বাংলাদেশ পুলিশের নতুন আইজিপি হিসাবে নিয়োগ পাচ্ছেন র‌্যাবের মহাপরিচালক ড. বেনজীর আহমেদ, বিপিএম (বার)। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। এছাড়াও ডিজি র‌্যাবসহ অতিরিক্ত আইজি পর্যায়ের ৫টি গুরুত্বপূর্ণ পদে পদোনতি দিয়ে নতুন ভাবে সাজানো হচ্ছে পুলিশ প্রশাসন।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, আগামী ১৩ এপ্রিল বর্তমান আইজি জাবেদ পাটোয়ারীর মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। তার স্থলে র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদকে পুলিশের ৪০ তম আইজিপি হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বর্তমান আইজিপির পক্ষে দেশের করোনা পরিস্থিতির মধ্যে একটি মহল চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের জন্য তদবির করলেও শীর্ষ পর্যায় আমলে নেয়নি।

জানা যায়, প্রায় আড়াই লাখ সদস্যের এ বাহিনীর শীর্ষ পদটির জন্য প্রত্যেক ব্যাচ থেকে একাদিক কর্মকর্তা আইজিপি হওয়ার জন্য আগ্রহী থাকলও বয়সের কারণে সুযোগ থাকছে না। তাই এ পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিলে অধীনস্তদের পদোনতি বঞ্চিত হতে হয়। বর্তমান আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী ও পূর্ববর্তী আইজিপি একে এম শহীদুল হক বিসিএস ‘৮৪ ব্যাচের কর্মকর্তা। বর্তমান আইজিপি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেলে বিসিএস ‘৮৫ ও ৮৬ ব্যাচের কেউ আইজিপি হওয়ার সুযোগ থাকে না। এছাড়া পুলিশ বাহিনীতে বেনজীর আহমেদ একজন সুদক্ষ, পেশাদারিত্ব, উচ্চশিক্ষিত নন্দিত কর্মকর্তা হিসেবে সমাদৃত। বর্তমান সরকারের দীর্ষ ১১ বছরের শাসনামলে পুলিশ হেডকোয়াটার্স, ডিএমপি ও র‌্যাবের শীর্ষ পদে বিভিন্ন সংকটের সময়ে বিশ্বস্ততার সহিত গুরত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে সরকারে আস্থা অর্জন করেছে। বেনজীর আহমেদকে আইজিপি নিয়োগ দিয়ে পুলিশ বাহিনীকে আরো গতিশীল করে ইতিবাচক ইমেজ ফিরিয়ে আনতে চায় সরকার।

এক নজরে ড. বেনজীর আহমেদ, বিপিএম (বার)
ডঃ বেনজীর আহমেদ, বিপিএম (বার) ১৯৬৩ সালে বাংলাদেশের গোপালগঞ্জের একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন উচ্চ শিক্ষিত ব্যক্তি। তিনি এমএ, এমবিএ এবং এলএলবি ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ”ব্যবসায় শিক্ষা”  অনুষদ থেকে ব্যাবসায় প্রশাসনে ডক্টরেট সম্পন্ন করেছেন।

ডঃ বেনজীর আহমেদ ১৯৮৮ সালের ফেব্রুয়ারীতে সহকারী পুলিশ সুপার হিসাবে বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন। পরবর্তীতে তিনি কিশোরগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার হন। তিনি বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করে, তার পেশাদারিত্ব, নিষ্ঠা ও শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ করেছেন। তাঁর পেশাগত প্রচেষ্টায় তিনি বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন, আরও তিনি  উপ-পুলিশ কমিশনার উত্তর – ঢাকা মহানগর পুলিশ, সহকারী পুলিশ মহাপরিদর্শক পুলিশ সদর দপ্তর, উপ-মহাপরিদর্শক(অর্থ) এবং উপ-মহাপরিদর্শক (অ্যাডমিন ও অপারেশন) – পুলিশ সদর দপ্তর, পুলিশ কমিশনার – ঢাকা মহানগর পুলিশ এর দায়িত্ব পালন করেছেন। অধিকন্ত, তিনি সারদা, বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিক প্রধান প্রশিক্ষক এবং টাঙ্গাইলের পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কমান্ড্যান্ট হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেন।

বর্তমানে ডঃ বেনজীর আহমেদ ২০১৫ সালের জানুয়ারী থেকে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন এ এর মহাপরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন ।

ডঃ বেনজীর বসনিয়াতে ইউএন মিশন (ইউএনএমআইবিএইচ) এবং কসোভায় ইউএন মিশন (ইউএনএমআইকে) বাংলাদেশ পুলিশ কন্টিনজেন্ট এর কন্টিনজেন্ট কমান্ডার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি “মিশন ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড সাপোর্ট সেকশন”, পুলিশ বিভাগ, শান্তিরক্ষা অপারেশন বিভাগ, জাতিসংঘের সদর দপ্তর, নিউইয়র্ক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মূখ্য ভুমিকা পালন করেছেন এবং ইউএনডিপিকে ও পুলিশ বিভাগের অফিসার ইনচার্জ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

তিনি দেশ বিদেশ থেকে বিভিন্ন পেশাদার প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেকে অলংকৃত এবং উন্নত করেছেন। উল্লেখযোগ্য হলো: সন্ত্রাসবাদের প্রতি বিস্তৃত সুরক্ষা জবাব, এশিয়া প্যাসিফিক সেন্টার ফর সিকিউরিটিজ স্টাডিজ, হাওয়াই, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, গোয়েন্দা বিশ্লেষণ ও মূল্যায়ন, চালস স্ট্রুট বিশ্ববিদ্যালয়, ক্যানবেরা, অস্ট্রেলিয়ান ক্রাইম কমিশন এবং অস্ট্রেলিয়ান ফেডারেল পুলিশ, সন্ত্রাসবাদেও অ্যান্টি মানি লন্ডারিং ও ফিনান্সিং, আইএমএফ এর আঞ্চলিক প্রশিক্ষণকেন্দ্র, সিঙ্গাপুর, এইচআর ম্যানেজমেন্ট, ইউএন প্রশিক্ষন কেন্দ্র নিউইয়র্ক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র । তিনি বিভিন্ন দেশে আইন প্রয়োগকারী ইস্যু সংক্রান্ত বিবিধ সেমিনার ও কর্মশালায় অংশ গ্রহন করেন।

যেমন পুলিশিং এর বিভিন্ন কর্ম ক্ষেত্রে সন্ত্রাসবাদ ও সন্ত্রাস অর্থায়ন অনুসন্ধান গোয়েন্দা সংস্থার, সাংগঠনিক সংস্কার, পুনর্নিমান, এবং পুনর্গঠন ও পরিবর্তন প্রভৃতি ক্ষেত্রে  তার অগাধ দক্ষতা, বিশেষজ্ঞতা এবং আধিপত্য রয়েছে।

ইউনাইটেড নেশন তাকে ইউএন পুলিশ বিভাগ পর্যালোচনা করতে বিশ্বব্যাপী স্বতন্ত্র প্যানেলে বিশেষজ্ঞ সদস্য হিসেবে নিযুক্ত করেছিলেন। (ডিসেম্বর ২০১৫-মে ২০১৬) ডঃ বেনজীর তার অসামান্য এবং গৌরবময় পেশাদারিত্ব এবং উৎসর্গের জন্য বিভিন্ন প্রশংসাসূচক, পুরস্কার এবং পদক পেয়েছেন, যার মধ্যে মহাপরিদর্শক পুলিশ অনুকরনীয় গুড সার্ভিস ব্যাজ, কসভো-২০০৩-এ বসনিয়া-শান্তিতে পরিসেবার জন্য জাতিসংঘ পদক, ইউএন সদর দপ্তর, ইউএসএ-২০০৯ এবং  ২০১১,২০১২,২০১৪,২০১৬,২০১৮ এবং ২০১৯ এ অসামান্র বাংলাদেশ পুলিশ পদক,(বিপিএম) উল্লেখযোগ্য। মহাপরিচালক দেশ  ও বিদেশ অক্ষে গুরুত্বপুর্ন সামাজিক সংস্থার সাথে ও যুক্ত। তিনি আইএসিপি ( ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন  অফ চিফস অফ পুলিশ) ইউএসএ, ইন্টারন্যাশনাল পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন (আইপিএ) যুক্তরাজ্যও এর একজন গর্বিত সদস্য।

কমিশন এবং অস্ট্রেলিয়ান ফেডারেল পুলিশ, সন্ত্রাসবাদেও অ্যান্টি মানি লন্ডারিং ও ফিনান্সিং, আইএমএফ এর আঞ্চলিক প্রশিক্ষণকেন্দ্র, সিঙ্গাপুর, এইচআর ম্যানেজমেন্ট, ইউএন প্রশিক্ষন কেন্দ্র নিউইয়র্ক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তিনি বিভিন্ন দেশে আইনপ্রয়োগকারী ইস্যু সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি সেমিনার ও কর্মশালায় অংশ নিয়েছিলেন। সন্ত্রাস ও সন্ত্রাস অর্থায়ন, গোয়েন্দা সংস্থা, সাংগঠনিক সংস্কার, পুনর্নিমান, এবং পুনর্গঠন ও পরিবর্তন ব্যবস্থার মতো পুলিশিং এর বিভিন্ন কর্ম ক্ষেত্রে তার অগাধ দক্ষতা, বিশেষজ্ঞতা এবং আধিপত্য রয়েছে।

ইউনাইটেড নেশন তাকে ইউএন পুলিশ বিভাগ পর্যালোচনা করতে বিশ্বব্যাপী; স্বতন্ত্র প্যানেলে; বিশেষজ্ঞ সদস্য হিসেবে নিযুক্ত করেছিলেন। (ডিস্মেবর ২০১৫-মে ২০১৬) ডঃ বেনজীর তার অসামান্য এবংগৌরবময় পেশাদারিত্ব এবং উৎসর্গেও জন্য বিভিন্ন প্রশংসাসুচক, পুরস্কার এবং পদক পেয়েছেন, যার মধ্যে মহাপরিদর্শক পুলিশ অনুকরনীয় গুড সার্ভিস ব্যাজ, কসভো-২০০৩-এ বসনিয়া-শান্তিতে পরিষেবার জন্য জাতিসংঘ পদক, ইউএন সদও দপ্তর, ইউএসএ-২০০৯ এবং২০১১,২০১২,২০১৪,২০১৬,২০১৮ এবং ২০১৯ এ অসামান্র বাংলাদেশ পুলিশ পদক,(বিপিএম) উল্লেখযোগ্য।

মহাপরিচালক দেশ  ও বিদেশ এ গুরুত্বপূর্ন সামাজিক সংস্থার সাথে ও যুক্ত। তিনি অইএসিপি( ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন  অফ চিফস অফ পুলিশ) ইউএসএ, ইন্টারন্যাশনাল পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন (আইপিএ) যুক্তরাজ্যের একজন গর্বিত সদস্য।

ডঃ বেনজীর আহমেদ একজন অত্যান্ত ভ্রমনপিয়াসু ব্যাক্তি। তিনি জাতীয় দ্বায়িত্ব পালনকালে এবং বিদেশ থাকাকালীন ৫টি মহাদেশের বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমন করেছেন। ব্যাক্তিগত জীবনে ডঃ বেনজীর আহমেদ স্ত্রী জিসান মির্জা  তিন কন্যাকে নিয়ে সুখী জীবনযাপন করছেন।

এছাড়াও পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন), ডিজি র‌্যাব সহ ৫টি অতিরিক্ত আইজিপি পদেও পরিবর্তনের কথা শুনা যাচ্ছে। বর্তমানে অতিরিক্ত আইজিপির ৫টি পদ শূন্য হবে। এতে পুলিশের ‘৯১ ব্যাচের ৫জন কর্মকর্তাকে ডিআইজি থেকে অতিরিক্ত আইজি পদে পদোনতি দিয়ে পদায়ন করা হতে পারে। অতিরিক্ত আইজিপি আবুল কাশেম ও বিশ্বাস আফজাল হোসেন চলতি সপ্তাহেই অবসরে যাচ্ছেন। সম্ভাব্য পদোনতি থালিকায় আছেন ‘৯১ ব্যাচের ডিআইজি রুহুল আমীন, মল্লিক ফখরুল ইসলাম, কামরুল আহসান ও খন্দকার গোলাম ফারুক।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন