সন্ত্রাস, মাদক ও চাঁদাবাজি বন্ধ করে শান্তির জেলা হিসেবে উপহার দিয়েছেন সাধারন জনগনকে ; বিচার কাজে গতি আনতে আদালতে স্বাক্ষী উপস্থিতিও বেড়েছে তার সময় কুষ্টিয়ায় পুলিশ সুপার হিসেবে যোগ দিয়ে সাধারন জনগনের কল্যাণে নানা পদক্ষেপ নিয়েছেন এসএম তানভীর আরাফাত পিপিএম (বার)।কুষ্টিয়ার ইতিহাসে জন প্রতি ১০৩ টাকা হারে ৭৫ জন তরুণ বেকার যুবক-যুবতী কে পুলিশ কনস্টেবলে চাকুরী দিয়ে তিনি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।

আইন শৃংখলা স্বাভাবিক রাখার পাশাপাশি সাধারন মানুষের জন্য অনেক কিছু করেছেন। বিশেষ করে করোনাকালে যেভাবে সাধারন মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন তা বিরল। স্বাস্থ্য বিভাগের পাশেও সহযোগিতার হাত বাড়ান এ পুলিশ সুপার। পাশাপাশি মানুষকে ন্যায় বিচার দিতে আদালতে দ্রুত চার্জশীট দেয়ার পাশাপাশি স্বাক্ষী হাজিরায় কড়া পদক্ষেপ নেয়ার ফলে বিচার কাজেও গতি এসেছে। আদালতকে সব ধরনের সহযোগিতা দেয়ায় মামলা নিস্পত্তিতে দেশ সেরা হয়েছে কুষ্টিয়া।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, পুলিশ সুপারের নেয়া নানা পদক্ষেপ পুলিশকে যেমন বদলে দিয়েছে তেমনি সাধারন মানুষের মনেও আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। দেখা গেছে, আড়াই বছরে তিনি অর্ধশত ভালো কাজ করে নজির স্থাপন করেছেন। যা পুলিশ বিভাগসহ সবখানে প্রশংসিত হয়েছে। বিশেষ করে সাধারন মানুষ পুলিশ সুপারের কাজে সন্তুষ্ট হয়েছে।

আর সুবিধাবাদি কিছু মানুষ যারা অবৈধ সুবিধা পাননি তারায় কেবল তার উপর ক্ষুব্ধ বলে মনে করেন সাধারন জনগন। এর মধ্যে গত আড়াই বছরে কুষ্টিয়া থেকে মাদক নির্মূল ও মাদক ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন করেছেন। এতে করে মাদক ব্যবসা কমেছে। পুলিশের অভ্যন্তরীন ঘুষ লেনদেন বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি। এতে ক্ষুব্ধ হন পুলিশের অনেক সদস্য। শাস্তি হয়েছে প্রায় শতাধিক পুলিশ সদস্যের।

পুলিশ সুপার যোগদানের পর পাসপোর্টের তদন্ত ৩ দিনের মধ্যে দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন। এক্ষেত্রে অর্থ লেনদেন বন্ধ করেছেন। কিছু ক্ষেত্রে অনিয়ম থাকলেও তা বন্ধ করার চেষ্টা করছেন তিনি। ৭টি থানাকে সিসিটিভি মনিটরিংয়ের আওতায় এনেছেন। থানায় এসে যাতে কেউ হয়রানী না হয় সে ব্যবস্থা করেছেন। এছাড়া মামলায় দ্রুত সময়ের মধ্যে চার্জশীট দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন। যার ফলে মানুষ ন্যায় বিচার পাচ্ছে। বিচার কাজ দ্রুত শেষ হচ্ছে। এক্ষেত্রে বিচারক ও পুলিশের মধ্যে সু-সম্পর্ক আরো জোরদার হয়েছে।

আদালতের নির্দেশে ওয়ারেন্টের আসামী গ্রেফতারে নানা ব্যবস্থা নিয়েছেন। মামলা নিস্পত্তি ও বিচারকাজ দ্রুত করতে স্বাক্ষী হাজিরায় খুলনা বিভাগের মধ্যে নজির স্থাপন করেছেন। যা সারা দেশে আলোচিত হয়েছে। তিনি পুলিশ বিভাগ থেকে পুরস্কার পেয়েছেন। চাঞ্চল্যকর মামলায় দ্রুত চার্জশীট দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন। সাধারন মানুষ যাতে মিথ্যা মামলায় হয়রানী না হয় সে জন্য থানাগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছেন। এতে করে হয়রানী কমেছে অনেক ক্ষেত্রে। পুলিশের বদলি বাণিজ্য বন্ধ করেছেন। এতে অনেকের আয় বন্ধ হয়ে গেছে। বিশেষ করে সেবা না দিয়ে সাধারন মানুষকে হয়রানী করলে কড়া পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে সেই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। সেবা সহজতর করতে ই-সেবা চালু করেছেন।

পুলিশের দুর্নীতিবাজ ও মাদক সেবনকারী অফিসার ও সদস্যদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিয়েছেন। ১০ মাদক সেবনকারি পুলিশ সদস্যের চাকুরি গেছে তার সময়ে। পুলিশের হাইকমান্ড তার এ কাজে প্রশংসা করেছে। জিডি ও মামলা নেয়ার সময় সমস্ত অর্থ লেনদেন বন্ধ করেছেন। জেলায় ডাকাতি ও ছিনতাই বন্ধে হাইওয়েতে টহল জোরদার করেছেন। গুরুত্বপূর্ণ মামলার আসামী গ্রেফতার করেছেন।

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য্য ভাংচুরকারীদের ২৩ ঘন্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করেছেন। দুর্নীতি ও হয়রানী কমাতে ই-ট্রাফিকিং সেবা চালু করেছেন। মামলাজট কমাতে আদালতকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রদান করে আসছেন। বাঘা যতিনের ভাস্কর্য ভাংচুরকারীদের দ্রুত সময়ে গ্রেপ্তার করেন তিনি। করোনাকালে চিকিৎসক, নার্সদের পিপিই, মাস্কসহ মেডিকেল সামগ্রী দিয়ে নজির স্থাপন করেন। কয়েক হাজার পিপিই সরবরাহ করেন তিনি। এতে সংকট দুর হয়। মনোবল বাড়ে চিকিৎসকদের। ফেসসিল্ডও সরবরাহ করেন তিনি। মানুষের কল্যানে রাতদিন কাজ করেন তিনি। এছাড়াও করোনাকালে তিন হাজার মানুষকে খাদ্য সহায়তা দেন পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাত।

হরিপুরে অসহায় এক নারীর ঘর ভেঙ্গে যায় ঘুর্ণিঝড় আমপানে। ঘর হারানো অসহায় বৃদ্ধ নারীকে ঘর নির্মাণ করে দেন পুলিশ সুপার। অসংখ্য মেধাবী ও গরীব শিক্ষার্থীকে সহায়তা করেছেন কয়েক বছরে। করোনাকালে পুলিশ লাইন স্কুল ও কলেজের প্রায় ৫ শতাধিক শিক্ষার্থীর সমস্ত অর্থ মওকুফ করেছেন তিনি।

করোনাকালে তার নেতৃত্বে সাধারন মানুষকে ঘরে রাখতে ও সহযোগিতা দিতে কাজ করেন সকল সদস্য। এতে করোনা আক্রান্ত হন অনেকে। তাদেরও সহযোগিতা দেন তিনি। করোনা আক্রান্ত হয়ে যারা মারা যান সেই সব মৃতদের লাশ দাফনের ব্যবস্থা করেন পুলিশ সুপার। সড়কে দলীয় নেতাদের পরিচয়ে চাঁদাবাজি বন্ধ করেন পুলিশ সুপার। যা অনেকেই ব্যর্থ হন এর আগে। ভূমি খেকোদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি প্রভাবশালীদের কবল থেকে জমি উদ্ধার করে তা ফিরিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করেন পুলিশ সুপার। যা সারা দেশে আলোচিত হয়। করোনাকালে অন্য জেলায় কৃষি শ্রমিক পাঠানোর ব্যবস্থা করেন এ কর্মকর্তা।

করোনাকালে আলেমদের সহযোগিতা প্রদান করেন তিনি। শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র প্রদান, সামাজিক হানাহানি ও কাইজ্যা বন্ধে দুইপক্ষের মধ্যে আপোষের ব্যবস্থা করা, আশরাফুলসহ দাগী গরু চোরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ তার সময়ে হয়েছে। পাশাপাশি “প্রত্যয়ী”র মাধ্যমে অসহায় নারী ও শিশুদের সেবা প্রদান, পারিবারিক কলহ নিরসন। অনেক সংসার জোড়া লেগেছে তার সময়ে।


পুলিশ সুপারের সময় দলীয় পরিচয়ে অপরাধ করেও পার পাননি অনেকে। তিনি সবাইকে আইনের আওতায় এনেছেন। এতে অনেকেই ক্ষুব্ধ হন তার উপর। এছাড়া নানা কারনে অনেকেই সুবিধা না পেয়ে তার উপর ক্ষুব্ধ হন। অনেক প্রতিষ্ঠান বাড়তি ফোর্স চেয়ে অনুরোধ করেন তার কাছে। এসব সুবিধা না পেয়ে তারা আগে থেকেই ক্ষুব্ধ ছিলেন পুলিশ সুপারের উপর। অপরাধীদের বাঁচাতে এসব চক্র সক্রিয় রয়েছে। যারা নিজেরায় নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িত। পুলিশের ভাল কাজ ও পুলিশ সুপারকে হেয় করতে তারা কাজ করছে বলেও মনে করেন সচেতন মহল। এসব স্বাধীনতা ও দেশ বিরোধী চক্রকে আইনের আওতায় আনার দাবি করেন তারা।

সুশীল সমাজের কয়েকজন জানান,‘ কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার তানভীর আরাফাতের সময় যা হয়েছে তা অতীতে অনেকের সময় হয়নি। তিনি জনগন ও দেশের কল্যানে কাজ করে যাচ্ছেন। তার সময়ে কোন নিরীহ মানুষ হয়রানী হয়েছে এমন নজির নেই।

আশরাফুলের মত দাগী চরমপন্থি ও গরু চোরদের ধরে তিনি শান্তি ফিরিয়ে এনেছেন ওই এলাকায়। তার পরও মানুষের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সীমাবদ্ধতা নিয়ে তিনি অনেক বেশি ভাল কাজ করেছেন। যা জেলার মানুষের কাছে স্মরনীয় হয়ে থাকবে।

রাষ্ট্রপক্ষের একাধিক আইনজীবী বলেন, পুলিশ সুপার আদালতের প্রতিটি কাজ দায়িত্ব নিয়ে করেছেন। যার ফলে অনেক মামলার রায় হয়েছে দ্রুত। পুলিশ সহযোগিতা না করলে একা আদালতের পক্ষে সব কাজ করা সম্ভব নয়। কয়েক দিনের মধ্যে ধর্ষণ মামলার চার্জশীট দেয়ার মত কাজও হয়েছে তার সময়। স্বাক্ষী হাজিরা যে কোন সময়ের চেয়ে বেড়েছে।

তাই পরিশেষ বলা যায়, আমরা এমন এক জাতি যে জাতি মানুষের ৯৯ টি ভালো কাজের প্রশংসা করি না বরং ১ টি অপ্রত্যাষিত ভুলের কারনে আমরা তার রেখে যাওয়া ৯৯ টি ভালো কাজের প্রশংসা করিনা।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন