এক ক্লান্তিহীন কর্মবীর সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মোস্তফা কামাল

দ্বারা zime
০ মন্তব্য 280 দর্শন

 

গত পৌসু দিনের কথা বলছিলাম; রাত সাড়ে এগারোটা হঠাৎ ফোন আসলো সদর উপজেলার বকচরা গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করবেন সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল(মুরাদ)।

ভালো কথা সরকারি কাজ যতকষ্ট হোক যেতে তো হবেই।গেলাম সেখানে গিয়ে দেখলাম জেলা প্রশাসক বাড়ি বাড়ি গিয়ে ১৫-২০ টি পরিবারের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করছেন।প্রথম দুটো বাড়িতে যেতে ভালোই লাগলো অসহায় মানুষ গুলোর কাজকাম বন্ধ তারা ঠিক মত আয় রোজগার করতে পারছেন না।কিছুক্ষণ হাটতে হাটতে দেখলাম ঘেমে যাচ্ছি। যেহেতু হাটা অভ্যাস নেই।পরে এক পর্যায়ে আমি নিজেই ক্রান্ত হয়ে গেলাম বাট জেলা প্রশাসকের কোন ক্লান্তি নেই।তিনি হেটেই যাচ্ছেন খুব ইজি ভাবে।

এসময় জেলা প্রশাসকের সাথে সদর ইউএনও দেবাশীষ চৌধুরী ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জুবায়ের হোসেন উপস্থিত ছিলেন।আমি ত্রাণ দেওয়ার ভিডিওটি লাইভ করতে চাইছিলাম কিন্তু সেখানে নেটওয়ার্ক না থাকায় লাইভ করতে পারিনি। তবে ভিডিও করেছিলাম পুরো ঘটনাটি।বাসায় ফিরে Update Satkhira নামক পেজে ভিডিও টি পোষ্ট করলাম।

দেখলাম মুহুর্তেই ভিডিও টিতে ১৭৭ লাইক, ৭৬ টি শেয়ার ও ৪৩০০ ভিউয়ার্স হয়েছে এবং জেলা প্রশাসক কে ধন্যবাদ জানিয়ে কমেন্ট করেছেন ১৬ জন।

ঐ দিনের ঘটনা শেষ কয়েকদিন আগে জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল তাঁর স্ত্রী মিসেল লাবলী কামাল কে নিজে শহরের বিভিন্ন এলাকায় খেটে খাওয়া মানুষদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ১০ কেজি চাল,৫ কেজি আলু,পিয়াজ ২ কেজি, ১ লিটার তেল,১ প্যাকেট লবণ ও একটি সাবান দিয়ে এসেছিলেন।

ঐ দিন রাতেই আপডেট সাতক্ষীরা অনলাইন পোর্টালে জেলা প্রশাসক স্ত্রী কে নিয়ে মধ্যরাতে অসহায় মানুষের দ্বারে দ্বারে খাদ্য পৌছে দিচ্ছেন এমন একটি সংবাদ ছাপানো হয়েছিলো।জেলা প্রশাসকের সেই নিউজ টি মুহুর্তেই ১৫০০ মানুষ শেয়ার করে ও লাইক দেন ১৪৯ জন।সুতরাং এ থেকে বোঝা যায় সাতক্ষীরার মানুষের কাছে জেলা প্রশাসক কতটা পছন্দের মানুষ।

বৃহম্পতিবারের কথা কথা বলি। বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল বেলা ১২টার দিকে ফিংড়ি আশ্রায়ন প্রকল্পের ১৬০ টি অসহায় ও দারিদ্র পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন আবার একই দিন জেলা প্রশাসক শহরের বকচরা,কদমতলা,কাটিয়া,হসপিটালের মোড় সহ ইটাগাছা বাজারে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করতে হ্যান্ড মাইক দিয়ে সচেতনতা মুলক প্রচারণা চালান।সেখান থেকে ফিরে এসে জেলা প্রশাসক ডিসি বাংলোতে ফিরে যান।আবার কাল সকালে হয়তো জেলা প্রশাসক কে দেখা যাবে ত্রাণ নিয়ে কোন একটি এলাকার খেটে খাওয়া মানুষদের বাড়িতে অথবা হ্যান্ড মাইক নিয়ে কোন একটি বাজারে মানুষকে সচেতন করছেন আবার হয় তো দেখা যেতে পারে অসাধু দোকানদার দের দ্রব্যমুল্য বৃদ্ধি করার কারনে জরিমানা করতে। সব মিলেই বলা যায় জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল একজন ক্লান্তিহীন কর্মবীর।বীরের ভুমিকায় তিনি সাতক্ষীরা জেলা জেলাকে করোনার ছোবল থেকে মুক্তির জন্য নিরালস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

অপরদিনে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের এক প্রেস নোটে বলা হয়…
করোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলার ৩১ হাজার ৫শটি পরিবারকে সহায়তার জন্য সরকারের দূর্যোগ ব্যবস্হপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের প্রাপ্ত বরাদ্দ থেকে ৩১৫ মেট্রিক টন চাল ও ১২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে।

প্রেস নোটে আরো বলা হয় করোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলার ৩১ হাজার ৫শটি পরিবারের জন্য ৩১৫ মেট্রিক টন চাল ও ১২ লাখ ৭৫ হাজার হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌরসভার মেয়রগণ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের মাধ্যমে তালিকা প্রস্তুত করে এই ত্রাণ সহায়তা কর্মহীন হয়ে পড়া দুস্থ অসহায় মানুষের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছেন।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, করোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ৪৩ মেট্রিক টন চাল ও ১ লাখ ৫৭ হাজার ৫শ টাকা, কলারোয়া উপজেলায় ৩৭ মেট্রিক টন চাল ও ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, তালা উপজেলায় ৩৭ মেট্রিক টন চাল ও ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, আশাশুনি উপজেলায় ৩৭ মেট্রিক টন চাল ও ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা, দেবহাটা উপজেলায় ৩২ মেট্রিক টন চাল ও ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা, কালিগঞ্জ উপজেলায় ৩৭ মেট্রিক টন চাল ও ১ লাখ ৫৭ হাজার ৫শ টাকা, শ্যামনগর উপজেলায় ৩৭ মেট্রিক টন চাল ও ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, সাতক্ষীরা পৌরসভায় ৩৭ মেট্রিক টন চাল ও ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা এবং কলারোয়া পৌরসভায় ১৮ মেট্রিক টন চাল ও ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল বলেন, করোনো সংক্রমণ রোধে বাড়িতে অবস্থান করে সামাজিক দূরত্ব তৈরির বিকল্প নেই। এজন্য কর্মহীন হয়ে পড়া খেটে খাওয়া দিনমজুর ভ্যান-রিক্সা চালক, চায়ের দোকানদারসহ দুস্থদের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর থেকে জেলার ৩১ হাজার ৫শটি পরিবারের জন্য ৩১৫ মেট্রিক টন চাল ও ১২ লাখ ৭৫ হাজার হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌরসভার মেয়রগণ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের মাধ্যমে তালিকা প্রস্তুত করে এই ত্রাণ সহায়তা কর্মহীন হয়ে পড়া দুস্থ অসহায় মানুষের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছেন।

তিনি বলেন, সরকার সাধ্যমত খাদ্য সহায়তা দিচ্ছে। করোনো মোকাবেলায় সকলে বাড়িতে অবস্থান করুন।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন