সন্ত্রাস মুক্ত মানবিক সাতক্ষীরা গড়াই আমাদের প্রত্যাশা : সাতক্ষীরার এসপি মোস্তাফিজুর রহমান

দ্বারা zime
০ মন্তব্য 841 দর্শন

 

মহত্বের নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম (বার)।সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের অফিসিয়াল ফেইজবুক আইডি থেকে জানা যায়, ঈদের প্রকৃত একটি গল্প।গল্পের মাধ্যমে জানা যায়,

রোকেয়া বেগম, পিতা জহুর আলী, সং কাটিয়া মাঠপাড়া, থানা জেলা সাতক্ষীরা,সন্তান সম্ভবা মা। সুপার সাইক্লোন আমফান এর রাতে তীব্র ব্যাথা নিয়ে সাতক্ষীরা শহরে একটি হাসপাতালে ভর্তি হন। অতি দরিদ্র পরিবারে লড়াই সংগ্রামে জীবন চলা। চরম অসহায় অবস্থায় পাষণ্ড স্বামী তাকে ছেড়ে যায় কিছুদিন আগে। নতুন করে সংসার পাতে অমানুষ নিষ্ঠুর স্বামী। প্রতিবেশি একজনের দেয়া মাত্র ৬০০ টাকা জমা দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন রোকেয়া। হাসপাতালে তার কোল আলো করে জন্ম নেয় এক ফুটফুটে কণ্যা সন্তান।

কিন্তু রোকেয়ার মুখে হাসি নেই, রাজ্যর দুঃচিন্তা তার মাথায়। হাসপাতালের ২৬ হাজার টাকা বিল দিবে কোথা থেকে। এলাকার কয়েকজন চাঁদা তুলে সামান্য কিছু যোগাড় করেছে। বাকী টাকার জন্য এদিক সেদিক ঘুরে কোন লাভ হয়নি।

এক পর্যায়ে কারো একজনের পরামর্শে একজন সাহায্যকারী জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম (বার) কে ফোন দিয়ে বিস্তারিত জানান। পরে পুলিশ সুপার  বিস্তারিত শুনে জেলা গোয়েন্দা ইন্সপেক্টর মোঃ মহিদুল ইসলাম  কে ঘটনার বিস্তারিত খোঁজ নিতে বলেন।

খোঁজ নিয়ে ঘটনার সত্যতা পেয়ে একটা টিম ও কিছু আর্থিক সহযোগিতা পাঠান সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম (বার)।

পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে ডিবির ওসি মহিদুল ইসলাম  আলাপ করে কিছু বিল কমিয়ে ১৯ হাজার করে আনেন। পরে পুলিশ সুপার নিজের পকেটের টাকা দিয়ে হাসপাতালের পুরো বিল পরিশোধ করান।

পরে  জেলা পুলিশের এম্বুলেন্স এর মাধ্যমে ঐ অসহায় মা কে তার বাড়িতে পৌছে দেন পুলিশ সুপারের পাঠানো সেই চৌকস পুলিশ টিম।

কিন্তুবিল পরিশোধ করার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানালো রোগী দূর্বল আছে আরো একদিন থেকে গেলে ভাল হয়।

একথা জানতে পেরে পুলিশ সুপার তাকে(রোগীকে)   ঝুঁকি নিতে নিষেধ করেন। পুলিশ সুপার এসময় ক্লিনিক ম্যানেজার কে মোবাইলে বলে দেন আর একদিন থাকুক, পরে যখন রিলিজ দিবে আমরা(পুলিশ সুপার) সহযোগিতা করব।

রবিবার সকালে পুলিশ সুপারের নির্দেশনা মোতাবেক  ডিবির ওসি মহিদুল ইসলাম ক্লিনিক ঐ রোগীকে খোজ নিতে বলেন এবং ডিবির ওসির কাছে কিছু টাকা দেন নবজাতক  বাচ্চার জন্য জামা কাপড়, কিছু ফলমূল কিনে বাসায় দিয়ে আসার জন্য।পরে ডিবির ওসি মহিদুল ইসলাম জেলা পুলিশের এ্যাম্বুলেন্স যোগে মা ও তার সন্তান কে বাড়িতে পৌছে দেন।

সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম (বার) তাঁর ব্যক্তিগত ও সরকারি ফেইজবুক আইডি তে লিখেছেন, এম্বুলেন্স, পোশাক সামগ্রী, ফলমুল নিয়ে জেলা গোয়েন্দা শাখার হেফাজতে অসহায় মাকে তার বাড়িতে নিরাপদে পৌঁছে দিতে পারা ঈদের আগে জেলা পুলিশের জন্য একটা পরিতৃপ্তি।

পুলিশ সুপার তাঁর ফেইজবুকের মাধ্যমে আরো জানান টিম সাতক্ষীরার গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ সহ তার টিমের সবাইকে ধন্যবাদ। পাশাপাশি যারা জেলা পুলিশ সুপারের সাথে যোগাযোগ করে এমন মহৎ কাজে পাশে থাকার সুযোগ দিয়েছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।

করোনা দূর্যোগ আর সুপার সাইক্লোন আমফান এর সময় একজন অসহায় মায়ের সেবায় নিয়োজিত থাকতে পেরে জেলা পুলিশ সাতক্ষীরা আনন্দিত।

পুলিশ সুপার তাঁর ফেইজবুকের মাধ্যমে জানান, পবিত্র ঈদ আমাদের এমন ত্যাগের শিক্ষাই দেয়। সন্ত্রাস মুক্ত মানবিক সাতক্ষীরা গড়া ই আমাদের প্রত্যাশা।
সবাইকে ঈদ উল ফিতর এর শুভেচ্ছা, ঈদ মোবারক।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন