পুলিশ সুপারের নির্দেশনা মোতাবেক করোনা ঠেকাতে নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে কাজ করে যাচ্ছে জেলার আটটি থানার পুলিশ

দ্বারা zime
০ মন্তব্য 208 দর্শন

 

সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম (বার) করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে নিজে মাঠে নেমেছেন। প্রচারণা চালাচ্ছেন করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে কি কি করণীয় তা নিয়ে। সাথে সাথে তিনি মানুষ কে ঘরে ফেরানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন।আর তাঁর এই মহতি উদ্যোগ কে বাস্তবায়ন করতে সর্বাত্মক ভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছেন সাতক্ষীরা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও পদন্নোতি প্রাপ্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইলতুৎ মিশ

করোনা পরিস্থিতি ঠেকাতে সাতক্ষীরা জেলার আটটি থানার পুলিশ এক যোগে মাঠে নেমে কাজ করছে।কোনো থানার পুলিশ বস্তাভর্ত্তি খাবার নিয়ে খেটে খাওয়া মানুষদের ঘরে ঘরে চাল-ডাল-আলু-তেল-পিয়াজ ও লবণ দিয়ে আসছেন, আবার কোন থানার পুলিশ এলাকায় মাইকিং করছেন ঘরে অবস্থান করার জন্য আবার কোন কোন থানার পুলিশ ভারতীয় পুলিশের মত মাইকিং এর সাথে তাল মিলিয়ে হাত পা নেড়ে নেড়ে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষন করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

 

আবার কোন কোন থানার পুলিশ ত্রাণ নিয়ে কোয়ারেন্টাইনে থাকা মানুষদের বাড়ি গিয়ে লাল পতাকা টানিযে দিয়ে আসছেন।বলা যায় এই কঠিন পরিস্থিতি তে পুলিশ করোনা প্রতিরোধের ডিউটি করে বাড়ি গিয়ে পোশাক খোলার সময় পাচ্ছেন না। আর এটি সম্ভব হয়েছে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম (বার) এঁর অনুপ্রেরণা ও দিক নির্দেশনাতেই।

গতমাসের ৩০ মার্চ সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার ঘোষনা দেন সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের নিজস্ব অর্থায়নে ৫০০০ কেজি চাল, ৪০০০ কেজি আলু, ৫০০ কেজি ডাল, ৫০০ লি. তেল বিতরণ করা হবে।ঘোষনায় পুলিশ সুপার বলেন প্রতি পরিবার ১০ কেজি চাল, ৫ কেজি আলু, ১ কেজি ডাল, ১ লি. তেল পাবে।পুলিশ সুপার ব্রিফিংয়ে আরো বলেন সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ প্রকৃত অভাবীদের তালিকা প্রস্তুত করে বিতরণ শুরু করেছে।পুলিশ সুপার তাঁর ফেইজবুক লাইভে বলেন নিন্মআয়ের মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে খাদ্য সামগ্রী পৌছে দেওয়া হবে কিন্তু কাউকে আমরা ঘরের বাহিরা দেখতে চাইনা।পুলিশ সুপারের কড়া হুশিয়ারীতে তার পরের দিন থেকে সাতক্ষীরা জেলার সকল রাস্তা-ঘাট জনমানবশূন্য দেখা যায়।বিনা কারনে মানুষ রাস্তায় বের হলে তাকে পুলিশের জবাবদিহিতার মুখে পড়তে হচ্ছে।

সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম (বার) ঘোষনা দেওযার পরের দিন সাতক্ষীরা শহরের ওয়াল্ড ভিশন এলাকায় কয়েকশ খেয়ে খাওয়া মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রত্যেক পরিবার কে ১০ কেজি চাল-৫ কেজি আলু-১ কেজি ডাল,১ লিটার তেল বিতরণ করেন। ঐ রাতেও শহরের বিভিন্ন এলাকায় মধ্যরাতে পুলিশ সুপার খেটে-খাওয়া মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন।

খবর নিয়ে জানা যায় পুলিশ সুপারের পাঠানো ত্রাণ জেলার আটটি থানার অফিসার ইনচার্জ দের কাছে পাঠানো হয়েছে। সেগুলো প্রতিদিনই প্রত্যেকটি থানার ওসি নিজ নিজ এলাকায় খেটে খাওয়া মানুষদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে দিয়ে আসছেন।

তারই অংশ হিসাবে সাতক্ষীরা থানার ওসি মোঃ আসাদুজ্জামান,পাটকেলঘাটা থানার ওসি কাজী ওযাহীদ মুর্শীদ, তালা থানার ওসি মোঃ মেহেদী রাসেল, দেবহাটা থানার ওসি বিপ্লব কুমার সাহা,কালিগঞ্জ থানার ওসি দেলোয়ার হোসেন,আশাশুনি থানার ওসি আবদুস সালাম,কলারোয়া থানার ওসি মুনীর-উল গিয়াস,শ্যামনগর থানার ওসি আলহাজ্জ নাজমুল হুদা নিজ নিজ এলাকায় পুলিশ সুপারের পাঠানো ত্রাণ নিয়ে নিন্ম আয়ের মানুষের বাড়ি বাড়ি পৌছে দিচ্ছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায সাতক্ষীরা শহর পার হয়ে শ্যামনগরের দিকে যেতে গেলে সর্ব প্রথম চোখে পড়ে সাতক্ষীরা ইটাগাছা ফাঁড়ি পুলিশের চেকপোস্ট। সেখানে যাওয়া মাত্র পুলিশের জিজ্ঞাসার মুখে পড়তে হচ্ছে কোথায় যাচ্ছেন? কি কারনে যাচ্ছেন? যার কাছে যাচ্ছেন তার কাছে ফোন দেন ইত্যাদি জিজ্ঞাসার মুখে পড়ে মানুষ ইদানীং আগের তুলনায় শহরে কম ঘোরাফেরা করছেন।এর পর দেবহাটা- কালিগঞ্জ-শ্যামনগরে একই চিত্র। জরুরি কাজ ছাড়া বাড়িরে বের হলেই তাকে পুলিশের জিঞ্জাসার মুখে অবথা জেলা প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর তোপের মুখে পড়তে হচ্ছে।কোন কোন থানার থানার ওসি দের দেখা যাচ্ছে রাস্তায় পথ চারিদের মাঝে মাক্স বিতরণ করতে ও ডেটল সাবান বিতরণ করতে।

এছাড়া সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে জেলার আটটি থানার প্রবেশ মুখে হাত ধোয়া বেসিন বসানো হয়েছে। জনগণ থানায় প্রবেশ করতে গেলে তাকে হাত ধুয়ে থানায় ঢুকতে হচ্ছে এছাড়া থানায় দায়িত্বরত সেন্ট্রিরা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে থানায় প্রবেষের আগে হাত স্প্রে করে দিচ্ছেন।

এদিকে জেলার পুলিশ সদস্যরা বিনা নিরাপত্তা নিয়েই মাঠে কাজ করছেন দিন রাত ২৪ ঘন্টা। এমন পরিস্থিতিতে সকল পুলিশ সদস্যের ছুটি বাতিল করেছেন পুলিশ সুপার। তবে কোন পুলিশ সদস্যের মধ্যে যদি করোনার উপসর্গ দেখা যায় তাদের জন্য সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম (বার) কুইক রেসপন্স টিম গঠন করেছেন ও পুলিশ লাইন্স হাসাপাতালের পাসে পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসার জন্য কোয়ারেন্টাইন সেন্টার স্থাপন করেছেন।কোন পুলিশ সদস্য অসুস্থ্য হলেই কুইক রেসপন্স টিম তাদের এ্যাম্বুলেন্স নিয়ে তৎক্ষনাৎ তাকে উদ্ধার করে জেলা পুলিশের কোয়ারান্টাইন সেন্টারে এনে চিকিৎসা দিচ্ছেন।

অপর দিকে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম (বার) এঁর দিক নির্দেশনা মোতাবেক সাতক্ষীরা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও পদন্নোতি প্রাপ্ত পুলিশ সুপার

মোহাম্মদ ইলতুৎ মিশ এঁর নেতৃত্বে সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মির্জা সালাহ্উদ্দিন, হেড কোয়ার্টার সার্কেল জিয়াউর রহমান, সহকারী পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম ও সঙ্গীয় ফোর্সের সহযোগিতায় কয়েকদিন আগে সাতক্ষীরা খুলনা রোড মোড়, লাবনীর মোড়, বাইপাস মোড়, বিনেরপোতা মোড়, কদম তলা মোড় থেকে শুরু করে পুরো শহর এলাকা জীবানু নাশক ঔষধ দিয়ে ট্রাকের মাধ্যমে রাস্তায় স্প্রে করে পুরো শহরের রাস্তাকে জীবানু মুক্ত করা হয়েছে।

এদিকে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল গতকাল ৪ মে ২০২০ তারিখ থেকে ঘোষনা দিয়েছেন সন্ধা ৬ টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত জেলার ঔষধের দোকান ছাড়া সকল দোকানপাট বন্ধ থাকবে।জেলা প্রশাসকের এমন নির্দেশনায় ও সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের নিরবিচ্ছিন্ন তৎপরতা এমন ভাবে চলতে থাকলে সাতক্ষীরা জেলার মানুষ করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সক্ষম হবে বলে মনে করছেন জেলার সুশীল সমাজের জনগণ।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন