বাংলাদেশের পরিস্থিতি শ্রীলঙ্কার মতো হবে’ গতকাল বিএনপি মহাসচিবের এমন বক্তব্যের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতি কখনোই শ্রীলঙ্কার মতো হবে না। মির্জা ফখরুল ইসলাম ক্ষমতায় যেতে দিবাস্বপ্ন দেখছেন। এদেশের মানুষ বিএনপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। দেশের মানুষ বিশ্বাস করে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার হাতেই দেশের অগ্রগতি হচ্ছে। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রিয়তা তুঙ্গে।

বুধবার (১১ মে) দুপুরে খুলনা শিপইয়ার্ডে বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের জন্য নির্মিত একটি ফ্লোটিং ক্রেন, দুটি টাগবোট, ছয়টি হাইস্পিড বোট এবং নারায়ণগঞ্জের ডিইডব্লিউ নির্মিত একটি ইনশোর প্যাট্রোল ভেসেল হস্তান্তর অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অত্যন্ত দক্ষ। তারা যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারে। এবার ঈদের সময় দেখুন, কোথাও কোনো ত্রুটি হয়নি। কোনো জায়গায় কোনো ছিনতাই হয়নি। কাজেই আমি মনে করি আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে যারা কাজ করেন, তারা দেশপ্রেম নিয়ে কাজ করেন। আর এ জন্যই এটা সম্ভব হয়েছে। যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার তারা সক্ষমতা রাখে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে যে কোস্টগার্ডের যাত্রা শুরু হয়েছিল, তা এখন সত্যিকার অর্থে গার্ডিয়ান অব সি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের বাণিজ্যের ৯০ শতাংশই সমুদ্রপথে সম্পন্ন হয়। এ ছাড়া প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সমুদ্রসীমা নির্ধারিত হওয়ায় বঙ্গোপসাগরে বিশাল সমুদ্রসম্পদের ভান্ডার আমাদের অধিকারে এসেছে। এগুলো আহরণ এবং সমুদ্রগামী জাহাজগুলোর নিরাপত্তা বিধানে বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বহুমুখী পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। কোস্টগার্ডের জন্য নির্মিত এসব বোট হস্তান্তরের মাধ্যমে তাদের সক্ষমতা আরও বাড়বে।

তিনি আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রেখে এসব বোট নির্মাণের জন্য খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেডকে ধন্যবাদ জানান।

খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে খুলনা শিপইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর এম সামছুল আজিজের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত অ্যান ভেন লিউইন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন, খুলনা নেভাল এরিয়ার কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল এম আনোয়ার হোসেন ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের মহাপরিচালক রিয়ার অ্যাডমিরাল আশরাফুল হক চৌধুরী।

খুলনা শিপইয়ার্ড সূত্র জানায়, টাগ বোটদ্বয় ৩৫০০ টন ওজনের যেকোনো জাহাজের বার্থিং/আন বার্থিং, টোউ, পুশ/পুল অপারেশন ছাড়াও ফায়ার ফাইটিং, অন্য জাহাজের দুর্ঘটনাকালীন সহযোগিতা, ডুবন্ত জাহাজের উদ্ধার অভিযান ইত্যাদি জরুরি কাজ সম্পাদনে ব্যবহৃত হবে। বোটদ্বয় বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের সব জাহাজের বিভিন্ন অফশোর সাপোর্ট কার্যাবলি সম্পাদনে সক্ষম হবে।

এ ছাড়া অন্য বোটগুলো দ্বারা উপকূলীয় এলাকায় নিয়মিত টহল প্রদান, চোরাচালানবিরোধী অভিযান, মাদক পাচারবিরোধী অভিযান, দুর্ঘটনা-পরবর্তী উদ্বার ও অনুসন্ধান কার্যক্রম, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ-পরবর্তী উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা পরিচালনা, পরিবেশদূষণ প্রতিরোধ ইত্যাদি কার্যক্রমসহ বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের সার্বিক অপারেশনাল সক্ষমতা বাড়ানো সম্ভব হবে।

উক্ত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব  মোঃ আখতার হোসেন; ঢাকাস্থ নেদারল্যান্ড দুতাবাসের রাষ্ট্রদূত  অ্যান ভেন লিউইন; খুলনা নেভাল এরিয়া কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল এম. আনোয়ার হোসেন, এনজিপি, পিসিজিএম, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি; বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের মহাপরিচালক রিয়ার অ্যাডমিরাল  আশরাফুল হক চৌধুরী; খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেডের কমোডোর এম শামসুল আজিজ (এল), এনজিপি, পিএসসি, বিএন, এমডি; কেএমপি’র পুলিশ কমিশনার  মোঃ মাসুদুর রহমান ভূঞা; খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি ড. খঃ মহিদ উদ্দিন, বিপিএম (বার); পিটিসি, খুলনার ডিআইজি (কমান্ড্যান্ট)  মহাঃ আশরাফুজ্জামান, বিপিএম-সহ খুলনাস্থ সামরিক ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, সরকারী ও বেসরকারী প্রশাসনিক শীর্ষ কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এরপর বিকেল ০৩ঃ০০ ঘটিকায় খুলনার সার্কিট হাউজ সম্মেলন কক্ষে খুলনা রেঞ্জ, খুলনা মেট্রোপলিটন ও খুলনাস্থ বিভিন্ন ইউনিটের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের  স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা জননেতা আসাদুজ্জামান খান, এম.পি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব  মোঃ আখতার হোসেন।মতবিনিময় সভায় খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ মাসুদুর রহমান ভূঞা; খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি ড.খ:মহিদ উদ্দিন বিপিএম-বার, খুলনার ডিআইজি (কমান্ড্যান্ট)  মহাঃ আশরাফুজ্জামান, বিপিএম,খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত এডমিন একেএম নাহিদুল ইসলাম, খুলনার এসপি মোহাম্মদ হেলাল হোসেন,সাতক্ষীরার এসপি মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম-বার, বাগেরহাটের এসপি কেএম আরিফুল হক,চুয়াডাঙ্গার এসপি জাহিদুল ইসলাম, যশোরের এসপি প্রলয় কুমার জোয়াদ্দার সহ খুলনা রেঞ্জের দশ জেলার পুলিশ সুপারগণ মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন