ফাইভ-জি প্রযুক্তি ও তথ্য প্রযুক্তির সুবিধা এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রচারের অগ্রগতি প্রদর্শনের লক্ষ্যে আজ রাজধানীতে তিন দিনব্যাপী ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলা’ শুরু হয়েছে। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) ‘বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার প্রযুক্তির মহাসড়ক’ প্রতিপাদ্য নিয়ে আয়োজিত এই মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের উদ্যোগে এই ইভেন্টে ডিজিটাল প্রযুক্তি খাতের সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান উভয়ই অংশ নিচ্ছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়াারম্যান একেএম রহমতউল্লাহ, ডাক মন্ত্রণালয়ের সচিব নূর-উর-রহমান, হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের সিইও ঝাং ঝেংজুন উপস্থিত ছিলেন।

ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলার অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হলো ডিজিটাল প্রযুক্তির অগ্রগতি ও উদ্ভাবনকে আলোকপাত করা, উপযুক্ত মানবসম্পদ নিশ্চিত করা, জনগণ ও উন্নত ডিজিটাল প্রযুক্তির মধ্যে একটি সেতু নির্মাণ করা এবং ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ প্রচারণার অগ্রগতি প্রদর্শন করা।

অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রচারণা চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাফল্যের পরে ভারত ২০১৪ সালে এই ধরনের প্রচার ঘোষণা করেছিল, এরপরে মালদ্বীপ ২০১৫ সালে এবং পাকিস্তান ২০১৯ সালে এই ধরনের প্রচারণার ঘোষণা দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল ডিভাইস রফতানি করে এমন একটি দেশে রূপান্তরিত হয়েছে, বাংলাদেশ এখন নাইজেরিয়া এবং নেপালে ল্যাপটপ রফতানির পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মোবাইল ফোন রফতানি করছে। আমরা খুব শীগগিরই মাদারবোর্ডগুলো রফতানি করব।’

আইএসপি’সহ মোট ৮২টি সংস্থা ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট, ট্রিপল প্লে-প্রযুক্তি (একক ক্যাবলে ল্যান্ড ফোন, ইন্টারনেট এবং ক্যাবল টিভি সংযোগ), মোবাইল অ্যাপস, প্যারেন্টাল নিয়ন্ত্রণ এবং অন্যান্য প্রযুক্তি প্রদর্শন করছে। সরকার সারাদেশে ডিজিটাল সুরক্ষা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করতে কাজ করছে, তাই ডিজিটাল নিরাপত্তার বিভিন্ন দিক তুলে ধরে মেলা প্রাঙ্গণে বিনামূল্যে দর্শনার্থীদের মাঝে বুকলেট বিতরণ করা হচ্ছে।

আইওটি, রোবোটিকস, বিগ ডেটা বা ব্লক চেইন থেকে মানুষ যাতে সুবিধা পেতে পারে, সেজন্য সরকার ফাইভ-জি প্রযুক্তির জন্য একটি ‘রোডম্যাপ’ তৈরির কাজ করছে। তিনি বলেন, মেলায় আগত দর্শনার্থীরা- https//www.digitalbangladeshmela.org.bd/ এ ওয়েবসাইটে নিবন্ধনের মাধ্যমে বিনামূল্যে অ্যাক্সেস পেতে সক্ষম হবেন।

মেলায়, স্যামসং, ওয়ালটন, সিম্ফনি এবং অন্যান্য সংস্থাগুলোর মতো প্রযুক্তি জায়ান্টরা তাদের পণ্য প্রদর্শন করছে। এছাড়াও, মোবাইল ফোন অপারেটরদের সহযোগিতায় বিভিন্ন প্রযুক্তি বিক্রেতারা ফাইভ-জি প্রযুক্তি প্রদর্শন করছে। তাছাড়া মেলায় টেলিমেডিসিনের পাশাপাশি শিশু প্রোগ্রামিং এবং রোবোটিক শিক্ষাও দেয়া হচ্ছে।

এছাড়া জেডটিই, হুয়াওয়ে, নোকিয়া ও এরিকসন ফাইভ-জি প্রযুক্তির পাশাপাশি লাইভ টেলিকাস্টের বিভিন্ন মাত্রা প্রদর্শন করছে এবং বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ব্যবহারের মাধ্যমে টেলিমেডিসিন ও এটিএম পরিষেবা পরিচালিত হবে।

দেশ-বিদেশের মন্ত্রীগণ ও বিশেষজ্ঞরা মেলায় অংশ নিচ্ছেন এবং ভবিষ্যতে সম্ভাব্য প্রযুক্তিগত গন্তব্য সম্পর্কে সেমিনারে মতবিনিময় করছেন। সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো প্রায় ২৫টি স্টল, ২৯টি মিনি প্যাভিলিয়ন এবং ২৮টি প্যাভিলিয়নে ডিজিটাইজেশন ক্ষেত্রে তাদের অগ্রগতি তুলে ধরছে।

এছাড়াও, মেলায় আলাদা একটি বঙ্গবন্ধু কর্নার করা হয়েছে, যেখানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্মগুলো ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে তুলে ধরা হচ্ছে।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন