মাহফিজুল আক্কাস : পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে গৃহহীন মানুষদের ঈদের উপহার ঘর দেবেন বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) ৩২ হাজার ৯০৪ জন বাস্তহারা, ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষকে দেওয়া হবে প্রধানমন্ত্রীর এই উপহারের জমিসহ ঘর। ভিডিও কনফারেন্সিং এর মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বাস গৃহহস্তান্তর অনুষ্ঠান সফল করার লক্ষ্যে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে প্রেস-কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে সদর উপজেলা ডিজিটাল কনফারেন্স রুমে প্রেস কনফারেন্সে বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাতেমা-তুজ-জোহরা।
প্রেস কনফারেন্সে জানান হয় “বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবেনা” মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ঘোষিত এ নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জেলা ও উপজেলা ট্রাস্কফোর্স কমিটির মাধ্যমে জেলা প্রশাসন সাতক্ষীরা পর্যায়ক্রমে সকল ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের জন্য গৃহ প্রদান কার্যক্রম অতি সফলতার সাথে পরিচালনা করছে। ক্ষুধামুক্ত দারিদ্রমুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সাতক্ষীরা জেলার ৭টি উপজেলার ভূমিহীন, গৃহহীন পরিবার পুনর্বাসনে তালিকা প্রস্তুত করা হয়। এর মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে জেলায় মোট ১৮১৩টি পরিবারকে পুনর্বাসিত করা হয়। বরাদ্ধকৃত একক গৃহের মধ্যে অধিকাংশ গৃহের নির্মাণ কার্যক্রম সমাপ্ত করা হয়েছে এবং বাকী গৃহের নির্মাণ কাজ সমাপ্তির পথে। তৃতীয় পর্যায়ে ৮০৯টি বরাদ্দকৃত গৃহের কার্যক্রম চলমান আছে। তৃতীয় ধাপে ৬৫ হাজারের বেশি পরিবার পাবে এই উপহার । এমন পরিকল্পনা ও কর্মসূচি নিয়েই নির্মাণ কাজ করছে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প। এরইমধ্যে অর্ধেক বাড়ি প্রস্তুত হয়ে গেছে। যারা ঘর পাচ্ছেন, তাদের মাঝে যেন ঈদের আগেই ঈদ আনন্দ বইছে।
পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে এই ঘরগুলো সংশ্লিষ্ট পরিবারের জন্য ঈদের উপহার বলছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, তৃতীয় ধাপে ৬৫ হাজারের বেশি ঘর ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মাঝে হস্তান্তরের পরিকল্পনা ছিল আমাদের।
সে লক্ষ্যেই নির্মাণকাজ চলছে। এরইমধ্যে ৩২ হাজার ৯০৪টি ঘর নির্মাণ হয়ে গেছে। এগুলো ঈদের আগে গৃহহীন ও ভূমিহীনদের মাঝে হস্তান্তর করা গেলে তাদের ঈদ আনন্দে নতুন মাত্রা যুক্ত হবে। আগামী ২৬ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে এসব ঘর হস্তান্তর করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জানা গেছে, প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের তুলনায় তৃতীয় ধাপে কাঠামোতে আসছে বেশ পরিবর্তন। বাড়ানো হয়েছে নির্মাণ ব্যয়। যে কারণে ঘরগুলো মজবুত ও দীর্ঘস্থায়ী হবে। আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের এরই মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে এক লাখ ১৭ হাজার ৩২৯টি ঘর দেওয়া হয়েছে। দুই শতাংশ জমির মালিকানাসহ সেমিপাকা ঘর করে দেওয়া হয়েছে তাদের। এর সঙ্গে রান্নাঘর ও টয়লেট ছিল। আঙিনায় হাঁস-মুরগি পালন ও শাক-সবজি চাষেরও জায়গা ছিল।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় তৃতীয় পর্যায়ে ৮৫টি ঘর নির্মিত হচ্ছে। আগামী ২৬ এপ্রিল সদর উপজেলার বরাদ্দের ৮৫টির মধ্যে ৪৩টি গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ ঘর হস্তান্তর করা হবে।
এ উপলক্ষে সদর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রেস কনফারেন্সে বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ¦ মো. আসাদুজ্জামান বাবু, সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এস.এম মারুফ তানভীর হোসাইন সুজন, সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. ইয়ারুল হক, সদর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার শেখ সহিদুর রহমান প্রমুখ। প্রেস কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক প্রথম আলো’র নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জী, দৈনিক ইনক্লাব পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি আক্তারুজ্জামান বাচ্চু, দৈনিক সুপ্রভাত পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার ও সাপ্তাহিক ইচ্ছেনদী পত্রিকার বার্তা সম্পাদক মাহফিজুল ইসলাম আককাজ, মাই টিভির জেলা প্রতিনিধি ফয়জুল হক বাবু, দৈনিক পত্রদূত পত্রিকার নিজস্ব প্রতিনিধি মো. আব্দুর রহিম, বাংলা ট্রিবিউন পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি মো. আসাদুজ্জামান সরদার, দৈনিক সবুজ নিশান পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি মীর মোস্তফা আলী, ঢাকা টাইমস’র জেলা প্রতিনিধি এম বেলাল হোসাইন, দৈনিক দৃষ্টিপাত পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার মীর আবুবক্কর, গ্লেবাল টিভির জেলা প্রতিনিধি রাহাত রাজা, অনলাইন পোর্টাল দ্য এডিটরস’র প্রতিনিধি রিজাউল ইসলাম ও দৈনিক কালের চিত্র পত্রিকার ইউনিয়ন প্রতিনিধি জাহিদ হাসানসহ সদর উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।