অসহায় শিক্ষার্থীর পড়াশোনার দ্বায়িত্ব নিলেন কলারোয়া থানা পুলিশ

দ্বারা zime
০ মন্তব্য 172 দর্শন

 

শেখ আরিফুল ইসলাম আশা: সাতক্ষীরার কলারোয়া ডিএসএইচ সিঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া খাতুন। জন্মের আগেই আলাদা হয়ে গেছেন বাবা-মা। সুমাইয়ার বসবাস মায়ের সঙ্গে নানার বাড়িতে। সুমাইয়ার লেখাপড়ার খরচই দেন না বরং বিয়ে দিতে চান তার পিতা।

এইনিয়ে শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে বাবার বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে থানায় হাজির হয় সুমাইয়া। ঘটনার সমাধান হয়নি তবে এখন থেকে সুমাইয়ার লেখাপড়ার
খরচ দিবে কলারোয়া থানা পুলিশ বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা- ওসি।

অসহায় শিক্ষার্থী সুমাইয়া খাতুন (১৪) কলারোয়া উপজেলার কেরালকাতা ইউনিয়নের বহুড়া গ্রামে
ইসরাফিল সরদার নানার বাড়িতে বসবাস করে। বাবা নেয়ামত আলী সোনাবাড়িয়া ইউনিয়নের পাঁচপোতা গ্রামের বাসিন্দা। আরেকটি বিয়ে করেছেন তিনি।

সুমাইয়ার মামা আব্দুর রহমান জানান, সুমাইয়ার জন্মের আগেই বোনকে ডিভোর্স দিয়ে দেয় বাবা নেয়ামত আলী। জন্মের পর খোঁজও নেয়নি তার বাবা। তবে সুমাইয়া একটু বড় হওয়ার পর সুমাইয়াকে মাঝেমধ্যে তার বাড়িতে নিয়ে যায় তার বাবা। গত চার দিন আগে সুমাইয়া গিয়েছিল বাবার বাড়িতে। তবে বাবা বলেছে, বিয়ে দিয়ে দিবে মেয়েদের লেখাপড়ার দরকার নেই। লেখাপড়া করে কি হবে। পরে কাঁদতে কাঁদতে বাড়িতে ফিরে আসে সুমায়া।

তিনি জানান, লেখাপড়ায় খুব ভালো সুমাইয়া। বিদ্যালয়ে ১৬৮ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে রোল নম্বর ১০। আমরাও গরীব মানুষ। ইচ্ছা থাকলেও সব খরচ বহন করা সম্ভব হয় না।

স্কুলছাত্রী সুমাইয়া খাতুন জানান, আমি মা ফাতেমা বেগমের সঙ্গে নানার বাড়িতে থাকি। আমার বাবা জন্মের পর থেকে আমাকে কোন খরচ দেয় না। আমি
লেখাপড়ার জন্য খরচ চাইলে বলছে, লেখাপড়া করে কি হবে, বিয়ে দিয়ে দিব। মেয়েদের এত লেখাপড়া করার কোন দরকার নেই। আমি ওসি স্যারের কাছে গিয়েছিলাম। স্যারকে জানিয়েছি। স্যার বলেছেন, তিনি বাবাকে বলবেন তাছাড়া আমাকে প্রতিমাসে লেখাপড়ার জন্য কিছু খরচও দিবেন। দুই হাজার টাকাও দিয়েছেন।

তবে সুমাইয়ার বাবা নেয়ামত আলী জানান, আমি লেখাপড়ার জন্য খরচ দেই নানাও দেয়। নানার বাড়িতেই থাকে। আমি সুমাইয়াকে লেখাপড়া বন্ধ করে বিয়ের জন্য কোন চাপ দেইনি।

কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মীর খায়রুল কবির জানান,মেয়েটি থানায় এসে বাবার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে জানিয়েছে, বাবা তার লেখাপড়ার খরচ দেয় না। তাছাড়া পারিবারিক অর্থনৈতিক সমস্যার কথাও। মেয়েটিও মেধাবী,
বিদ্যালয়ে প্রায় দুইশো শিক্ষার্থীর মধ্যে ১০ রোল। পরে থানার স্টাফরা মিলে আমরা দুই হাজার টাকা দিয়েছি তার লেখাপড়ার খরচ বাবদ।

তিনি বলেন, আমরা যতদিন এই থানাতে থাকবো ততদিন প্রতিমাসে ১-১০ তারিখের মধ্যে সুমাইয়াকে লেখাপড়ার জন্য খরচ দিবো বলে স্টাফরা মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এছাড়া তার বাবাকেও বুঝিয়ে বলা হবে, যেন মেয়েকে খরচ দেয়। কেননা এটি জোর করার বিষয় নয়, মানুসিকতার ব্যাপার। ফুটফুটে মেয়েটির জীবন আমরা নষ্ট হতে দিতে পারি না। তার পাশে আমাদের থাকা উচিত।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন