জনৈক বাদশা মীয়া!!!!!
বাদশা নামটায় বেশ বাহাদুরি রয়েছে। আবার যদি নামের আগে ডা: থাকে তাহলে এর বাহাদুরি তো অনেক । এমনই জনৈক সাহেদ টাইপ বাদশা একটি থানার অফিসার ইনচার্জ কে হুমকি-ধামকি দিয়ে বিভিন্ন বাহাদুরি দেখানোর চেষ্টা করেন। তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করতে গিয়ে ভয়ঙ্কর আরেক শাহেদের সন্ধান পাওয়া যায়। প্রতারণা করে অর্থ আদায় করা এদের মূল ব্যবসা বাস্তবে কোনো পেশা বা ইনকাম নেই। নামের আগে ডাক্তার পদবিও ব্যবহার করতে দেখা যায়।
যদিও ডাক্তারি সার্টিফিকেট নাই কিন্তু আমাদের ইনবক্সে আউট বক্সে জাতিসংঘ মহাসচিব এবং কাবার ইমাম ব্যতীত পৃথিবীর সবার সাথে চোরা টাইপের ছবি পোস্ট করে নিজেকে বর্তমান সময়ের অনেক বড় নেতা প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন।
সাতক্ষীরাসহ কয়েকটি জেলায় কয়েকদিন পর পর সাহেদদের উত্থান ঘটে। ছবির ব্যবসা অর্থাৎ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে চোরা পোচ দিয়ে ছবি তুলে মানুষকে বিভ্রান্ত করে।
ইনার মূল ব্যবসা প্রতারণা এবং বুঝা যাচ্ছে দেশব্যাপী ভালোই একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে। সর্বসাধারণকে এজাতীয় প্রতারক থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।
কেউ যদি আপনাকে জানায় তিনি আপনাকে চাকরি দিতে পারবেন, পদোন্নতি করে দিতে পারবেন, মামলার দালালি করে দিতে পারবেন, আপনার যে কোন মুশকিল আসান করে দিতে পারবেন। তবে আপনি সতর্ক হোন। কারণ যিনি এসব করে দিতে চাচ্ছেন সম্ভব হলে তিনি নিজেই এরকম একটা কিছু হতেন। তার পিতা ছিলেন হাতুড়ে ডাক্তার, কবিরাজি ওষুধ দিয়ে পাইলস সারানোর ভুয়া চিকিৎসা করতেন কিন্তু ছেলে দেখি কয়েক ডিগ্রি এগিয়ে নিজেকে ডাক্তার দাবি করে বসলেন এবং ভুঁইফোড় সংগঠন করে তার নেতা বনে গেলেন।
কেউ এ ধরনের প্রতারকদের খপ্পরে পড়বেন না। ইতোমধ্যে এদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ জমা হয়েছে। বিভিন্ন অফিস-আদালতে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সাথে চোরা ছবি উঠিয়ে নিজেকে বড় মাপের নেতা বানানোর অপচেষ্টা চক্রের সদস্য এরা।
কয়েকদিন আগে গাবুরা এলাকার এক বড় মাপের প্রতারক সাতক্ষীরার অনেক মানুষের কাছ থেকে টাকা পয়সা নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে গেলে জামা কাপড় খুলে নেংটা হয়ে পানিতে সাঁতার কেটে পালিয়ে গেলেন সুন্দরবনের দিকে। এখন আর দেখা যায় না কারো সাথে ছবি তুলতে এবং নতুন কোন প্রতারণার খোঁজ আপাতত পাওয়া যায়নি সাতক্ষীরায়।
আমাদের অফিসে প্রতিদিন অনেক মানুষ এই সকল প্রতারকদের কাছে প্রতারিত হয়ে অভিযোগ করতে আসেন। আইনের দুর্বলতার কারণে অনেক সময় উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয় না কিংবা দীর্ঘসূত্রিতা সৃষ্টি হয়।
উল্লেখিত প্রতারক সম্পর্কে বিস্তারিত অনুসন্ধান অব্যাহত আছে। ইতোমধ্যে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে বিষয়টি জানানো হয়েছে। অনুসন্ধান শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসকল চোরা ছবির ব্যবসায়ী থেকে সবাই সতর্ক থাকুন। এদের অপকর্মের তথ্য জেলা পুলিশকে জানান।
লেখক : মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম-বার, পুলিশ সুপার,সাতক্ষীরা।