১৪ বছর আগে ঢাকার পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর সদর দফতরে নৃশংস হত্যাকাণ্ডে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে। শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বনানী সামরিক কবরস্থানে নিহতদের প্রতি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ।
এছাড়া শ্রদ্ধা জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ড. এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ শাহীন ইকবাল, বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল আব্দুল হান্নান, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসানসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতা ও নিহতের স্বজনরা।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের দিন বিএনপি চেয়ারপারসনের গতিবিধি ছিল সন্দেহজনক। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার চূড়ান্ত রায় কার্যকরের অপেক্ষায় রয়েছে। এ বছরের মধ্যেই এই মামলার চূড়ান্ত রায় কার্যকর করতে পারবো বলে আমরা প্রত্যাশা রাখি। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সকালবেলা ঘুম থেকে ওঠেন না। কিন্তু সেদিন তিনি সকালবেলায় ঘুম থেকে উঠে গাড়িতে করে দুদিনের জন্য কোথায় যেন চলে যান। এই ঘটনা সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও সরকারকে উৎখাতের চক্রান্ত ছিল।’
সরকার ক্ষমতা নেওয়ার ৫০ দিনের মাথায় এ ধরনের ঘটনা সরকারকে উৎখাত করার প্রচেষ্টা বলে উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘যারা আওয়ামী লীগ সরকারকে পছন্দ করে না, যারা আওয়ামী লীগ সরকারকে দেখতে চায়নি তাদের ষড়যন্ত্রের অংশই এ ধরনের ঘটনা।’
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের শ্রদ্ধা জানানোর শেষে সাংবাদিকদের বলেন, ‘নৃশংস হত্যাকাণ্ডের যথাযথ বিচার স্বজনরা পেয়েছেন। তারা যেন এ বিচারের সন্তুষ্ট হতে পারেন এ বিষয়ে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানাবো।’
তিনি বলেন, ‘আমার জানামতে বেশিরভাগ শহীদ পরিবারের ধারণা, বিচার প্রক্রিয়া ও তদন্ত প্রক্রিয়ার মধ্যে সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা নেই। এত বড় একটা ঘটনা ঘটে গেলো– এর আগে কিছু জানা গেল না, এটা অবশ্যই অস্বাভাবিক। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কি কোনও কিছুই আঁচ করতে পারেনি এসব বিষয়ে? আর তারা যদি আঁচ করতে না পারে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কি কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে?’
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিদ্রোহের নামে হত্যা করা হয় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে। এ ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলায় ৮৪৬ জনকে আসামি করা করা হয়। ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন বিচারিক আদালত। আর ২০১৭ সালে হাইকোর্ট রায় ঘোষণা করেন। মামলায় ১৩৯ জনকে ফাঁসি, ১৮৫ জনকে যাবজ্জীবন এবং ২০০ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট। ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি হাইকোর্ট পিলখানা হত্যা মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন। তবে রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের করা আপিল শুনানি শুরু না হওয়ায় হত্যা মামলাটির নিষ্পত্তি হয়নি আজও।