হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি ও স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ৪৪তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস আজ খুলনায় যথাযোগ্য মর্যাদা এবং ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালিত হয়। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকল সরকারি ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়।

এদিন সকালে শোক র‌্যালি নগরীর নিউ মার্কেট থেকে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ বেতার খুলনার প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে বঙ্গবন্ধু ও ১৫ আগস্টে শাহাদত বরণকারী তাঁর পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, খুলনার বিভাগীয় কমিশনার, ডিআইজি, পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসক, মুক্তিযোদ্ধাসহ সকল বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারি এবং সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা র‌্যালিতে অংশগ্রহণ করেন।

শোক দিবস উপলক্ষে খুলনা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, বঙ্গবন্ধু মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করে গেছেন। বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ মানেই বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা ও আদর্শ থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে দেশের উন্নয়নে কাজ করতে হবে।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার লোকমান হোসেন মিয়া, কেএমপির পুলিশ কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবির,খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মোঃ হাবিবুর রহমান,কেএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সরদার রাকিবুল ইসলাম, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মোঃ হাবিুবল হক খান, পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ, মুক্তিযোদ্ধা আলমগীর কবীর এবং জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আছাদুজ্জামান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন খুলনা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ সাহেব আলী এবং সাবেক সভাপতি মকবুল হোসেন মিন্টু। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন। স্বাগত জানান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এলএ) মোঃ ইকবাল হোসেন। পরে রচনা, চিত্রাংকন ও কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় বিজীয়দের মধ্যে পুরস্কার এবং ঋণের চেক বিতরণ করা হয়।

এদিন সকালে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আলোচনা সভা, কবিতা পাঠ, রচনা ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, হামদ ও নাত এবং মিলাদ মাহফিল ও মোনাজাতের আয়োজন করা হয়। প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তর খুলনা বিভাগীয় জাদুঘর অটিস্টিক শিশুদের জন্য দিনব্যাপী প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন এবং মাসব্যাপী শোকাবহ আগস্ট শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শন করে। খুলনা সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শিশুদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। খুলনা আঞ্চলিক তথ্য অফিস (পিআইডি) শোক র‌্যালিতে অংশগ্রহণ করে এবং পরে অফিসে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে। আঞ্চলিক লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উদ্যোগে শোক র‌্যালি, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তুবক অর্পণ এবং নিজস্ব মিলনায়তনে আলোচনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

শোক দিবস উপলক্ষে স্থানীয় পত্রিকাগুলো নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বিশেষ নিবন্ধ ও ক্রোড়পত্র প্রকাশ এবং বাংলাদেশ বেতার খুলনা বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করে। উমেশচন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরি মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর কর্মজীবনভিত্তিক পুস্তক প্রদর্শন করে। বাদ জোহর কালেক্টরেট জামে মসজিদ, পুলিশ লাইন জামে মসজিদ ও টাউন জামে মসজিদসহ নগরীর বিভিন্ন মসজিদে মিলাদ মাহফিল ও দোয়ার আয়োজন করা হয়। এছাড়া মন্দির, গীর্জা ও অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন দিবসটি উপলক্ষে পৃথক পৃথক কর্মসূচি পালন করে।

খুলনার উপজেলাগুলোতেও অনুরূপ কর্মসুচি পালিত হয়।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন