ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, শারদীয় দুর্গোৎসবে কোনো ধরনের সহিংসতার আশঙ্কা নেই। তবে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশের যথেষ্ট প্রস্তুতি রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (০৩ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, পূজায় কোনো সহিংস ঘটনার গোয়েন্দা তথ্য আমাদের কাছে নেই। আপনারা জানেন ঢাকা মহানগরীর মধ্যে পরপর পাঁচটি বোমা হামলা হয়েছিল, যা ছিল পুলিশের ওপর জঙ্গিদের হামলা। হামলায় সংশ্লিষ্ট টোটাল টিমটা আমরা ধরতে পেরেছি এবং বাকিদের সবাই আমাদের নজরদারিতে রয়েছে। ওইদিক থেকে একটা জঙ্গি হামলার যে আশঙ্কা ছিল, কিন্তু আমরা মনে করি সেটি এখন আর নেই।

তিনি বলেন, যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য পূজামণ্ডপে আমাদের কন্ট্রোল রুমসহ সব জায়গায় আলাদা ফোর্স মোতায়েন থাকবে। পূজায় কোনো ধরনের নাশকতার আশঙ্কা নেই। তারপরেও কোথাও হামলা হলে সেটি মোকাবিলার জন্য আমাদের যথেষ্ট প্রস্তুতি রয়েছে।

রাজধানীতে ২৩৩টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এরমধ্যে চারটিকে বিশেষ মণ্ডপ হিসেবে ধরেছি। এগুলো হচ্ছে- ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির, রামকৃষ্ণ মন্দির, ধানমন্ডি পূজামণ্ডপ ও বনানী সার্বজনীন পূজামণ্ডপ। এ চারটা বিশেষ শ্রেণীর মন্ডপে আমাদের পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। নিরাপত্তার জন্য আর্চওয়ে থেকে শুরু করে সিসিটিভি ক্যামেরাসহ সবকিছু থাকবে।

এছাড়া, ঢাকায় ৫টা বৃহত্তর মন্দির রয়েছে। সেগুলো হলো- সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির, রমনা কালী মন্দির, উত্তরা সার্বজনীন পূজামণ্ডপ, বসুন্ধরা সার্বজনীন পূজামণ্ডপ এবং কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটের পূজামণ্ডপ। এগুলোতেও সিসিটিভিসহ আমাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।

এছাড়া, ২ তারকা চিহ্নিত ৮৬টি পূজামণ্ডপ, এক তারকা বিশিষ্ট ৭৭টি এবং সাধারণ শ্রেণীর ৬১টি পূজামণ্ডপ রয়েছে। এসব পূজামণ্ডপের নিরাপত্তায় আমাদের যেমন সাধারণ ফোর্স নিয়োজিত থাকবে, তেমনি আয়োজকদের পক্ষ থেকেও পর্যাপ্তসংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন থাকবে।

যেসব পুণ্যার্থীরা আসবেন তাদেরকে তল্লাশিসহ যেসব জিনিস নিয়ে মন্দিরে প্রবেশ নিষেধ তারা যেন সেগুলো নিয়ে প্রবেশ করতে না পারে, এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্তরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

পূজায় এসে ইভটিজিং, মাদক নিয়ে নাচানাচি প্রতিরোধ এবং সারা শহরে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার জন্য বিশেষ ব্যবস্থাপনা থাকবে। যেসব পূজামণ্ডবে প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতিসহ ভিভিআইপিরা আসবেন; সেসব মণ্ডপে এখন থেকেই আমাদের সার্ভিলেন্স রয়েছে। প্রতিটি স্থাপনা সুইপিং করা হবে। এছাড়া, রুফটপ থেকে শুরু করে পুরো রাস্তাতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।

এছাড়া, বিসর্জনের দিন নির্দিষ্ট রুট ব্যবহার করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিসর্জনস্থলে পৌঁছাবে। সুশৃঙ্খলভাবে বিসর্জন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

ঝুঁকিপূর্ণ কোনো মণ্ডপ রয়েছে কি না, জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমাদের কাছে ঝুঁকিপূর্ণ মণ্ডপের এমন কোনো তথ্য নেই। ২৩৩টির বাইরেও পারিবারিক যে সব পূজামণ্ডপ রয়েছে, তারা চাইলে আমরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেব।

ওসি রদবদল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা একটা রুটিন ওয়ার্ক। আমরা মনে করছি যারা ছিলেন, তাদের চেয়েও বেটার কেউ আছে। তাদেরকে দায়িত্ব দিলে মানুষ আরও ভালো সেবা পাবে। সেভাবেই আমরা চেইঞ্জ করছি। আমি প্রথম দিনই বলেছিলাম, মানুষের সেবা করার মানসিকতা যাদের নেই, তারা ডিএমপিতে থাকতে পারবেন না।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন