করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) থেকে মানুষের জীবন বাঁচাতে এবং অর্থনীতি সচল রাখতে সরকারের নেওয়া উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মানুষকে সুরক্ষিত রাখতে প্রাণপণে চেষ্টা করে যাচ্ছি।

বৃহস্পতিবার ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে অনুদান গ্রহণকালে একথা বলেন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে শেখ হাসিনার পক্ষে অনুদান গ্রহণ করেন তার মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত ছিলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছি এই করোনাভাইরাস থেকে দেশের মানুষকে রক্ষা করতে। চেষ্টা করে যাচ্ছি দেশের মানুষকে সুরক্ষিত করতে। তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষিত করা, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল করা, তাদের সামাজিক নিরাপত্তা দেওয়া, সবদিক থেকে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

কিছু কিছু সেক্টর উন্মুক্ত করা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেহেতু অর্থনীতি একেবারে স্থবির অবস্থায় রয়েছে আমরা কিছু কিছু ক্ষেত্রে এখন উন্মুক্ত করছি। কারণ মানুষকে আমাদের তো বাঁচাতে হবে। এই কর্মকাণ্ডগুলো না করলে, কতটা আমরা সহযোগিতা করবো। তারপরও আমি বলবো এই ক’মাস এদেশে প্রায় প্রতি স্তরের মানুষকে ব্যাপকভাবে সহযোগিতা দিচ্ছি।

`সরকারের পক্ষ থেকে আমরা করেছি, আমাদের দলের পক্ষ থেকে করেছি। অনেক বিত্তশালী তারাও মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে এই আন্তরিকতাটুকু আছে বলে এখনো তারা খেতে পারছে বা চলতে পারছে। এই সহানুভুতিটুকু মানুষ দেখাতে পারছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘চেষ্টা করে যাচ্ছি প্রত্যেকটা শ্রেণি-পেশার মানুষ সবার কাছে যেন আমরা কিছু না কিছু সহযোগিতা পৌঁছাতে পারি। যেন তারা কষ্ট না পায়। সেটাই আমাদের লক্ষ্য। আর সে লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’

চিকিৎসাসেবা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘চিকিৎসাসেবা আমরা ব্যাপকভাবে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি এবং আমরা দিয়ে যাচ্ছি। বিনা পয়সায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। করোনাভাইরাস এটা টেস্ট করা বা চিকিৎসা করা বেশ ব্যয়বহুল। তারপরও আমরা সেটা করে যাচ্ছি। এভাবে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।

অর্থনীতি সচল রাখতে নেওয়া পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড যাতে চলে, সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমাদের শিল্প থেকে শুরু করে সর্বস্তরের সবাই যেন তাদের কার্যকক্রম চালাতে পারে তার জন্য বিশেষ প্রণোদনাও আমরা দিচ্ছি। জিডিপি’র প্রায় ৩ শতাংশ ৭ প্রণোদনা দিচ্ছি।

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘গত ৩/৪ মাস ধরে আমাদের অর্থনীতি একেবারে স্থবির। তারপরেও আমরা অন্তত মানুষের কথা চিন্তা করে, মানুষের কল্যাণের কথা চিন্তা করে কাজ করে যাচ্ছি। এটা মনে রাখতে হবে আওয়ামী লীগ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া সংগঠন। সব সময় জনগণের কল্যাণেই আমরা কাজ করি।’

ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা করতে পেরেছি বলেই আমাদের অনেক কাজ সহজ হয়েছে। যেমন মানুষকে সহযোগিতা দেওয়া, তাদের কাছে নগদ টাকা পৌছানো, তাদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া বা ঘরে বসে চিকিৎসা পরামর্শ যাতে পেতে পারেন সেই ব্যবস্থা করা, ব্যবসা বাণিজ্য চালানো, ক্রয়বিক্রয়,আত্মীয় স্বজন বা আপনজনের সঙ্গে কথা বলা, দেখা সাক্ষাৎ, চিকিৎসা সেবা, অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্নভাবে আমরা করে যাচ্ছি।’

করোনাভাইরাসে যারা মারা গেছেন তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তস্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে অনুদান প্রদান করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়; বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়; সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সেতু বিভাগ; দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়; প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়; বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশন অথরিটি; কর্ণফুলি ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড; বাংলাদেশ লিজিং এন্ড ফাইন্যান্স কোম্পানিজ এসোসিয়েশন; আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেড; আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেড; লঙ্কা-বাংলা ফাইন্যান্স লিমিটেড; উত্তরা ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড; যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়; জিএমএস কম্পোজিট নিটিং ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড ও জিএমএস টেক্সটাইল; বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব কনস্ট্রাকশন ইন্ডাস্ট্রিজ; আনসার-ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক; কর্মসংস্থান ব্যাংক; বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, আলী বাবা অ্যান্ড জ্যাক মা ফাউন্ডেশন; ফ্যাশন গ্লোব গ্রুপ; আনোয়ার গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ; বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব সফটওয়ার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিস (বেসিস); সৎসঙ্গ, হেমায়েতপুর, পাবনা; পিপিএস প্লাস্টিক পাইপ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।

এছাড়াও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু, ডা. রাফা ইসলাম; ডা. সোনিয়া জেমিন প্রীত; ডা. সাদিয়া আহমেদ প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে অনুদান প্রদান করেন।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন