সাতক্ষীরা শহরের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের উদ্যোগে খেটে-খাওয়া দিনমজুররা ঘরে বসেই পাচ্ছেন খাদ্য সামগ্রী

দ্বারা zime
০ মন্তব্য 192 দর্শন

 

সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য সারাদেশে ২৬ শে মার্চ থেকে আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের সকল সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান,নিত্য প্রয়োজনীয় দোকানপার্ট ছাড়া আর সকল প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে।এমনটি দেশে কোন চায়ের দোকানও খোলা নেই।

তারই অংশ হিসাবে সাতক্ষীরা জেলাতেও সকল প্রতিষ্ঠান বন্ধ,মার্কেট বন্ধ এমন কি সকল পরিবহন ও বন্ধ। এতে করে দিন মজুর ও খেটে খাওয়া মানুষদের জীবন যাত্রা অচল হয়ে পড়েছে। আবার তাতো কোন কোন পরিবারের সদস্যরা ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে। তারা বাহিরে বের হলে ম্যাজিস্ট্রেটের জরিমানার কবলে পড়তে হচ্ছে। ফলে সাতক্ষীরার খেটে খাওয়া দিন মজুরদের তিন বেলা পেটের ভাত জোগাড় করা সম্ভব হচ্ছেনা।

আর এমন পরিস্থিতিতে সাতক্ষীরার খেটে খাওয়া দিন মজুরদের পাসে দাঁড়িয়েছেন শহনের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান মেহেদী সুপার মার্কেটের স্বত্বাধিকারী ও বর্ণমালা একাডেমির পরিচালক ও পিএন বিয়াম ল্যাবরেটরী স্কুলের টিচার শামিমা পারভীন রত্না,সাতক্ষীরা শিল্পকলা একাডেমির নিত্য শিক্ষক নাহিদা পারভীন পান্না ও তার ভাই ইঞ্চি সিমেন্ট কোম্পানির ডিভিশনাল অফিসার মেহেদী হাসান ও তাদের পরিবারবর্গ।

শনিবার সকাল থেকে দেখা যায় শহরের মেহেদী সুপার মার্কেটস্থ নিজ বাড়িতে কয়েক মন চাল, ডাল, পিয়াজ,সয়াবিন তেল নিয়ে প্যাকেট করছেন পরিবারের সদস্যরা মিলে।দৃশ্যটি দেখে মনে হচ্ছে বিকালে মনে হয় মিলাদ মাহফিল হবে সেজন্য তাবারক প্যাকেট করছে।কিন্তু ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেলো একটি প্যাকেটে ২ কেজি চাল,১ কেজি ডাল,১ কেজি পিয়াজ,১ কেজি আলু  ও ১ লিটার তেলের বোতল দিয়ে একটি করে কাপড়ের প্যাকেটে ভরে প্যাকেট করা হচ্ছে।

প্রতিবেদক জানতে চাইলে সাতক্ষীরার রুনা লাইলা নামে খ্যাত সংগীত শিক্ষক বর্ণমালা একাডেমীর পরিচালক শামিমা পারভীন রত্না বলেন, শহরের খেটে খাওয়া দিনমজুর রা তিন বেলা পেট ভরে ভাত খেতে পারছেন না তাই আমি ও আমাদের পরিবারের সবাই মিলে এই উদ্যোগ হাতে নিয়েছি।তিনি বলেন আমার বেতনের টাকা দিয়ে চাল কিনেছি,আমার হাসবেন্ড প্রায় ১ লক্ষ টাকা দিয়েছে, আমার ছোট বোন  নিত্য শিক্ষক নাহিদা পারভীন পান্না আর্থিক সহযোগিতা করেছেন, আমার ভাই মেহেদী তার ব্যবসা থেকে দেড় লক্ষ টাকা দিয়েছে, আমার মেয়ের ঘটে জমানো ছিলো ১০ হাজার টাকা সেটাও দিয়েছে এবং আমার বাবা সওকাত হোসেন ৫০ হাজার টাকা দিযেছেন এই মহতি উদ্যোগ বাস্তবায়নের জন্য।

তিনি বলেন সেই টাকা একত্রিত করে আমরা কয়েক মন চাল,পিয়াজ,ডাল,আলু ও সয়াবিন তেলের পট কিনেছি।আর সেগুলো প্যাকেট করে প্রায় ৭০০ টি প্যাকেট করেছি।তিনি বলেন আমাদেন একটি প্যাকেটের খাবারে অন্তত একটি পরিবার দুই দিন পেটভরে খেতে পারবে। আর আমরা অসহায় মানুষদের জন্য  এটুকু করতে পেরেই অনেক আনন্দিত।  

পরের দিন সকাল থেকে একটি প্রাইভেট কার যোগে শামিমা পারভীন রত্না ও তার ভাই মেহেদী শহরের মুনজিতপুর এলাকা, সুলতালপুর এলাকা, মুন্সিপাড়া, কাটিয়া,টাউনবাজার, ইটাগাছা এলাকায় পরিচিত মানুষদের কাছ থেকে গরীব ও অসহায় মানুষদের তথ্য নিয়ে তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ২ টি করে প্যাকেট দিয়ে আসেন।প্রথম দিনে ৪০০ টি প্যাকেট অসহায় ও দিন মজুরদের মাঝে বিতরণ করেন তারা।খাবার বিতরণ কালে তারা দিনমজুর দের হাতে ১ টি করে মাস্ক ও বিতরণ করেন।

এবিষয়ে মেহেদী সুপার মার্কেটের স্বত্বাধিকারী ও ইঞ্চি সিমেন্ট কোম্পানির ডিভিশনাল অফিসার মেহেদী আপডেট সাতক্ষীরা কে জানান প্রথম দিনে ৪০০ প্যাকেট বিতরণ করেছি আর অবশিষ্ট আছে ৩০০ প্যাকেট। সেগুলো আমরা পর্যায়ক্রমে প্রকৃত অসহায় মানুষদের মাঝে বিতরণ করবো। তিনি বলেন,আমরা ১৯৯৬ ব্যাচ একত্রিত হয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ হিসাবে আমরা সবাই চাঁদা তুলে চিকিৎসক দের মাঝে পিপিই বিতরণ করবো।তিনি আরো বলেন এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের অর্ফপেডিক্স ডাক্তার হাফিজউল্লাহ আমাদের কে বড় আকারে ডনেট করবেন বলে জানিয়েছেন।

 





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন