ডেঙ্গুমুক্ত নগর গড়তে এডিসের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত একযোগে বিশেষ ক্রাশ প্রোগ্রাম পরিচালনার ঘোষণা দিয়েছেন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) সার্কিট হাউসের সম্মেলন কক্ষে এডিস মশা নিধন ও ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধ বিষয়ে মহানগর ও বিভাগীয় পর্যায়ে পরিকল্পনা গ্রহণ সম্পর্কিত সমন্বয় সভায় তিনি এ ঘোষণা দেন। চট্টগ্রাম বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসন এ সভার আয়োজন করে।
মেয়র বলেন, ডেঙ্গু নিয়ে ভয়ের কারণে মানুষ সচেতন হচ্ছে। আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। আমরা পারবো। কলকাতা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ১৯ বছর সময় নিয়েছে। ডেঙ্গুমুক্ত নগর করতে হলে সাধারণ মানুষের সহযোগিতা দরকার। সবাই দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিলে এডিস মশা জন্ম নিতে পারবে না।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, কর্মস্থল, বাসাবাড়িসহ সব জায়গায় একযোগে মশা নিধন অভিযান চালালে বেশি সুফল মিলবে। চসিকের ৩ হাজারের বেশি পরিচ্ছন্নকর্মী রাতে বর্জ্য অপসারণ করলেও বৃহস্পতিবার সবাই দিনে কাজ করবেন। এর সঙ্গে যদি সচেতন নগরবাসী, স্বচ্ছাসেবী সংগঠন, সাধারণ মানুষ সহযোগিতার হাত বাড়ান তবে এডিসের বিরুদ্ধে এ যুদ্ধে আমরা জয়ী হবো।
বিভাগীয় কমিশনার আবদুল মান্নান বলেন, মানুষের চলাফেরা রোধ না করে কাজ করতে হবে। আমাদের কাছ থেকে অনেক দেশ দুর্যোগ মোকাবেলার পদ্ধতি শিখে। তারা শিখতে চায়। দ্রুততার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে পারবো আশা করি। আমরা দিনরাত আন্তরিকতার সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করছি। একই সময়ে একযোগে কাজ করতে হবে।
বছরটা কাজে লাগালে মেয়র আগামী বছর চট্টগ্রামকে মশামুক্ত নগরী ঘোষণা করতে পারবেন বলে আশাবাদ জানান তিনি।
চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, এডিস গৃহপালিত মশা। পাওয়ারফুল ওষুধে এডিস মরবে কিনা জানি না কিন্তু পরিবেশের ক্ষতি হবে না। সারা বছর সমন্বিতভাবে মশা নিধনে কাজ করলে সুফল মিলবে।
তিনি বলেন, ডেঙ্গু নিয়ে যারা ব্যবসা করছে, ৫০০ টাকার ফি হাজার টাকা নিচ্ছে, ১২৫ টাকার ক্রিম ৫০০ টাকা নিলে ভ্রাম্যমাণ আদালত চালিয়ে জরিমানা করতে হবে। চসিককে বাসা বাড়িতে স্বচ্ছ পানি জমলে, অপরিষ্কার করলে জরিমানা করতে হবে।
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার মোহসেন উদ্দিন আহমেদ বলেন, ডেঙ্গু একটি হুমকি। মিডিয়া জরুরি ভূমিকা রাখতে হবে সচেতনতা সৃষ্টিতে। জ্বর আসলেই ডেঙ্গু পরীক্ষা জরুরি নয়। চিকিৎসক সিদ্ধান্ত দেবেন ডেঙ্গু পরীক্ষা করা দরকার কিনা।
২৪ ঘণ্টার বেশি পানি যাতে স্থির না থাকে তবে এডিস হওয়ার সুযোগ নেই। মশা মরার উপকরণগুলো যাতে অসাধু ব্যবসায়ীরা
চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, আত্মতুষ্ট হওয়ার সুযোগ নেই। আমাদের শপথ নিতে হবে, নিজের আঙিনা নিজে পরিষ্কার করবো।
সভায় মতামত দেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার শংকর রঞ্জন সাহা, মো. নুরুল আলম নিজামী, স্থানীয় সরকার পরিচালক দীপক চক্রবর্তী, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন, সিএমপির ডিসি হেড কোয়াটার শ্যামল কুমার নাথ, পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা, চউক সচিব তাহেরা ফেরদৌস বেগম, চসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরীসহ চট্টগ্রামের সরকারি, বেসরকারি সব সংস্থার প্রতিনিধিরা।