুক্তিযুদ্ধ— এগুলো সবই মীমাংসিত বিষয়। এগুলো নিয়ে আলোচনার কোনো সুযোগ নাই, নিরপেক্ষতার কোনো সুযোগ নেই, কোনো প্রকার আপোষের ‍সুযোগ নেই। তাই আমি মনে করি, জীবিত বংগবন্ধু থেকে মৃত বংগবন্ধু অনেক বেশি শক্তিশালী। তিনি ছিলেন- তিনি আছেন, তিনি থাকবেন বাঙালির ভাবনায়-চেতনায়-বিশ্বাসে, তিনি আমাদের প্রতিটি অণু-পরমাণুর অংশীদার। তাইতো কবি লিখেছেন-
” যতকাল রবে পদ্মা, মেঘনা গৌরী, যমুনা বহমান

ততকাল রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান “।

পরিশেষে বলতে চাই, আজকের ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে এই যে আয়োজন, আলোচনা তখনই সফল হবে ,যখন বঙ্গবন্ধুর যে জীবন আদর্শ– সেই জীবন আদর্শ প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম আমরা ধারন করতে পারবো, লালন করতে পারবো ও বহন করতে পারবো। তবে আমার দৃঢ় বিশ্বাস, বাংলা ও বাঙালি যতদিন থাকবে, বঙ্গবন্ধু একইভাবে প্রজ্বলিত হবেন এবং হবেনই ইনশাআল্লাহ প্রতিটি বাঙালি হৃদয়ে, প্রতিটি মুক্তিকামী ও শান্তিকামীর হৃদয়ে।

** যতই মিথ্যাচার আর ইতিহাস বিকৃতির অপচেষ্টা করা হোক না কেন , আমি বলি তোমার প্রকাশ হোক, কুহেলিকা করি উদঘাটন, সূর্যের মতন। ঠিক তেমনটাই হচ্ছে। তাই শুধু বলতে চাই , মহাকালের মহানায়ক কখনো যে বিস্মৃত হওয়ার নয় এবং কালের যাত্রার ধ্বনি-প্রতিধ্বনিতে প্রতিনিয়ত সোচ্চার উচ্চারণে জাগ্রত থাকেন, মৃত্যুঞ্জয়ী বঙ্গবন্ধু হচ্ছেন তারই অনিন্দ্যসুন্দর উপমা– তিনি যে মৃত্যুঞ্জয়ী। জাতির পিতার প্রতি আবারও বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপনপূর্বক আমার পছন্দের এক কবিতা দিয়ে শেষ করছি l” এই ইতিহাস ভুলে যাব আজ, আমি কি তেমন সন্তান? যখন আমার পিতার নাম শেখ মুজিবুর রহমান ” ।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু ।

লেখক: আ,ন,ম তরিকুল ইসলাম, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা (উপসচিব),ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন ও সাবেক নেতা, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।

 





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন