খুলনায় র‌্যাবের অভিযানে খালিশপুর থেকে ১০ জঙ্গি আটক

দ্বারা Update Satkhira
০ মন্তব্য 334 দর্শন

 

খুলনার খালিশপুর থেকে জেএমবি মতাদর্শী নতুন জঙ্গি সংঠনের আমির সহ ১০ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৬।আটককৃতরা মাদ্রাসার ছাত্র পরিচয়ে তারা সেখানে অস্থান করছিলো। গতকাল খুলনার খালিশপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের কে আটক করা হয়।শনিবার দুপুরে খুলনা র‌্যাব-৬ এঁর অধিনায়ক লে.কর্ণেল মোহাম্মদ মুসতাক আহমেদ নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।

র‌্যাব-৬ এঁর অধিনায়ক লে.কর্ণেল মোহাম্মদ মুসতাক আহমেদ প্রেস সম্মেলনে জানান, গত ১৮ মার্চ ২০২২ তারিখ রাত ১৯:৩০ ঘটিকার সময় র‌্যাব-৬ (স্পেশাল কোম্পানি) এর একটি টহল ও বিশেষ আভিযানিক দল খুলনা মহানগরী খালিশপুর এলাকায় অবস্থানকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, খুলনা মহানগরী খালিশপুর থানাধীন আলমগীর শেখ ৥ আলম শেখ, ২৫৩ বিআইডিসি রোড, কাশিপুর, খালিশপুর, খুলনা এর বাসভবনের ৩য় তলায় মাদানী নিসাব খালিশপুর বয়স্ক মাদ্রাসা/মসজিদে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘জেএমবি’ মতাদর্শীর নতুন সংগঠন ‘জামআতুল মুসলেমিন’ এর একটি গোপন বৈঠক চলছে।এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯ মার্চ ২০২২ তারিখ রাত অনুমান ০০.১০ ঘটিকার সময় খুলনা মহানগরী খালিশপুর থানাধীন আলমগীর শেখ,  আলম শেখ, ২৫৩ বিআইডিসি রোড, কাশিপুর, খালিশপুর, খুলনা এর বাসভবনের ৩য় তলায় মাদানী নিসাব খালিশপুর বয়স্ক মাদ্রাসা/মসজিদে অভিযান পরিচালনা করে আসামী ১। আনোয়ার কবির মিলন,মিদ্দাত হোসেন (৫০), ২। সোহেল রানা(৩০), ৩। আমিনুল (৩৮), ৪। কামরুল ইসলাম (৫৫), ৫। রিফাত রহমান (২৪), ৬। আব্দুর রউফ (৬২), ৭। মোঃ শেখ ফরিদ (২৭), ৮। আব্দুল আলীম (৫০), ৯। মোঃ রফিকুল ইসলাম (৪৬) ও ১০। তালহা ইসলাম (১৯) গণকে গ্রেফতার করা হয়।

উক্ত সময় ঘটনাস্থল থেকে বিপুল পরিমান উগ্রবাদী বই ও নথিপত্র উদ্ধার করা হয়।

সংগঠনটির স্বঘোষিত আমির আনোয়ার কবির মিলন@ মিদ্দাত হোসেন ২০০২ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সৌদি আরবে লেখাপড়া করেন। লেখাপড়া শেষ করে বাংলাদেশে ফিরে আসলে তার সাথে ভোলা-চরফ্যাশন এলাকার প্রফেসর মজিদের সাথে পরিচয় হয়। প্রফেসর মজিদ তৎকালীন জেএমবির আমির শায়খ আব্দুর রহমান এবং শায়খ সাইদুর রহমানের অনুসারী ছিল। জেএমবির ভারপ্রাপ্ত সদস্য প্রফেসর মজিদ ৬৩ জেলায় বোমা হামলার ঘটনায় জড়িত ছিল এবং পরবর্তীতে মুক্ত মামলার জন্য সে জেল হাজতে ছিল। জেলে থাকাকালীন সময়ে প্রফেসর মজিদ জেএমবির নেতৃত্ব স্থানীয় ব্যক্তিবর্গের সাথে সম্পৃক্ততা রাখত। মিদ্দাত হোসেন সৌদি আরব থেকে ফেরার পর থেকেই মজিদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হয়ে ওঠে এবং পরবর্তীতে মজিদের কাছে জেএমবির বায়াত গ্রহণ করে। সে সময়ে মিদ্দাত হোসেন এর সাথে জেএমবির অনেক সদস্যের পরিচয় ঘটে। সন্দেহভাজন জঙ্গি কার্যক্রমের জন্য ২০১২ সালে ডিবি পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতার হয়। এরপর থেকে মিদ্দাত হোসেন একটি নিজস্ব সংগঠন তৈরি করার ব্যাপারে পরিকল্পনা গ্রহণ করে। ২০১৮ সাল হতে প্রফেসর মজিদ এর সাথে সম্পৃক্ত বেশ কিছু ব্যক্তি মিদ্দাত হোসেন কে সাথে নিয়ে নতুন সংগঠন গঠন করা এবং লোক সংগ্রহের জন্য একতাবদ্ধ হয়। এ প্রেক্ষিতে তারা দ্বীনের দাওয়াত দেয়া শুরু করে। তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল, দাওয়াত দেয়ার মাধ্যমে জনগণের একটি বড় অংশকে নিজেদের দলে ভেড়ানো এবং পরবর্তীতে সশস্ত্র জিহাদের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকারকে সরিয়ে ইসলামিক শাসন প্রতিষ্ঠা করবে।

র‌্যাব-৬ এঁর অধিনায়ক আরো জানান, প্রাথমিক বিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, মিদ্দাত হোসেন এবং তার সহযোগীগণ দেশের বিভিন্ন জায়গায় সূরা সদস্য নিয়োগ করে সূরা সদস্য এর মাধ্যমে প্রতিটি এলাকা থেকে সাথী সদস্য গ্রহণের জন্য কাজ করে যাচ্ছিল। বর্তমানে টাঙ্গাইল, গাজীপুর, যশোর, খুলনা, ময়মনসিংহ এবং ঢাকা এলাকাতে রিক্রুটমেন্ট কার্যক্রম ব্যাপক আকারে চলছে। পরবর্তীতে নিকট ভবিষ্যতে কুষ্টিয়া, রাজশাহী, জামালপুর, কিশোরগঞ্জ এলাকাতে রিক্রুটমেন্ট এর পরিকল্পনা ছিল এবং অদূর ভবিষ্যতে তারা সারাদেশব্যাপী রিক্রুটমেন্ট করার জন্য সকলকে অনুপ্রেরণা দিচ্ছিল। এ প্রেক্ষিতে এবারের তিনদিনের প্রোগ্রাম আয়োজন করা হয় যেখানে মূল লক্ষ্য ছিল নেতৃত্ব এবং সারাদেশে কিভাবে কার্যক্রম চলবে সেটি ব্যাখ্যা করা। উক্ত প্রোগ্রামকে সফল এবং পরবর্তী কার্যক্রম সম্পর্কে নির্দেশনা গ্রহণের জন্য অন্যান্য সূরা সদস্যগণ তাদের কর্মীদেরকে নিয়ে প্রোগ্রামে যোগদান করে।গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে ।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন