সিলেট-সুনামগঞ্জের অনেক জায়গা থেকেই পানি নামতে শুরু করেছে। অনেকেই ফিরছেন ঘরে। আশ্রয়কেন্দ্র দু’বেলা খাবারের নিশ্চয়তা থাকলেও বাড়িতে ফিরে সেই নিশ্চয়তা পাচ্ছেন না অনেকেই। বিপর্যস্ত বাড়িঘর কিভাবে মেরামত করবেন, তা নিয়েও চিন্তার শেষ নেই।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সুনামগঞ্জের বাদাঘাট হাইস্কুল মাঠ, আমবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বিশ্বম্ভরপুর থানায় আশ্রয় নেওয়া মানুষের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেন পুলিশ প্রধান ইন্সপেক্টর জেনারেল ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম-বার ।
সেখান থেকে ফিরে সিলেটের সাহেবের বাজার এবং ভোলাগঞ্জে ত্রাণ সহায়তা দেন তিনি। এর মধ্যে সিলেট মেট্টোপলিটন পুলিশের উদ্যোগে সাহেবের বাজারে রান্না করা খাবার বিতরণ করা হয়। এ সময় পুলিশ প্রধানের সঙ্গে পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি (লজিস্টিক) তওফিক মাহবুব চৌধুরী, সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মফিজ উদ্দিন আহমেদ, সিলেট মেট্টোপলিপন পুলিশের কমিশনার নিশারুল আরিফ, সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ত্রাণ বিতরণ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পুলিশ প্রধান ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘আমাদের মানুষের উঠে দাঁড়াবার আদম্য শক্তি রয়েছে। আমি ত্রাণ দেওয়ার সময় অনেক মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি। অনেকেই আমাকে বলেছেন, ত্রাণ নয় বরং বাড়ি ঘর মেরামতে তাদের সহযোগিতা প্রয়োজন।
পুলিশ যতদূর সম্ভব মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে। শুধু ত্রাণ নয়, দুর্গত এলাকায় যাতে চুরি ডাকাতি না হয় সেদিকেও আমাদের খেয়াল রাখতে হয়েছে। পুলিশ সবচেয়ে দুর্গম এলাকায় কাজ করে। ফলে আমরাই সবচেয়ে আগে মানুষের কাছে পৌঁছাতে পেরেছি। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছি।
সিলেটের ভোলাগঞ্জের বর্ণি গ্রামের ৯০ বছরের বৃদ্ধা পেয়ারা বেগম এসেছিলেন ভোলাগঞ্জ রাস্তার পাশে ত্রাণ নিতে। পুলিশ প্রধানের হাত থেকে ত্রাণ নেওয়ার পর এই বৃদ্ধা জানালেন, আজকে এই প্রথম কেউ ত্রাণ দিল। তার বাড়িতে এখনও কোমর সমান পানি। দু’বেলা খাবারের জন্যই এখন তার সংগ্রাম। একই সঙ্গে পুলিশ প্রধানের হাত থেকে ত্রাণ নিয়েছেন হাফিজুন নেছা।
সত্তরোর্ধ্ব এই নারী বললেন, ঘরে এখনও হাঁটু পানি, দুর্গন্ধে থাকা যায় না। সেখানেও নেই কোন খাবারের ব্যবস্থা। রিলিফ দেওয়া বন্ধ হলে কিভাবে চলবেন তা নিয়েও রয়েছে তার দুঃচিন্তা। পুলিশের ত্রাণ দেওয়ার কথা শুনে সেখানে ছুটে এসেছেন শত শত মানুষ। দু’বেলা খাবারের জন্য তাদের প্রাণান্তকর যুদ্ধ।
সিলেট মেট্টোপলিটন পুলিশের কমিশনার নিশারুল আরিফ প্রতিবেদক কে বলেন, ‘এখনও শহরের মধ্যে অনেকগুলো আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। অনেক জায়গার পানি নামলেও নিচু এলাকাগুলোতে এখনও পানি আছে। ফলে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে নিয়মিত খাবার দেওয়া হচ্ছে। পুলিশের পক্ষ থেকে যা যা করা সম্ভব আমরা তার সবকিছুই করছি।’