মজার ইশকুল ঈদ উৎসবে ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া।।

দ্বারা zime
০ মন্তব্য 330 দর্শন

 

পথ শিশুদের নিয়ে কাজ করে এমন একটি সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান মজার ইশকুল। প্রতিবছর ঈদে পথ শিশুদের মাঝে নতুন ঈদবস্ত্র উপহার দিয়ে থাকে এই সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান। এবারও পথ শিশুদের নিয়ে ঈদ উৎসবের আয়োজন করেছে মজার ইশকুল। এতে প্রধান অতিথি হয়ে পথ শিশুদের মাঝে নতুন পোশাক বিতরণ করেন ডিএমপি কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া বিপিএম (বার), পিপিএম।

আজ ২৪ মে, ২০১৯ বেলা ১২টায় রাজধানী কমলাপুর রেলস্টেশন প্রাঙ্গণে ৪০০ পথশিশুদের মাঝে ঈদের নতুন পোশাক বিতরণ করা হয়। রাজধানীতে অদম্য বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের মজার ইশকুল ধানমন্ডি, শাহবাগ, সদরঘাট ও কমলাপুর এলাকার পথ শিশুদের মাঝে এই ঈদবস্ত্র বিতরণ করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন মজার ইশকুলের উদ্যোক্তা আরিয়ান আরিফসহ ডিএমপি’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

যা ছিল মজার ইশকুল ঈদ উৎসব প্যাকেটে- ছেলেদের জন্য একটি জিন্স প্যান্ট, শার্ট, বেল্ট, ঘড়ি ও চশমা এবং মেয়েদের জন্য ছিল ফ্রক, টাইস, চশমা, ঘড়ি ও মেকআপ বক্স।

নতুন পোশাক বিতরণ অনুষ্ঠানে কমিশনার বলেন, সামাজিক ও ধর্মীয় দায়িত্বপালনে মজার ইশকুলের আয়োজন আমাদের কাছে অনুকরণীয়। পথ শিশুদের জন্য এমন উদ্যোগ গ্রহণ করায় তাদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ। ঈদ সবার জন্য, ছোট বাচ্চারা তোমরা যারা এসেছো তারা ঈদে নতুন কাপড় পড়বে এটাই আমাদের প্রত্যাশা। ডিএমপি’র পক্ষ থেকে আমরা ঢাকা মহানগরীর চার জায়গায় দুঃস্থ ও অসহায়দের মাঝে ইতোমধ্যে ঈদবস্ত্র বিতরণ করেছি। আগামীকালও দুই জায়গায় ঈদবস্ত্র বিতরণ করবো।

তিনি আরো বলেন, একজনের প্রতি আর একজনের দায়িত্ববোধ সহমর্মিতা আমাদের সমাজকে সুন্দর করতে পারে। একজনের প্রতি আরেকজনের দায়িত্ববোধ থেকেই এগিয়ে আসতে হবে। মারামারি, হানাহানি, কাটাকাটি ও অসহিঞ্চুতা থেকে সরিয়ে এনে মানবিক দায়িত্ববোধ থেকে আমাদেরকে অনুপ্রাণিত করতে হবে। বর্তমানে পত্রিকার খবর দেখলে মনে হয় আমাদের মানবিক গুনাবলি ধীরে ধীরে ক্ষয়িঞ্চু হয়ে যাচ্ছে। এর কারণ একের প্রতি অন্যের সহিঞ্চুতা নেই। আমাদের ধর্মীয় ও সামাজিক অনুশাসনগুলো ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। আজকের মজার ইশকুল বাচ্চাদের নিয়ে যে আয়োজন করেছে সেখানে একটি মেসেজ আমরা পাই, সেটি হচ্চে আমরা সবাই সমান, সবাই সবার পাশে আছি। এখানে কেউ দুঃস্থ ও উপেক্ষিত নই আমরা সবাই সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এই বার্তাটি মজার ইশকুল আমাদের মাঝে ছড়িয়ে দিয়েছে।

কমিশনার বলেন, আমরা পুলিশের লোক সারাদিন ডিউটি করি। রমজানে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে ঢাকা শহরে দুই হাজার পুলিশ সদস্য রাস্তায় দাঁড়িয়ে সারাদিন ডিউটি করে। এমনকি প্রিয়জনদের সাথে ইফতার করতে পারে না। তারা রাস্তায় দাড়িয়ে একটা খেঁজুর ও এক গ্লাস পানি পান করে ইফতার করছে। এরপরেও মুখে হাসি দিয়ে নাগরিকদের সুবিধার স্বার্থে তারা দায়িত্ব পালন করছে। সারাদিন সারারাত আমরা দায়িত্ব পালন করি। চেকপোস্ট-তল্লাশি, ব্লক রেইড করছি যাতে করে সন্ত্রাসী বা দুর্বৃত্তরা শান্তিকামী মানুষকে যেন কষ্ট দিতে না পারে।

তিনি বলেন, ‘এবারের রোজায় ঢাকা শহরে বলার মতো কোনো ছিনতাইয়ের ও চাঁদাবাজির মতো ঘটনা ঘটেনি। এমনকি অজ্ঞান পার্টি ও চুরির মতো ঘটনাও ঘটেনি। তার মানে ছিনতাইকারী বা অপরাধীরা নেই তা নয়। কারণ তাদেরকে আমরা ধাওয়ার ওপরে রেখেছি, দৌড়ের ওপর রেখেছি। রোজা শুরুর আগে থেকেই গোয়েন্দা সদস্যরা অপরাধীদের নজরদারি করেছে। যার কারণে অপরাধীরা কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। অভিযানের ফলে অনেকে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে রয়েছে। আমাদের কর্মকাণ্ডের জন্য অপরাধীরা নিয়ন্ত্রণে ও দমনে রয়েছে।

ঈদযাত্রা নিয়ে কমিশনার বলেন, ঘরমুখী মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে বাড়ি যেতে পারে আবার ঈদ উদযাপন শেষে নিরাপদে ঢাকায় ফিরতে পারে সেজন্য নানামূখী কাজ করা হচ্ছে। বাস টার্মিনাল ও রেলওয়ে স্টেশনে যাতে কোনো ঝামেলা না হয় সেজন্য পুলিশসহ গোয়েন্দারা কাজ করছে। ঈদকে শান্তিপূর্ণ ও আনন্দঘন পরিবেশে উদযাপন করার জন্য ডিএমপির পক্ষ থেকে সব ধরণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

নিরাপত্তা নিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, পুলিশ একা অপরাধীদের দমন করতে পারবে না, সুশাসন আনতে পারবে না, জনগনের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষা করতে পারবে না। সাংবাদিক, পেশাজীবী, জনপ্রতিনিধি সবাই একসাথে কাজ করতে পারব তখন সবকিছু করা সম্ভব। অপরাধের বিরুদ্ধে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সবাই যখন একযোগে লড়তে পারব ঠিক তখনই আমরা সফল হতে পারব।

নতুন পোশাক বিতরণের পর শিশুদের উদ্দেশ্যে কমিশনার বলেন, তোমাদের প্রতি একটাই অনুরোধ, তোমরা মাদকের সাথে যুক্ত হবে না। এটি ভয়াবহ ক্যান্সার। কারণ রোগ হলে একজন মানুষ মারা যায়, দুর্ঘটনা ঘটলে কয়েকজন মারা যায়। কিন্তু মাদক নিলে পুরো পরিবার ধ্বংস হয়ে যায়, সমাজ ও জাতি শেষ হয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি হয়। তোমরা মাদকের ধারে কাছে যাবে না। মাদক কেউ দিতে চাইলে সাথে সাথে তা পুলিশকে জানাবে। আমরা ব্যবস্থা নেবো। আমরা সবাই মাদকের বিরুদ্ধে একসাথে কাজ করব। মজার ইশকুলের এমন উদ্যোগের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও শ্রদ্ধা জানায়। ভবিষ্যতে এমন কাজের জন্য আমরা আপনাদের পাশে থাকবো।

উল্লেখ্য, মজার ইশকুল (একটি অদম্য বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন এর উদ্যোগ) অরাজনৈতিক, অলাভজনক সংগঠন। ২০১৩ সালের ১০ জানুয়ারি থেকে তরুণদের সমন্বয়ে পথশিশুদের জন্য এই ইশকুল পরিচালিত হচ্ছে।

-ডিএমপি নিউজ।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন