পুুুুলিশ সুুুপারের পরিতৃপ্তি:
এসিড দগ্ধ ফাতেমা সুলতানা ও তার দুই কণ্যা জাহেরা, জাকিয়া সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান ফাতেমা সুলতানা। ভালবেসে বিয়ে করেছিল নড়াইল জেলার শাহজাহান মোড়ল(৩৮)কে।
তাদের সংসারে দুটি মেয়ে সন্তান নিয়ে একা একা সংগ্রাম করে যাচ্ছেন ফাতেমা সুলতানা। নেশাখোর স্বামীর অত্যাচার দিন দিন বৃদ্ধি পেতে থাকলে যখন সহ্যসীমা ছাড়িয়ে যায়, তখন নিজের আর দুই মেয়ের জীবন বাচাতে ওই নেশাখোর স্বামী কে তালাক দেয়।
বাবার আর্থিক অবস্থা ভাল নহে। বাবার পক্ষে তাকে বাচ্চা দের সহ রাখা কষ্টসাধ্য। ঢাকায় থাকা এক আত্নীয়র পরিত্যক্ত বাড়িতে বাচ্চাদের নিয়ে থাকেন কোন মতে। মেয়েটি ডিগ্রি পাশ, সংগ্রামী। কিন্তু একটি খারাপ পরিবারে বিয়ে হলে মেয়েদের জীবনে নেমে আসে দুঃখের চরমতম পর্যায়।
ফাতেমার শ্বাশুড়ি সুফিয়া খাতুন(৫৫), নারী জাতির কলংক। হেন কোন নির্যাতন নেই যা তিনি করেননি এ মেয়েটির প্রতি। পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে পালিয়ে বেড়িয়েছেন ৪/৫ টি জেলা। তার দিলে সামান্যতম দয়া দাক্ষিণ্য নেই। পরের মেয়ে যত খুশি নির্যাতন তার নিকট কোন ব্যাপারই না।
মায়ের আস্কারা পেয়ে পুত্র শাজাহান দ্বিগুন উৎসাহে স্ত্রীকে বাচ্চাদের নির্যাতন করতেন।
নির্যাতন থেকে বাচতে ফাতেমা বেগম আশাশুনি চলে আসেন বাচ্চাদের নিয়ে। কিন্তু হায়েনা পথ ছাড়েনা ফাতেমাদের জীবন থেকে। গত ২২/১০/২০১৯ রাত ২১.৪৫ ঘটিকায় হায়েনা শাহজাহান রাতের আধারে এসে বাসার পাশে এসিড নিয়ে ওৎ পেতে থাকে। সুযোগ মত ফাতেমা আর তার ছোট মেয়ে জাকিয়ার গায়ে এসিড মেরে পালিয়ে যায়।
দ্রুতই আসামিকে আইনের আওতায় আনা হয়,আসামি আদালতে স্বীকারোক্তি দেয়। ফাতেমা ও তার মেয়েকে চিকিৎসার জন্য আর্থিক ভাবে সাহায্যের পাশাপাশি উন্নত চিকিৎসার জন্য সার্বিক সহযোগিতা করি।
মহান আল্লাহর রহমতে ফাতেমা ও তার মেয়ে অনেকটাই সুস্থ্য হয়ে তার বাবার সাথে আজ আমার অফিসে দেখা করতে আসে, কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করতে আসে। নিজের পায়ে যেন দাড়াতে পারে বাচ্চাদের নিয়ে, সেজন্য আরো কিছু আর্থিক সাহায্য করি।
মহান আল্লাহ পাক তাদের ভাল রাখুক।
আমার খুব ভাল লাগছে আমার সহকর্মীদের নিয়ে আমরা আমাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে পেরেছি। ফাতেমা আর তার মেয়েকে সুস্থ্য দেখে অনেক ভাল লাগছে। তাদের পরিপূর্ণ সুস্থ্যতার জন্য প্রার্থনা করি।
লেখক : মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম (বার)
পুলিশ সুপার, সাতক্ষীরা।