আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এখন কর্মী পাওয়া যায় না, নেতা তৈরির কারখানা হয়েছে। নেতা হওয়ার জন্য বিতর্কিতদের দলে টানবেন না।

মঙ্গলবার দুপুরে নড়াইলের সুলতান মঞ্চে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিলবোর্ড, ব্যানার, রঙিন পোস্টার, গেট বানিয়ে নেতা হওয়া যায় না। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে অনেকে লাখ লাখ টাকা খরচ করে বিশাল বিলবোর্ড, ব্যানার, রঙিন পোস্টার ও গেট করে যে টাকা নষ্ট করেছেন, এই টাকা আওয়ামী লীগের অসুস্থ ও অসচ্ছল নেতাকর্মীদের মাঝে বিলিয়ে দিলে তারা উপকৃত হতেন।

তিনি বলেন, দুর্নীতিবাজরা আমাদের নজরদারিতে আছে। দলে শুদ্ধি অভিযান চলছে, শুদ্ধি অভিযান চলবে। দুর্নীতিবাজদের কোনো ছাড় দেয়া হবে না। সময়মতো তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। দলে সৎ ও ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করা হবে। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সন্ত্রাস, দুর্নীতি, মাদক ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছেন। এ শুদ্ধি অভিযান সবাই মিলে সফল করতে হবে।

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, মাদক, টেন্ডারবাজি ও চাঁদাবাজিকে ‘না’ বলুন। ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে আত্মীয়-স্বজনকে আওয়ামী লীগের কমিটিতে আনা চলবে না। ত্যাগী নেতাকর্মীদের কোনোভাবেই কোণঠাসা করা যাবে না। দুঃসময়ের কাণ্ডারি নেতাকর্মীদের যথাযথ মূল্যায়ন করে দলে ঠাঁই দিতে হবে।

তিনি আরো বলেন, দূরের স্বপ্নকে প্রধানমন্ত্রী কাছে নিয়ে এসেছেন। পদ্মা সেতু নির্মাণ, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন, পায়রা সমুদ্র বন্দর স্থাপন, ঢাকায় মেট্রোরেল চালুর পদক্ষেপ, মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ, সমুদ্র বিজয়সহ নানামুখী কার্মকাণ্ড দেশের উন্নয়নের প্রমাণ বহন করে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছেন বলে উন্নয়নে বাংলাদেশ বিশ্বের রোল মডেল।

ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে সেদিন ভেবেছিল, এ দেশ থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলা যাবে। কিন্তু ঘাতকরা সেটা পারেনি। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, ততদিন বঙ্গবন্ধু চিরভাস্বর হয়ে থাকবেন।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোসের সভাপতিত্বে ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন দলের কেন্দ্রীয় সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য পীযূষ কান্তি ভট্টাচার্য্য। প্রধান বক্তা ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান। সম্মানিত অতিথি ছিলেন যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। সম্মানিত বক্তা শেখ তন্ময় এমপি।

বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন জাতীয় সংসদের হুইপ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এস এম কামাল হোসেন ও পারভীন জামান কল্পনা। বিশেষ বক্তা ছিলেন নড়াইল-১ আসনের সংসদ সদস্য কবিরুল হক মুক্তি ও নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য বাংলাদেশ ওয়ানডে ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন বিশ্বাস, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর বিশ্বাস। সভা সঞ্চালনা করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন খান নিলু।

সম্মেলন শেষে নতুন কমিটির সভাপতি হিসেবে বর্তমান সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন খান নিলু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর বিশ্বাস এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান জিন্নাহর নাম ঘোষণা করেন ওবায়দুল কাদের।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন