পুলিশের সঙ্গে কাজ করি, মাদক-জঙ্গি-সন্ত্রাসমুক্ত দেশ গড়ি’ স্লোগানে রাজশাহীতে নানা আয়োজনে পালিত হয়েছে কমিউনিটি পুলিশিং ডে। শনিবার সকালে মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে বের হয় আনন্দ র‌্যালী। বেলুন উড়িয়ে এর উদ্বোধন করেন অতিরিক্ত আইজি আবুল কাশেম ও রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার হুমায়ন কবীর। র‌্যালীতে পুলিশ, কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সদস্য ছাড়াও স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। পরে রাজশাহী কলেজ মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

কমিউনিটি পুলিশিং বাস্তবায়নও একটি চ্যালেঞ্জ বলে উল্লেখ করে অতিরিক্ত আইজি আবুল কাশেম বলেন, ইতোমধ্যেই পুলিশিং কমিউনিটির মাধ্যমে সফলতাও এসেছে। তাই এটিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। কেউ কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির মধ্যে থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার বা অপরাধমূলক কার্মকান্ডে জড়িত রয়েছে কি না তা নজর রাখতে হবে। গুজব প্রতিরোধে কমিউনিটি পুলিশিং কমিটিকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখাতে হবে।’

রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার হুমায়ন কবীর বলেন, কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা আরও জোরদার করা গেলে পুলিশের কাজে তাদের সহযোগিতা যেমন পাওয়া যাবে, তেমনি সমাজে অপরাধ প্রবণতাও কমে আসবে। কমিউনিটি পুলিশ জোরদার হলে সবাইকে নিরাপত্তা দেওয়া যাবে। ছোট ছোট বিরোধ উৎসের সময়ই শেষ করে দিতে পারলে থানায় আর মামলা করতে হবে না।

তিনি আরো বলেন, কমিউনিটি পুলিশিং হলো জনগণের কাছে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে পুলিশের জবাবদিহি করা। দেশের জনগণের সঙ্গে থানা-পুলিশের দূরত্ব কমলেই কমিউনিটি পুলিশিং সফল হবে। অপসংস্কৃতি নিবৃত্ত করাই কমিউনিটি পুলিশিংয়ের কাজ। কমিউনিটি পুলিশ সক্রিয় হলে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদক দ্রব্য, ইভটিজিং ও বাল্য বিয়ে থাকবে না।

পুলিশ কমিশনার হুমায়ন কবীর আরো বলেন, আসলে মূল্যবোধের অবক্ষয় ও সামাজিক অনুশাসন না থাকার পরিনাম কী ভয়াবহ হতে পারে তা আমরা উপলব্ধি করতে পারছি। পারিবারিক ও সামাজিক অনুশাসন ফিরিয়ে আনা, মূল্যবোধ নতুন করে প্রতিষ্ঠা করা-এসব কথা অনেক বলা হয়েছে। কিন্তু কোন কাজ হয়েছে বলে মনে হয় না। তবুও আমরা আশাবাদী এ অবস্থার উন্নতি হবে। পাশাপাশি আমরা পাড়ায়-মহল্লায় নিজ নিজ উদ্যোগে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি করতে পারি। নিজেদের মহল্লা অপরাধমুক্ত রাখতে আমরা আইন-শৃংখলা বাহিনীর সহায়তা নিতে পারি। আর এটা সম্ভব নিজেদের এলাকায় কমিউনিটি পুলিশিং আন্দোলন আরো জোরদার করা। পুলিশের পক্ষে সবকিছুর ওপর নজরদারি রাখা অনেক সময় সম্ভবপর হয়ে ওঠেনা। এ জায়গায় আমরা সহায়তাকারীর ভূমিকা নিতে পারি। মোদ্দাকথা, পাড়ায়-মহল্লায় অপরাধের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার বিকল্প নেই।

আরএমপি ও কমিউনিটি পুলিশিং ফোরাম আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবির। সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সংরক্ষিত আসনের এমপি আদিবা আনজুম মিতা, মহানগর পুলিশিং কমিটির সভাপতি প্রফেসর আব্দুল খালেক, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও রাজপাড়া থানা পুলিশিং কমিটির সভাপতি আজিজুল আলম বেন্টু, রাজশাহী চেম্বারের সভাপতি মনিরুজ্জামান মনি, নগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার ডা: আব্দুল মান্নান, বাগমারা উপজেলা চেয়ারম্যান অনিল কুমার সরকার, কাটাখালি পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলী, মহানগর যুবলীগের সভাপতি রমজান আলী প্রমুখ।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন