বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে বরগুনার তালতলী উপজেলার নয়নাভিরাম শুভসন্ধ্যা সমুদ্র সৈকতে উদযাপিত হয়েছে উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ জোছনা উৎসব। পঞ্চমবারের মতো এ উৎসবের আয়োজন করে বরগুনা জেলা প্রশাসন। উৎসবে অর্ধ লক্ষাধিক জোছনাপ্রমী অংশ নেন।
বরগুনার প্রধান তিনটি নদী পায়রা, বিষখালী ও বলেশ্বর যেখানে সাগরে মিশেছে ঠিক সেখানেই তালতলী উপজেলার স্নিগ্ধ বেলাভূমি শুভসন্ধ্যা সমুদ্র সৈকত। একদিকে সীমাহীন সাগর, আরেকদিকে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট টেংরাগিড়ি। সবমিলিয়ে নদ-নদী আর বন-বনানীর এক অপরূপ সমাহার- শুভসন্ধ্যা সৈকত। এখানেই দিনব্যাপী জলজোছনায় একাকার হয় জোছনাবিলাসী অর্ধলক্ষ মানুষ। জেলার আমতলী ও পাথরঘাটা উপজেলা থেকেও একাধিক লঞ্চে করে উৎসবে যোগ দেন কয়েক হাজার মানুষ।
বেলা ১১টায় বরগুনা নৌবন্দরে আনুষ্ঠানিকভাবে এ জোছনা উৎসবের উদ্বোধন করেন বরগুনার জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ।
পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনাময় বরগুনার নয়নাভিরাম সৌন্দর্যকে দেশ বিদেশের পর্যটকদের কাছে তুলে ধরতে প্রতিবছর এ উৎসবের আয়োজন করা হয়।
দুপুর আড়াইটায় শুভসন্ধ্যা পৌঁছে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বরগুনা-০১ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য অ্যাড. ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু। এরপর উম্মুক্ত সৈকতে দলীয় নৃত্যের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এ উৎসবকে ঘিরে আয়োজন করা হয় দেশীয় খেলাধুলা, বাউল গান, পুঁথি পাঠ, পুতুল নাচ, যাদু প্রদর্শনী, যাত্রাপালা, হয়লা গান, রাখাইন নৃত্য সহ আনন্দ বিনোদনের নানা কর্মসূচি। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে ফানুস উড়িয়ে এবং দ্বীপালী ভাসিয়ে এ উৎসবের সমাপনী ঘোষণা করেন বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী।
এসময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বরগুনা-১ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য জনাব অ্যাভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বরগুনার পুলিশ সুপার মোঃ মারুফ হোসেন,অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ নূর হোসেন সজল, নির্বাহী অফিসার মনিরা পারভীন প্রমুখ।
জমকালো এই অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বরগুনা জেলা প্রশাসক জনাব মোস্তাইন বিল্লাহ। এছাড়াও উক্ত অনুষ্ঠানে জেলার অন্যান্য কর্মকর্তাগণ, কমিউনিটি পুলিশিং ও সুধী সমাজের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতে মনোমুগ্ধকর এক সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত হয়।