অপেশাদার কোনো পুলিশ বাহিনীতে দরকার নেই বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। বৃহস্পতিবার দুপুরে হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ধ্বংসযজ্ঞ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এ হুশিয়ারি দেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একটি থানায় যখন হেফাজতের নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়েছিল, তখন পুলিশ পরিস্থিতি সামলাতে ব্যর্থ হয়ে থানার ভেতর থেকে মাইকিং করে বলে যে থানা ভবন ছেড়ে অন্য যে কোনো জায়গায় হামলা করুন।
পুলিশের এমন দায়িত্বহীন আচরণের বিষয়ে আইজিপির কাছে ব্যাখ্যা চান স্থানীয় এক সাংবাদিক। উত্তরে আইজিপি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘটনায় পুলিশের পৃথক কমিটি হয়েছে। কেউ যদি মাইকিং করে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ধরনের কাজ করে কেউ পুলিশে থাকতে পারবে না।
তিনি আরও বলেন, পুলিশ কেনো ঘটনা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি সেটা দেখা হচ্ছে। মাইকিং করে পুলিশের আত্মরক্ষার কৌশলকে তিনি অপেশাদার আচরণ বলে মন্তব্য করে বলেন, অপেশাদার পুলিশের দরকার নেই।
বেনজীর আহমেদ বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘটনা আমাদের ৭১-কে মনে করিয়ে দিয়েছে। তারা ওই দিন নারায়ণগঞ্জে সৌরভ নামে এক সাংবাদিককে ধরে ৪ কলেমা পড়িয়ে সে মুসলমান কিনা নিশ্চিত হয়েছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ডের ঘৃণা প্রকাশের ভাষা আমাদের নেই। আমি চাই সবার মাঝে শুভবুদ্ধির উদয় হোক।
বৃহস্পতিবার দুপুরে হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ধ্বংসযজ্ঞ পরিদর্শনকালে ভাংচুরকৃত ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাব ভবন পরিদর্শন শেষে প্রেস ক্লাবে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে এবং বিকাল সাড়ে ৩টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সার্কিট হাউসে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বক্তব্য দেন আইজপি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, পুলিশের স্পেশাল শাখার প্রধান মনিরুল ইসলাম, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান প্রমুখ।
প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রেস ক্লাব ও সুর সম্রাট আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গনকে অনুদান প্রদান করেন আইজিপি। প্রেস ব্রিফিংয়ের আগে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ধ্বংসযজ্ঞগুলো পরিদর্শন করেন।
উল্লেখ্য, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক তাণ্ডব চালায় হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা। তারা বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে হামলা ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।