দেশের করোনা পরিস্থিতি এমন বিপর্যয় ডেকে এনেছে যে করোনায় আক্রান্ত দের মৃত্যু হলে পুলিশ ছাড়া মাটি দেওয়ার কোন লোক নেই। আপনি একটু চিন্তা করে দেখুন রাস্তায় যদি আপনার কোন কাছের মানুষ ট্রাক চাপায় পিষ্ট হয়ে মারা যায় আপনি কি তার মৃত দেহটি রাস্তা থেকে তুলতে যান??  মোটেও যান না। আপনি তার জন্য দুরে দারিয়ে কাঁদেন ঠিকই কিন্তু তার মৃত দেহটি রাস্তা থেকে তুলে আনতে যান না। আপনি জাননা, রাস্তার আসেপাসের মানুষ মোবাইলে ছবি তোলে তারাও লাশের কাছে যায় না। সবাই দুরে দাড়িয়ে অনুসুচনা করে। কিন্তু ঐ ডেড বডিটি কিন্তু রাস্তা থেকে সরাতেই হবে নাইতো রাস্তায় যানচলাচল বন্ধ হয়ে যাবে।আপনি চিন্তা করে দেখুন আপনার আত্মীয়, আপনার সন্তান, আপনার নিকট আত্মীয়েের  রাস্তায় ট্রাক চাপায় মৃত ডেড বডিটি তুলতে কিন্তু সেই পুলিশ কেই ডাকতে হয়।পুলিশ ছাড়া কোন ব্যক্তিই আপনার ঐরকম বিপদে কেউ পাসে এসে দাড়াবেনা। অথচ আপনি এতদিন পুলিশ কে নেগেটিভ চোখে দেখে এসেছেন।

আপনি আরো একটু চিন্তা করে দেখুন আপনি সারাটা রাত কি আরামে ঘুমান অথচ আপনার ঘুমানোর আগে থেকে পুলিশ মশার কামড় খেয়ে সারারাত কিলো ওয়ান ডিউটি করে পুরো শহরের ঘুমন্ত মানুষদের কে নিরাপত্তা দেয়।

আপনি কি কখনো ট্রাফিক পুলিশ কে নিয়ে ভেবেছেন?  একটা ট্রাফিক পুলিশ রোদ বৃষ্টি উপেক্ষা করে দিন-রাত স্যান্ড বাই দাড়িয়ে থেকে আপনাদের যানজট নিরসনে কাজ করে যাচ্ছেন। আপনি কি কখনো ভেবেছেন ঐ ট্রাফিক পুলিশের ফুসফুসের অবস্থাটা কি!!  তার বড় কোন হার্টের অসুখ হলে তার চিকিৎসা করাবে কে?  তার যা বেতন তাতে তো ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া শিখিয়ে কোন রকম দিন চলে। আপনি কি কখনো ভেবেছেন একটা ট্রাফিক পুলিশ যখন ভিআইপি ডিউটি করে তখন তার পা মারতে মারতে এক পর্যায়ে পায়ে ফসকা উঠে যায়। না তা কেনো ভাবতে জাবেন। আপনার গাড়ি ধরলে তো আবার ট্রাফিক পুলিশের গুষ্টি উদ্ধার করে দেবেন কাজে না হলে ও মুখে।

আপনি কি সম্প্রতি সাতক্ষীরা জেলা সহ বাংলাদেশের ৬৪ টি জেলায় করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশ পুলিশের কার্যক্রম দেখেছেন?? না দেখলে মনে করবো আপনার টিভি দেখার বা পত্রিকা পড়ার অভ্যাস নেই। সুতরাং আপনি অন্ধকারে আছেন এখনো আলোর পথ দেখেন নি।কিন্তু আমি দেখেছি এবং প্রতি নিয়ত দেখেই যাচ্ছি। এখন বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে কোন মানুষ মারা গেলে তার আপন পিতা -মাতা এমন কি আত্মীয় স্বজন ও বাড়ি থেকে পালিয়ে চলে যাচ্ছে। পরে থানা থেকে সেই পুলিশ এসেই সেই করোনা আক্রান্ত মৃত ব্যক্তিকে দাফন করছে। আবার পুলিশ এই ভয়ানক কাজ টি করতে করতে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলাতে প্রায় ১৫০ জনের বেশি পুলিশ করোনা আক্রান্ত হয়ে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

তারপরেও গতকাল পুলিশের নবনিযুক্ত আইজিপি ড.বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) এক ভিডিও কনফারেন্সে সকল রেঞ্জ, সকল মেট্রোপলিটন পুলিশ ও সকল জেলার পুলিশ সুপার গণ কে নির্দেশনা দিয়েছেন করোনা পরিস্থিতিতে পুলিশের চলমান সেবা অব্যহত রাখতে হবে।পুলিশ শুধু যে করোনায় মৃতদের দাফন কাজ সম্পন্ন করছে তা কিন্তু নয় পুলিশ লক ডাউন এলাকায় লাল পতাকা উত্তলন করে দিচ্ছেন, খেটে খাওয়া মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বস্তাভর্ত্তি চাল-ডাল-পিয়াজ-তেল ও লবণ পৌছে দিচ্ছেন। সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করতে পুলিশ দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।

তাই পরিশেষে বলতে চাই সেবাই পুলিশের ধর্ম….. এটা এখন বাস্তবে দেখা যায় প্রতিদিন প্রতিটি মুহুর্তে কোননা কোন টিভির পর্দায় বা সোশ্যাল মিডিয়ায়।

লেখক : জিমি, সিটিজেন জার্নালিস্ট ও প্রকাশক আপডেট সাতক্ষীরা ডটকম

 

 





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন