কোনো রকমের ঘুষ ও তদবির ছাড়াই সরকারি চাকরি। তাও আবার পুলিশে! হ্যাঁ অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি ; মাত্র ১০৩ টাকায় বরগুনা জেলায় ৪১ জন বেকার যুবক-যুবতী পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি লাভ করেছেন।জেলা বাসীকে কথা দিয়ে কথা রেখেছেন বরগুনার পুলিশ সুপার জনাব মোঃ মারুফ হোসেন পিপিএম।
গত ২৬/০৬/২০১৯ তারিখ বিকালে বরগুনা জেলা পুলিশ লাইন্সে এসব যুবকদের চাকরি চুড়ান্ত করার ঘোষণা দেন জেলা পুলিশ সুপার জনাব মোঃ মারুফ হোসেন পিপিএম।এর আগে গত ২২ জুন থেকে পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি প্রত্যাশী প্রায় ২ হাজার জন যুবক-যুবতী সরাসরি আবেদন করেন।
পরে রিটেন পরীক্ষায় ৭১ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হন ।পরে উত্তীর্ণ ৭১ জনের মধ্যে লিখিত পরীক্ষায় ও মৌখিক পরীক্ষায় চুড়ান্ত ভাবে উত্তীর্ণ হন ৪১ জন।। এর মধ্যে পুরুষ সাধারন কোটায় ২৫ জন,নারী সাধারন কোটাায় ১১ জন, আনসার ভিডিপির ১ জন ও মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ১ জন। বর্তমান পরিস্থিতিতে খুব সহজে মেধা এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে সরকারি চাকরি লাভ করে বেশ আনন্দিত উত্তীর্ণ প্রার্থীরা।চাকুরী পেতে খরচ হয়েছে মাত্র ১০০ টাকা।
বরগুনা জেলা পুলিশ সুপার জনাব মারুফ হোসেন প্রতিবেদক কে জানান,এবারের নিয়োগ পক্রিয়া ছিলো একটু ব্যতিক্রমধর্মী। বরগুনা জেলায় এটি ইতিহাস হয়ে থাকবে। কোন রকম তদবীর, আর্থিক লেনদেন বা ঘুষ নিয়ে এবার কারো চাকুরী হয়নি।সবাই মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকুরী পেয়েছেন।তিনি বলেন,আগের দিন শেষ।এখন দেশ বদলে যাচ্ছে পাশাপাশি পুলিশ বিভাগেও ব্যাপক পরিবর্ত্তন চলে এসেছেন।তিনি বলেন,কোন করম দূর্ণীতি ছাড়াই সততা এবং ন্যায়নিষ্ঠার সঙ্গে যুবকদের বাছাই করে চাকরি প্রদানে সহযোগিতা করতে পেরে তিনিও বেশ খুশি।তিনি বলেন ৪১ জন কে চুড়ান্ত ভাবে নির্বাচিত করে নিয়োগবোর্ড তাদের চাকুরী দিয়েছেন।এদের মধ্যে কেউ ভ্যাণ চালকের ছেলে,কেউ দিন মজুরের ছেলে আবার বা কেই নাইটগার্ডের ছেলে।
চুড়ান্ত ভাবে উত্তীর্ণ দের তিনি গতকাল ১ টি করে রজনী গান্ধার স্টিক দিয়ে পুলিশ পেশায় অভিনন্দন জানান। তিনি এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, বরগুনায় পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগের আগ থেকে বিশেষ সর্তকতা অবলম্বন করা হয়েছিল।প্রতারকের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য পরীক্ষার ১৫ দিন আগের থেকে জেলাব্যাপি মাইকে সতর্কতা মুলক প্রচার করা হয়।যার ফলে এত স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সহিত ২২৩ জন কে কনস্টেবল পদে চাকুরী দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, মন্ত্রী, এমপি এমনকি প্রভাবশালী কোনো রাজনৈতিক নেতাও আমার কাছে(পুলিশ সুপারের কাছে চাকরির জন্য সুপারিশ করেননি। এই জন্য পুলিশ সুপার সবার কাছে কৃতজ্ঞতা জানান।সাথে সাথে বাংলাদেশ ইন্সপেক্টর জেনারেল ও বরিশাল রেজ্ঞের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল ডিআইজি মোঃশফিকুল ইসলাম বিপিএম (বার) পিপিএম এঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
বরগুনা জেলা পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চে থেকে জানা যায়, পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ বোর্ডে জেলা পুলিশ সুপার ছাড়াও অন্য দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিয়োগ বোর্ডে উপস্থিত ছিলেন ।দুই জনের মধ্যে পুলিশ হেড কোয়ার্টার থেকে একজন এসপি পদমর্যাদার অফিসার ছিলেন।আর অন্য জেলা থেকে একজন এডিশনাল এসপি পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তা নিযুক্ত ছিলেন নিয়োগ বোডে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত এসব যুবক-যুবতীরা আগামী এক মাসের মধ্যে প্রশিক্ষণ দিতে দেশের পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে যোগে দেবেন।