সেবা পরম ধর্ম আর সেই ব্রত নিয়ে দিনের সারাটি দিন মানুষকে সেবা দিযে যাচ্ছেন সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম-বার ।অনেকে মনে করেন যে শুধু চিকিৎসক রাই মানুষকে সেবা দিতে পারেন আর কোন পেশার মানুষ সেবা দিতে পারেন না। কিন্তু এ ধারনা সম্পূর্ণ ভূল। কারন,চিকিৎসক তো শুধু মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিকে পারেন তার বাইরে সেবা চিকিৎসক রা দিতে পারেন না সাধারণত।আবার আমরা যদি শিক্ষা গুরুর দিকে আসি তাহলে দেখা যাবে শিক্ষক রা মানুষ গড়ার কারিগর, তাঁদের হাতে হাজার হাজার ছাত্র মানুষের মত মানুষ হয়ে দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করছেন। কিন্তু শিক্ষক কিন্তু লেখা-পড়া সংক্রান্ত বিষয় ছাড়া অন্য কোন বিষয়ে মানুষকে সেবা দিতে পারেন না সাধারণত। কিন্তু বাংলাদেশ পুলিশ এমন একটি পেশা যেখান থেকে আপনি সকল মানুষকে পুলিশি সেবা দিতে পারেন। ধরেন আমাদের সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম-বার এঁর কথা বলি। তিনি প্রতি দিন সকাল ৯ টায় অফিসে আসেন। অফিসে এসে তিনি তাঁর দপ্তরের বিভিন্ন শাখার প্রধান দের ডেকে বিভিন্ন বিষয়ে খোজ খবর নেন ও প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র থাকলে সেগুলে স্বাক্ষর করে ছেড়ে দেন। এর পর জেলার আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে  তিনি জেলার ৮টি থানার অফিসার ইনচার্জ দের কাছে আপডেট চান কোথায় কি অপরাধ ঘটেছে বা কতটা আসামী ধরেছে ইত্যাদি বিষয়ে।

বেলা ১১ টার পর থেকে পুলিশ সুপার তার সিসি টিভিতে দেখতে পান আশাশুনি-কালিগঞ্জ -শ্যামনগর-দেবহাটা-তালা-পাটকেলঘাটা থেকে বিভিন্ন পেশার মানুষ নিরুপায় হয়ে তাদের সমস্যা নিয়ে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের অতিথি কক্ষে বসে আছেন।

তাদের মধ্যে  কেউ বীর মুক্তিযোদ্ধা, কৃষক, কেউ,কেউ ব্যবসায়ী,কেউ চাকুরী জীবি, কেউ রাজনীতিবীদ ,কেউ কোন  অসহায় স্কুল ছাত্রীর মা, আবার কেউ সাংবাদিক।পুলিশ সুপারের সাথে দেখা করতে হলে নিচের তলায় অভ্যার্থনা রুম থেকে আগত ব্যক্তিদের নাম,ঠিকানা,মোবাইল নাম্বার,কি জন্য দেখা করবেন ইত্যাদি বিষয়ে একটি চিরকুট দিয়ে থাকে উপরে পাঠানো হয়।সেই স্লিপটি পুলিশ সুপারের গেটে দায়িত্ব রত পুলিশ কে দেখাতে হয়  তখন সেই স্লিপ টি নিয়ে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য পুলিশ সুপারের টেবিলে রেখে দেন আর বলেন স্যার ওমুক ব্যক্তি আসছেন আপনার সাথে দেখা করতে চান। তখন পুলিশ সুপার সিসি ক্যামেরায় দেখে বৃদ্ধ ও অসহায় মানুষদের আগে তার রুমে ঢুকতে দেন।

পুলিশ সুপারের কক্ষে প্রবেশ করেই এক বৃদ্ধ হাও মাও করে কেঁদে  উঠলেন আর বল্লেন স্যার, আমার মেয়ে বখাটে দের উৎপাতে স্কুল কলেজে যেতে পারেনা।

আবার কোন অসহায় বাবা পুলিশ সুপার কে বলেন, স্যার উমুক প্রভাবশালী ব্যক্তির ছেলে আমার মেয়ের সাথে সম্পর্ক করে আমার মেয়ের আপত্তিকর ভিডিও ধারন করেছে,আমার মান সন্মান সব শেষ স্যার, আমি পুলিশকে জানালে ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেবে বলে হুমকি দেয়….. আমাকে বাঁচান স্যার।

আবার কোন সংখ্যালগু পরিবারের লোক এসে পুলিশ সুপার কে বলছে স্যার আমার বসতবাড়ির থাকার জমিটাও এক ভূমি দস্যু জোর করে নিয়ে নেচ্ছে ।

আবার কোন ব্যবসায়ী প্রয়োজনীয় চেক ও ডকুমেন্ট নিয়ে পুলিশ সুপারের কাছে এসে বলছেন স্যার উমুক বড় সুদ খোর আমার আসল টাকা দেওয়ার পরেও সুদের টাকার জন্য চাপ দিচ্ছে।

আবার অনেকে এসে পাওনা টাকা আদায় হচ্ছেনা বলে পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ নিয়ে আসেন ।আবার কেউ চাকুরী নেবে বলে দালালের কাছে টাকা দিয়েছেন, দালাল সে টাকা আর ফেরৎ দেয়না।

সমস্যা গ্রস্ত এমন ব্যক্তিরা প্রতি নিয়ত আসেন সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম-বার এঁর কাছে। পুলিশ সুপার এমনই একজন মানবিক অফিসার যে তিনি ধৈয্য করে সকলের সমস্যার কথা শোনেন এবং সংশ্লিষ্ট থানার ওসি বা জেলা ডিবির ওসি কে নির্দেশ দেন এই সমস্যা গ্রস্ত ব্যক্তির সমস্যা টি সমাধান করে দেন।

মানুষ যখন থানায় গিয়ে তার কাঙ্খিত সেবা না পায়,দালালের খপ্পরে পড়ে নি:স্ব হয়ে যায়, তখন সে পুলিশ সুপার কে শেষ ভরসাস্থল মনে করে তাঁর অফিসে আসেন সেবা নেওযার জন্য।

এতগুলো সমস্যা গ্রস্ত মানুষের কথা শুনতে শুনতে কখনো কলারোয়া  থানার ওসি ফোন দিয়ে বলেন স্যার, কলারোয়ায় ত্রিপোল মার্ডার হয়েছে।

তখন এই মানবিক পুলিশ সুপার সব কাছ রেখে সোজা চলে যান সেই ঘটনাস্থলে। বেড়ে যায় আরো দূশ্চিন্তা।ঘটনাস্থলে গিয়ে আবার পুলিশ সুপার শোকসন্তপ্ত পরিবার কে শান্তনা দিয়ে বলেন দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে ও ন্যায় বিচার করা হবে। পুলিশ সুপার কথা দিয়ে কথা রাখেন। ঠিক ২ দিনের মধ্যে ক্লুলেস মামলার রহস্য উদঘাটন করে আসামীদের আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হন।

আবার অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ে চাঞ্চ পেয়েছে টাকার জন্য ভত্তি হতে পারছেনা, ,,এধরনের শিক্ষার্থীরা পুলিশ সুপারের কাছে গেলেই তাদের কে নিজের পকেট থেকে আর্থিক সহযোগীতা প্রদান করেন মানবতার ফেরিওয়ালা  এসপি মোস্তাফিজুর রহমান ।

শুধু উপরোক্ত সেবা দিয়েই বসে নেই পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম-বার। করোনা পরিস্থিতির প্রথম ধাপে ও দ্বিতিয় ধাপে তিনি কর্মহীন মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে জেলা পুলিশের নিজস্ব অর্থায়নে তিনি চাল-ডাল-আলু-তেল এসব খাদ্য সামগ্রী পৌছে দিয়েছেন। করোনার রিপোর্ট পজিটিভ আসলেই সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য নিয়েই পুলিশ সুপারের নির্দেশনা মোতাবেক সাতক্ষীরা থানা পুলিশ করোনা আক্রান্তদের বাড়ি লক ডাউন করে দিয়ে আসছে। এতে কি হচ্ছে ঐ এলাকার মানুষ করোনার ছোবল থেকে রক্ষা করছে।এছাড়া করোনা প্রতিরোধে পুলিশ সুপার পরিবহন শ্রমিক দের মাঝে মাস্ক বিতরণ করেছেন এবং প্রত্যেক টি থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন “নো মাস্ক ,নো সার্ভিস” পদক্ষেপ হাতে নেওযার জন্য।  

আবার কয়েকদিন আগে ঘুর্ণীঝড় ইয়াস আসলো হানা দিলো আশাশুনি ও শ্যামনগর থানার উপকূলীয় এলাকায়। এসংবাদ পেয়ে পুলিশ সুপার শ্যামনগর থানা পুলিশ ও আশাশুনি থানার পুলিশ কে নির্দেশ দিয়েছেন বানভাসি মানুষদের উদ্ধার করে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসতে।পুলিশ সুপারের নির্দেশনা মোতাবেক পুলিশ সব সময় আশ্রয় কেন্দ্রের মানুষের সাহায্য সহযোগীতা করে যাচ্ছেন।পুলিশ সুপার তাঁর মোবাইল টি দিন-রাত কখনো সুইচ অফ করতে পারেন না শুধু সাতক্ষীরা জেলার মানুষের সেবা দেওয়ার জন্য।

তাই বলবো পুলিশ সম্পর্কে আপনার দৃষ্টি ভঙ্গি পাল্টান। দুটো একটা অকেজো পুলিশ সদস্যদের বদনামের দায়ভার এ বাহিনী নেবেনা ।বাংলাদেশ পুলিশের অর্জন অনেক। মহান মুক্তিযুদ্ধে পাঁক হানাদার বাহিনীকে লক্ষ করে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স থেকে সর্বপ্রথম বুলেট চালিয়েছিলো এই বাংলাদেশ পুলিশ।তাই আসুন, পুলিশ কে জনগণের পুলিশ হতে আমরা সহযোগীতা করি।

লেখক : মো: নিয়াজ ওয়াহিদ-জিমি,  সিটিজেন জার্নালিঁষ্ট সাতক্ষীরা এন্ড প্রকাশক আপডেট সাতক্ষীরা ডটকম।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন